‘সিডর’ তাণ্ডবের ১৫ বছর
নিউজ ডেস্ক:
আজ ১৫ নভেম্বর। বরগুনাসহ উপকূলবাসীর জন্য একটি দুঃসহ স্মৃতিময় দিন। ২০০৭ সালের এই দিনে ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’ উপকূলীয় অঞ্চলকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিল। কেড়ে নিয়েছে অসংখ্য প্রাণ। সেই স্মৃতি আজও উপকূলবাসীকে মনে করিয়ে দেয়।
১৫ বছর পরও সেদিন মহাবিপদ সংকেতের কথা শুনে এখনো আতঙ্কিত বরগুনা উপকূলের মানুষ। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া, মানুষ যেতে শুরু করল আশ্রয়কেন্দ্রে। বেশিরভাগই রয়ে গেল বাড়িতে। তাদের ধারণা ছিল, কত ঝড়ই আইল গেল, এবারও কিছু হইবো না। কিন্তু সিডর আঘাত হানতে শুরু করেছে উপকূলীয় এলাকায়। মানুষের ঘর যেন এখনই উড়িয়ে নিয়ে যাবে, সঙ্গে যুক্ত হলো পানিপ্রবাহ।
কেউ ভোলেনি সিডরের কথা। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের অধিবাসীদের হৃদয় আজও সেই স্মৃতিতে শিহরিত হয়ে ওঠে। সিডর অনেক সাক্ষী রেখে গেছে উপকূলে। তেমনি একজন ‘সিডর বেবি’ মারিয়া।
স্থানীয়দের স্মৃতিচারণে উঠে এসেছে ধ্বংসলীলার সেই চিত্র। ঘড়ির কাটায় তখন রাত সাড়ে ১০টা। মাত্র ১০ মিনিটের জলোচ্ছ্বাসে পুরো এলাকা লণ্ডভণ্ড। চারিদিকে ধ্বংসলীলা। লাশের পর লাশ পাওয়া যাচ্ছে। কবর দেওয়ার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। এক একটি কবরে ২-৩ জনের লাশ ফেলে মাটি চাপা দেয়া হলো। তবে সিডরের এত বছর পরও নিহতের সঠিক সংখ্যা পাওয়া যায়নি।
জেলা ত্রাণ কার্যালয়ের সূত্র জানায়, সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০০৭ সালের এ ঘূর্ণিঝড়ে সিডরে জেলায় প্রাণ হারান ১ হাজার ৩৪৫ মানুষ। নিখোঁজ হন ১৫৬ জন। ৩০ হাজার ৪৯৯টি গবাদি পশু ও ৬ লাখ ৫৮ হাজার ২৫৯টি হাঁস-মুরগি মারা যায়। ২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬১টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সম্পূর্ণ গৃহহীন হয়ে পড়ে ৭৭ হাজার ৭৫৪টি পরিবার।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, সিডর ও আইলায় বরগুনার ৪৮৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। সরকার ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়, যা দিয়ে ২৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ৪৪৮ টন গমের মাধ্যমে ১০ দশমিক ৬৫৮ কিলোমিটার বাঁধ মেরামত করা হয়েছে।