বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড
স্পোর্টস ডেস্কঃ
বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচাগ্র মেদিনী- এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েই যেন অষ্টম টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা লড়াইয়ে মাঠে নেমেছিল পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। দুই দলের সর্বোচ্চ চেষ্টার লড়াইয়ে শেষ হাসি হেসেছে ইংলিশরা। একইসঙ্গে জিতেছে টি-২০ বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা।
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৩৭ রান সংগ্রহ করেছিল পাকিস্তান। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছায় ইংল্যান্ড, হাতে ছিল আরো ৬ বল।
এর মাধ্যমে যেন ইতিহাসের প্রতিশোধ নিল ইংলিশরা। ৩০ বছর আগে ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। ফাইনালের আগে সবকিছুর সঙ্গে মিল রেখে এগিয়েছিল বাবর আজমের দল। তবে শেষ দানে সব উল্টে দিয়েছেন জস বাটলার-বেন স্টোকসরা।
মেগা ফাইনালে ইংল্যান্ডের হয়ে রান তাড়া করতে নামেন জস বাটলার ও অ্যালেক্স হেলস। প্রথম ওভারের শেষ বলে হেলসকে বোল্ড করেন শাহিন আফ্রিদি। প্রথম ওভারের ধাক্কা সামলে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন বাটলার ও ফিলিপ সল্ট।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আক্রমণে এসেই উইকেট নেন হারিস রউফ। তার বলে ইফতিখার আহমেদের তালুবন্দী হন ১০ রান করা সল্ট। একপ্রান্ত আগলে রাখার পাশাপাশি পাল্টা আক্রমণে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন বাটলার। তাকেও ফেরান হারিস, ইংলিশ অধিনায়ক আউট হন ২৬ রানে।
দলীয় ৪৫ রানে তিন উইকেট হারিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় ইংল্যান্ড। তবে সেখান থেকে পরিস্থিতি দারুণভাবে সামাল দেন বেন স্টোকস ও হ্যারি ব্রুক। এই দুই ব্যাটার ক্রমেই ম্যাচ ইংল্যান্ডের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসেন।
তবে ম্যাচে হাল ছাড়েনি পাকিস্তান। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে নিজের শেষ ওভারে এসে ব্রুককে আউট করেন শাদাব খান। ২০ রানে এই ইংলিশ ব্যাটার ফিরলে ভাঙে স্টোকসের সঙ্গে তার ৩৯ রানের জুটি।
এরপর অবশ্য পাকিস্তানকে আর সুযোগ দেননি মঈন আলী ও স্টোকস। ব্যক্তিগত ১৯ রানে মঈন যখন ফেরেন, জয় থেকে মাত্র ৬ রান দূরে ছিল ইংল্যান্ড। মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলে বেন স্টোকস সিঙ্গেল নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইংলিশদের শিরোপা জয় নিশ্চিত হয়।
এ ম্যাচে ৪৯ বলে ৫২ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন স্টোকস। পাকিস্তানের হয়ে রউফ দুটি এবং শাহিন, শাদাব ও ওয়াসিম একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ দলপতি জস বাটলার। পাকিস্তানের হয়ে বাবর আজমের সঙ্গে যথারীতি ইনিংস উদ্বোধনে নামেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।
প্রথম চার ওভার কোনো উইকেট না হারিয়েই কাটিয়ে দেন বাবর ও রিজওয়ান। পঞ্চম ওভারে প্রথম আঘাত হানে ইংল্যান্ড। ১৫ রান করা রিজওয়ানকে বোল্ড করেন স্যাম কুরান। মোহাম্মদ হারিস এদিন ৮ রানের বেশি করতে পারেননি। তাকে ফেরান বেন স্টোকস।
৪৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর ৩৯ রানের জুটি গড়েন বাবর আজম ও শান মাসুদ। আদিল রশিদের অবিশ্বাস্য ক্যাচে পরিণত হয়ে বাবর ফিরলে ভাঙে এ জুটি। পাকিস্তান অধিনায়ক করেন ৩২ রান।
স্টোকসের দ্বিতীয় শিকার হওয়া ইফতিখার আহমেদ আজ রানের খাতাই খুলতে পারেননি। এরপর দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন শান মাসুদ ও শাদাব খান। কুরানের বলে ৩৮ রান করা শান ফিরলে ভাঙে দুজনের ৩৬ রানের জুটি।
শান আউট হওয়ার পরপরই আউট হন শাদাব। তিনি ২০ রান করেন। শেষদিকে পাকিস্তানের ব্যাটাররা ছিলেন আসা যাওয়ার মাঝে। আর কেউই দুই অংকের ঘরে রান করতে পারেননি।
শেষদিকে ৩ বলে ৫ রানের ছোট্ট ক্যামিও খেলেন শাহিন আফ্রিদি। ইংল্যান্ডের হয়ে স্যাম কুরান তিনটি, আদিল রশিদ ও ক্রিস জর্ডান দুটি এবং বেন স্টোকস একটি উইকেট শিকার করেন।