আশাশুনির বিভিন্ন সড়কে মরা শিরিস গাছের ডালের আঠা সংগ্রহে ব্যাপক সাড়া
জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি :
আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন সড়কে মরে যাওয়া শিরিস গাছের ডাল থেকে বিশেষ আঠা সংগ্রহ ব্যাপক ভাবে চলছে। আঠা সংগ্রহ করে বিক্রী করে তারা লাভজনক মজুরি পাওয়ায় দিনে দিনে আঠা সংগ্রহের কাজ বেড়ে যাচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন সড়কে শিরিস বা শিশু গাছ লাগানো হয় বেশ আগে থেকে। এসব গাছ বড় আকার ধারণ করে সড়কে ছায়া দানের পাশাপাশি জেলা পরিষদের সাথে চুক্তিতে অনেকে বড় অংকের লাভ করে আসছে।
আবার ব্যক্তি উদ্যোগেও রাস্তার পাশে গাছ লাগানো হয়ে থাকে। সবমিলে এলাকার অধিকাংশ সড়কে ছোট থেকে বড় বড় গাছে ভরে আছে। কিন্তু সম্প্রতি কয়েক বছর আগে থেকে রোডের গাছসহ ব্যক্তিগত ক্ষেতে লাগানো এসব গাছের ডাল মরা শুরু হয়েছিল। বর্তমানে সড়কগুলো মরা গাছের স্তুপে পরিণত হয়েছে।
এসব গাছগুলো যেমনি খুবই ঝুকিপূর্ণ হয়ে খাড়িয়ে আছে। তেমনি মাঝে মধ্যে মরা ডাল ভেঙ্গে পড়ে ক্ষয়ক্ষতির ঘটনাও ঘটে থাকে। এসব গাছগুলো কেটে ঝুকি কমানো ও পরিস্কার করে অন্য গাছ লাগানোর দাবী দীর্ঘদিনের হলেও তেমন বাস্তবায়ন নজরে আসছেনা। তবে মানুষের মনে একটু খুশির কারণ হয়ে দেখা দিয়ে মরা গাছের ডাল কেটে নিয়ে আঠা উদ্ধারের কাজ।
বিগত কয়েক সপ্তাহ এসব গাছের ডালের অংশ বিশেষ কেটে লেগে থাকা আঠা জাতীয় প্রলেপ সংগ্রহের মাঠে নেমে বহু মানুষ। উপজেলার প্রায় প্রত্যেক গ্রামে ও রাস্তার পাশে ধুমধামের সাথে এই প্রলেপ সংগ্রহ করা হচ্ছে। বলতে গেলে নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়ে অনেক নারী-পুরুষ ও শিশু-বৃন্ধ গাছের ডাল ক্রয় করে ডালে লেগে থাকা আঠা সংগ্রহ করছে। এরপর আঠা বিক্রী করে অনেক টাকা রোজগার করাছে তারা।
এই আঠা কোথায় যাচ্ছে, সেটা কেউ সঠিক করে বলতে পারছেনা। আঠা নিয়ে কি করা হচ্ছে তাও ঠিকঠাক কেউ বলতে পারছে না। তবে প্রতিদিন সন্ধ্যায় উপজেলার কুল্যার মোড়ে আঠা বিক্রি হচ্ছে। বাইরে থেকে ক্রেতারা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বিক্রেতা বাবলু, ছোহরাব, ইসমাইল জানান, প্রতিদিন ভোর হতে স্থানীয়রা গ্রামে গ্রামে গাছ থেকে ডাল কেটে ভ্যান ও ইজিবাইক বোঝাই করে বাড়ি নিয়ে যায়।
বাড়িতে আঠা ছাড়িয়ে পরে বিক্রি করে। এতে তাদের ভাল আয় হচ্ছে। তারা জানতে পেরেছে, শিরিসের আঠা ঢাকায় নিয়ে ফর্নিচারের পালিস, সিঁদুর ও রং সহ বিভিন্ন কেমিক্যাল জাতিয় দ্রব্য তৈরি করা হয়।
ব্যবসায়ী সোহরাব জানান, আমরা গ্রামে গিয়ে গাছের ডাল ক্রয় করে ভেঙে নিয়ে আসছি। সারাদিন ডাল কেটে বাড়িতে নিয়ে আঠা বের করে ক্রেতার কাছে বিক্রি করে দেই। ডাল থেকে আঠার মত প্রলেপ ছাড়াতে প্রতি কেজি ৩০ টাকা দিতে হয়। আঠা সংগ্রহ করে বস্তায় ভরে কুল্যার মোড় ও বাঁকা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। আঠা প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রয় করছি। প্রতিদিন ৩ জনের প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা লাভ হয় বলে তিনি জানান।