আশাশুনিতে মন্দিরের মুর্তি চুরির ঘটনার ষোল মাস পর প্রধান অভিযুক্ত গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার:
আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের কাপসন্ডা সার্বজনীন জগদ্ধাত্রী মন্দিরের তালা ভেঙ্গে দুটি মুর্তি চুরি হওয়ার ঘটনায় ১৬ মাস পর সন্দেহ ভাজন প্রধান অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম ভুন্ডুলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত রবিউল ইসলাম বুধহাটার শ্বেতপুর গ্রামের জয়নুদ্দিন গাজীর ছেলে। শনিবার ভোর বেলা বুধহাটা বাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নূর নবী জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধহাটা এলাকায় অভিযান চালিয়ে রবিউল ইসলাম ভুন্ডুলকে গ্রেফতার করা হয়।কাপসন্ডা সার্বজনীন মন্দিরের মূর্তি চুরি হওয়ার ঘটনার পর থেকে সে দীর্ঘদিন পলাতক ছিল। তার বিরুদ্ধে এলাকায় বিভিন্ন চুরি, মাদক সেবন, মাদক বিক্রেতার অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানাই, ভুন্ডল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছাতা ঠিক করা, আম গাছে ঔষধ দেওয়ার নামে বাড়িতে বাড়িতে নানা কৌশলে প্রবেশ করে। রাতে বা দিনে সুযোগ বুঝে বাড়ি মালিকের সর্বস্ব লুটে নায় সে। আর লুটকৃত মাল নিয়ে এলাকা ছেড়ে ঢাকা, খুলনা সহদেশের বিভিন্ন জেলা শহরে গিয়ে রিকশা চালায়। পরে যখন চুরির ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায় সে তখন আবার এলাকায় চলে এসে পূর্বের কাজ শুরু করে।
কাপসন্ডা সার্বজনীন জগদ্ধাত্রী মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক মেধস ব্যানার্জী জানান, কাপসন্ডা সার্বজনীন মন্দির একটি ঐতিহ্যবাহী মন্দির। মন্দিরের সকাল সন্ধ্যা নিয়মিত অর্চনা করে থাকেন ভক্তরা। কিন্তু মন্দিরের চারটি মূর্তির মধ্যে কৃষ্ণ ও নারায়ন মূর্তি চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরা। সেই থেকে পূজা অর্চনা করতে অনেক বিঘ্নিত হচ্ছে ।
চুরি হওয়ার দীর্ঘদিন পার হলে ঘটনাটি পরিষ্কার হতে থাকে। বুধহাটা এলাকার মানুষের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ভুন্ডলকে খুঁজতে থাকে। শনিবার ভোর রাতে তাকে গ্রেফতার করে। তাকে রিমান্ডে নেওয়া হলে মূর্তি দুটি উদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। সম্প্রতি রবিউল ইসলাম ভুন্ডল বুধহাটা এলাকায় ফিরে এসে দূর্গা পূজার দশমীর দিন বুধহাটা বাজারের বাসিন্দা স্বাগতম চক্রবর্তীর বাড়িতে চুরি করে সর্বত্র লুট করে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বছর ২০২১সালের ৮জুলাই বৃহস্পতিবার দিবাগত সন্ধ্যায় মন্দিরে সন্ধ্যা প্রদীপ দেওয়ার সময় দেখতে পায় মন্দিরের তালা ভাঙ্গা ও বিভিন্ন মুর্তি মধ্যে কৃষ্ণ ও নারায়ণ ঠাকুরের দুটি মুর্তি নেই। পরে অনেক খোঁজাখোজির পর তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। মুর্তি দুইটির মধ্যে কষ্টি পাথরের ও অন্যটি পিতলের। এঘটনায় মন্দিরের সভাপতি কৃষ্ণ মোহন ব্যানার্জী বাদি হয়ে গত ১২জুলাই আশাশুনি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
আশাশুনি থানার তদন্ত ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানান, গ্রেফতারকৃত রবিউল ইসলাম ভুন্ডুলকে শনিবার বিকালে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মূর্তি উদ্ধারের জন্য আদালতের কাছে রিমান্ড চাওয়া হবে। তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে মূল রহস্য জানা যাবে বলে জানান তিনি।
Please follow and like us: