ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইউক্রেনের জাপোরিজিয়া অঞ্চলে ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে অন্তত দু’জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা।

সোমবার (৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলায় অঞ্চলটির বিভিন্ন বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিভ্রাট তৈরি হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্রই গুলি করে ভূপাতিত করেছে এবং জ্বালানি সরবরাহ পুনরায় সচল করার কাজ চলছে।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, রাশিয়ায় দুইটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে বিস্ফোরণের ঘটনার কয়েকঘন্টা পর ইউক্রেনজুড়ে এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়। যদিও দু’য়ের মধ্যে যোগসূত্র থাকার কোনও লক্ষণ নেই।

রাশিয়ার ব্যাপক হামলার ফলে ইউক্রেনের ওডেসা অঞ্চলের জ্বালানি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আঞ্চলিক গভর্নর মাকসিম মারশেঙ্কো।

বর্তমানে অঞ্চলটির বেশিরভাগ এলাকাতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের বিদ্যুৎ গ্রিডে একের পর এক নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করার পর পশ্চিমা এবং ইউক্রেনীয় নেতারা এই যুদ্ধ কৌশলকে যুদ্ধাপরাধের তকমা দিয়েছেন। কারণ, রুশ বাহিনীর এ হামলায় সাধারণ মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।

তবে যুদ্ধের ক্ষেত্রে জ্বালানি অবকাঠামোকে নিশানা করা দীর্ঘদিন থেকেই যুদ্ধের কৌশল। ১৯৯১ সালের প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ইরাকের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে নিশানা করেছিল এবং ন্যাটো বাহিনী ১৯৯৯ সালে সার্বিয়ার জ্বালানি স্থাপনায় আঘাত হেনেছিল।

তাহলে কোনও দেশের বিদ্যুৎ গ্রিডকে নিশানা করা বৈধ কিনা? সে প্রশ্নে সম্ভবত হ্যাঁ বলা যায়।

জ্বালানি অবকাঠামোর কোনও অংশ সামরিক খাতে ব্যবহার্য হলে, যেমন কোনও সামরিক স্থাপনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলে, সেই বিদ্যুৎ গ্রিডকে হামলার নিশানা করাটা বৈধ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে, তা সেই বিদ্যুৎ গ্রিডের ব্যবহার বেসামরিক ক্ষেত্রে করা হয়ে থাকলেও।

তবে তারপরও সেই বিদ্যুৎগ্রিডে কখন এবং কীভাবে হামলা চালানো যেতে পারে সে ব্যাপারে আন্তর্জাতিক আইনে কঠোর সীমা বেঁধে দেওয়া আছে।

সামরিক অগ্রগতি অবশ্যই বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতির অনুপাত অনুযায়ী হতে হবে।

কিংস কলেজের ওয়ার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক বিবিসি’কে বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের কম ক্ষয়ক্ষতি হয় এমনভাবে কোনও নিশানা স্থির করতে রাষ্ট্রের একটি আইনি বাধ্যবাধকতা আছে। যাতে কম মানুষের মৃত্যু এবং আহতের সংখ্যাও কম থাকার পরও সামরিক অগ্রগতি হাসিল করা যায়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)