খলিশাখালিতে থেমেছে দস্যুতা, জনমনে ফিরছে স্বস্তি
স্টাফ রিপোর্টার:
গেল মঙ্গলবার পুনরুদ্ধারের মধ্যদিয়ে ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী ও সংঘবদ্ধ ডাকাত বাহিনী গুলোর কবল থেকে মুক্ত হয়েছে দেবহাটার খলিশাখালি জনপদের ১৩২০ বিঘা জমি ও মৎস্য ঘের। এরপর থেকে ওই জনপদে নেই সন্ত্রাসীদের অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি, ডাকাত দলের উৎপাত ও ভূমিদস্যুদের রাত-দিনের দস্যুতা। যদিও সেখানকার মানুষের আতংক এখনও কাটেনি, তবুও দীর্ঘদিনের অত্যাচার থেকে মুক্তি মেলায় ক্রমশ স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে খলিশাখালি, নোড়ারচক, চারকুনি, জোয়ার গুচ্ছগ্রাম সহ তৎসংলগ্ন জনপদের মানুষের মাঝে। তিন’শ জমির মালিক ও তাদের হাজার খানেক জনবলের প্রতিরোধের মুখে মঙ্গলবার প্রায় দেড় বছরের জবরদখল ও আধিপত্য ছেড়ে পালিয়ে গেলেও ওই জনপদটিকে পুন:দখলের নীলনকশা আটছে দখলচ্যুত ডাকাত দল, সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুরা।
নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানিয়েছে, খলিশাখালি পুনরুদ্ধারের পর ওই জনপদকে পুন:দখল করতে অভ্যন্তরীন কোন্দল মিমাংসা করে নিয়েছে ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী বাহিনী গুলো। বর্তমানে আলাদা আলাদা এসব বাহিনীর নের্তৃত্বে থাকা ইসমাইল মেম্বার, আনারুল, রবিউল, আকরাম ডাকাত, কালু ডাকাত, গফুর মাস্তান, আবুল হোসেন ফের খলিশাখালিতে হামলার উদ্দেশ্যে তাদের দলবল একত্রিত ও অস্ত্র সংগ্রহ করছে। তাদের বিরুদ্ধে দস্যুতা, অস্ত্র, ডাকাতি সহ বিভিন্ন মামলা থাকায় বর্তমানে এলাকার বাইরে আত্মগোপনে থেকেই ফের খলিশাখালি জবরদখলের পরিকল্পনা করার পাশাপাশি সেখানকার বিস্তৃর্ণ জমির রেকর্ডিয় মালিকদের প্রাননাশের হুমকিও দিচ্ছে এসব সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধানরা। সম্প্রতি প্রশাসনকে বোকা বানাতে ‘ভূমিহীন’ ছদ্মবেশে ঢাকায় একটি লোক দেখানো মানববন্ধনও করেছে তারা।
খলিশাখালির রেকর্ডিয় জমির মালিকদের মধ্যে কাজী গোলাম ওয়ারেশ, নজরুল ইসলাম, আনছার আলী, আব্দুল আজিজ, সুরুজ ওয়ারেশ সহ বেশ কয়েকজন জানিয়েছেন, গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ভোররাতে নোড়ারচকের সন্ত্রাসী ইসমাইল মেম্বার, আনারুল, রবিউল, আকরাম ডাকাত, কালু ডাকাত, গফুর মাস্তানের নের্তৃত্বে মুহুর্মুহু গুলি ও বোমাবর্ষন করে তারাসহ প্রায় তিন’শ মালিকের রেকর্ডিয় ১৩২০ বিঘা জমি জবরদখল ও মৎস্য ঘেরগুলো লুট করে নেয় সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু ও ডাকাত দলের সদস্যরা। এরপর থেকে ওই খলিশাখালি জনপদকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দাগী অপরাধীদের আঁখড়া হিসেবে গড়ে তুলেছিল সন্ত্রাসীরা। সম্প্রতি প্রশাসনের একের পর এক অভিযানে দফায় দফায় এসব বাহিনীর সন্ত্রাসী ও ডাকাত দলের সদস্যরা অস্ত্রসহ গ্রেফতার হলে সেই সুযোগে মঙ্গলবার সহস্রাধিক জনবল নিয়ে তারা তাদের জমি পুনরুদ্ধার করেন। এরপর থেকে এসব সন্ত্রাসীরা বিভিন্নভাবে তাদের হত্যাসহ পুনরায় পুনরুদ্ধারকৃত সম্পত্তি জবরদখলের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তারা আরও বলেন, পুনরুদ্ধারের পর পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু ও ডাকাতরা নিজেদের ‘ভূমিহীন’ আখ্যা দিয়ে প্রশাসনকে বিভ্রান্ত ও বোকা বানানোর অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত এবং দেবহাটাকে সন্ত্রাসমুক্ত রাখতে অবিলম্বে এসব সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনার দাবিও জানিয়েছেন তারা।
এদিকে শান্তির জনপদ খলিশাখালি যাতে ফের ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী ও ডাকাত দলের অভয়ারণ্যে পরিনত না হয় সেজন্য প্রশসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী ও দেবহাটা থানার ওসি শেখ ওবায়দুল্যাহ।