আয়াত হত্যা: মুক্তিপণের টাকায় ‘বড়লোক’ হতে চেয়েছিলেন আবির
নিউজ ডেস্ক:
শিশু আয়াতকে অপহরণ করে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায়ের মাধ্যমে রাতারাতি ‘বড়লোক’ বনে যেতে চেয়েছিলেন হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত আবির আলী। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এ কথা জানিয়েছেন গ্রেফতার আবির।
শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে আয়াত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মনোজ কুমার দে।
তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় দফা রিমান্ডের মধ্যেই আসামি আবির স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে আয়াতকে অপহরণ করে দাদার কাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্য ছিল তার। সেই টাকায় তিনটি অটোরিকশা কিনে ‘বড়লোক’ হতে চেয়েছিলেন তিনি।’
তিনি আরো বলেন, আদালত তার ১৭ পৃষ্ঠার জবানবন্দি রেকর্ড করেছে। দেড় থেকে দুই মাস আগেই তিনি আয়াতকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করেছিলেন।
জানা যায়, ১৫ নভেম্বর নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা নয়ারহাট বিদ্যুৎ অফিস এলাকার বাসা থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদে আরবি পড়তে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয় পাঁচ বছরের আলিনা ইসলাম আয়াত। পরদিন এ ঘটনায় ইপিজেড থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তার বাবা সোহেল রানা।
নিখোঁজের ৯ দিন পর সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িত সন্দেহে আয়াতের পরিবারের ভাড়াটিয়া আবির আলীকে আটকের কথা জানায় পিবিআই। পিবিআইয়ের দাবি, আটকের পর আয়াতকে খুন ও লাশ গুম করার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। মূলত ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে আয়াতকে অপহরণ চেষ্টার সময় শ্বাসরোধে হত্যা করেন তিনি।
এরপর শনিবার প্রথমবার আবিরকে দুদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ডে থাকাকালে তাকে নিয়ে আয়াতের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারে সাগরপাড়ে নিষ্ফল অভিযান পরিচালনা করে পিবিআই। এরপর সোমবার আবিরকে দ্বিতীয় দফায় ৭ দিনের রিমান্ডে পায় পুলিশ। দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডের প্রথম দিন মঙ্গলবার আবিরের মা-বাবার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। একই দিন প্রবেশন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারে আবিরের ১৫ বছর বয়সী বোনকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন আদালত।
দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে আকমল আলী সড়ক এলাকার সাগরপাড় স্লুইস গেটের পাশ থেকে আয়াতের খণ্ডিত দুই পা উদ্ধার করে পিবিআই। পরদিন একই এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় আয়াতের খণ্ডিত মাথা।