“নলতার কাশিবাটীতে ডা: ছবুরের বাড়ীতে দুর্ধর্ষ চুরি, টাকা সহ স্বর্ণালংকার লুট”
নলতা, কালিগঞ্জ থেকে :
সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলাধীন ৬নং নলতা ইউনিয়নের কাশিবাটি গ্রামের বাসিন্দা, নলতা হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের প্রধান ও গ্রাম্য ডা: হিসেবে পরিচিত ডা: আব্দুস ছবুর ও সবুর পুত্র ডা: তানভীর আহমেদ শাওনের বাড়ীতে দুর্ধর্ষ চুরি সংঘটিত হয়েছে।
১৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১২ টা থেকে ১ টার দিকে উক্ত ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গভীর রাতের এমন ঘটনায় অজ্ঞাত সংঘবদ্ধ দল বাড়ীতে ভাংচুর করে নগদে প্রায় ৫০ হাজার টাকা ও প্রায় ১২ থেকে ১৩ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করেছে। যার আনু: মূল্য প্রায় ৯ লক্ষ টাকা বলে জানান আব্দুস ছবুর ও তার পরিবার।
প্রাপ্ত তথ্য ও সরেজমিনে যেয়ে ভুক্তভোগী ডা: আব্দুস ছবুরের সাথে আলাপকালে আরো জানা যায়,রাত আনুমানিক সাড়ে ১০ টার পর ডা: তানভীর আহমেদ শাওন, শাওনের পিতা ডা: আব্দুস ছবুর,তার স্ত্রী তহমিনা পারভীন পর্যায়ক্রমে বাড়ীতে ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুমানোর আগে ঢাকায় লেখাপড়া করতে থাকা ডা: আব্দুস ছবুরের ছোট পুত্র শিহাব সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। রাতে নলতায় পৌঁছালে শিহাবের বড় ভাই ডা: তানভীর তাকে নলতা থেকে বাইকযোগে বাড়ীতে নিয়ে আসবে এমন কথাবার্তার পর শুয়ে পড়ে ডা: তানভীর ও তার পিতা-মাতা।
কিন্তু রাত আনু: ১২ থেকে ১ টার মধ্যে অজ্ঞাতনামা সংঘবদ্ধ চোরেরা জানালার ফাঁকা দিয়ে চেতনা নাশক পদার্থ ঘরের সব জায়গায় স্প্রে করে সকলকে অজ্ঞান করে ফেলে । এরপর বাড়ীর পিছনের দরজা ভেঙে তারা প্রথমে ঘরে প্রবেশ করে এবং ফাঁকা জায়গায় থাকা চাবী নিয়ে সামনের গেট সহ বাড়ীর প্রত্যেকটা ঘরের ভিতরে ঢুকে ফার্নিচার ভেঙে তারা উক্ত জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়।
বিবরণে আরো জানা যায়, রাত আনুমানিক ১ টার দিকে সাতক্ষীরায় পৌঁছাইয়ে ডা: তানভীরের ছোট ভাই শিহাব ভাই ডা: তানভীর আহমেদ শাওনের নিকট মোবাইল করলে কিছুটা জড়ানো অবস্থায় মোবাইলে কথা বলে তানভীর। তাতে শিহাবের মনে খটকা লাগে।
এরপর রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে শিহাব নলতায় পৌঁছানোর পর ভাই ডা: তানভীর ও তার পিতা আব্দুস ছবুরের নিকট অসংখ্যবার মোবাইলে কল করলেও কোনো সংযোগ না পাওয়ায় এক ধরনের অজানা আতঙ্ক নিয়ে দ্রুত হেটে ও দৌঁড়ে বাড়ীর উদ্দেশ্যে পথ চলতে চলতে রাত ৩ টার দিকে বাড়ীতে পৌঁছায় শিহাব।
হাটতে হাটতে বাড়ী পৌঁছায়ে শিহাব দেখে সামনের দরজা সহ সমস্ত রুম খোলা, স্বর্ণালংকার, মোটর সাইকেল, টাকা সহ মালামাল লুটপাট করা এবং পিতা আব্দুস ছবুর, মাতা, বড় ভাই তানভীর সবাই সঙ্গাহীন অবস্থায় পড়ে আছে। তখন এমন কষ্টদায়ক দৃশ্য দেখে পাশের চাচাদের ও আশপাশের অন্যদের ডাকাডাকি করলে তারা দ্রুত ডা: ছবুরের বাড়ীতে ছুটে আসেন। তাৎক্ষণিকভাবে ছবুরের ছোট ছেলে শিহাব সহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা অচেতন অবস্থায় তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।
কিন্তু তারা বেশ অসুস্থ থাকায় বৃহস্পতিবার বিকালে তাদেরকে নলতা হাসপাতালে নিয়ে ডাক্তার দেখাইয়ে বাড়ীতে ফেরা, ঔষধ সেবন সহ শুক্রবার সকালের দিকে স্যালাইন দেয়া শেষ হয়েছে বলে সরেজমিনে যেয়ে দেখা গেছে।
তবে ঐ সময়ে লুট হওয়া ডা: ছবুরের একটি মোটরসাইকেল চোরেরা নিয়ে গেলেও তেল না থাকায় বাড়ীর অদূরে পাইকাড়া নামক স্থানে রাতেই বাইকটি ফেলে রাখা অবস্থায় পেয়েছিল বলে তারা জানান।
এ ঘটনায় ১৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার দিকে কালিগঞ্জ থানার এস.আই সাঈদ ও এস.আই মিলনের নেতৃত্বে পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নলতা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন পাড়, সাবেক সভাপতি ও প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক শামছুর রহমান, জনপ্রতিনিধি সহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ।
এলাকার বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে চলেছে। এজন্য প্রশাসনিক তৎপরতা বৃদ্ধি করা জরুরী বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহলসহ জনসাধারণ।
Please follow and like us: