বাড়তি তাপপ্রবাহে বছরে ৯০ হাজার মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা। এমনকি বাড়তি তাপমাত্রার কারণে চলতি বছর কেবল ইউরোপেই কমপক্ষে ১৫ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

আর তাই এখনই যদি কিছু করা না হয়, তাহলে তাপপ্রবাহের ফলে শতাব্দীর শেষ নাগাদ প্রতি বছর ৯০ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে ইউরোপীয়ান এনভায়রনমেন্ট এজেন্সি (ইইএ) জানিয়েছে। বুধবার (৯ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

সংস্থাটি বলছে, ‘কোনো ধরনের অভিযোজন ব্যবস্থা ছাড়া এবং ২১০০ সালের মধ্যে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে ৯০ হাজার ইউরোপীয় বার্ষিক চরম তাপ থেকে মারা যেতে পারে। এছাড়া ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হলে বার্ষিক প্রাণহানি ৩০ হাজারে নেমে আসতে পারে।’

আগামী ২১০০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রাক শিল্প যুগের চেয়ে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বহু দেশ। তবে বর্তমানে যে হারে কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে তাতে এই লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হতে পারে দেশগুলো।

বীমা তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে ইউরোপীয়ান এনভায়রনমেন্ট এজেন্সি (ইইএ) বলেছে, ১৯৮০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে অতিরিক্ত গরমের কারণে প্রায় ১ লাখ ২৯ হাজার ইউরোপীয়ান মারা গেছেন। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও বর্ধিত নগরায়নের কারণে আরও ঘন ঘন তাপপ্রবাহ সামনের বছরগুলোতে বিশেষ করে ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলে এই ধরনের প্রাণহানির সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গরম আবহাওয়ার কারণে ইউরোপে চলতি বছর এ পর্যন্ত অন্তত ১৫ হাজার মানুষ মারা গেছেন। এমনকি বাড়তি তাপমাত্রার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে স্পেন এবং জার্মানি রয়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

বার্তাসংস্থা এএফপি বলছে, রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে চলতি বছরের জুন থেকে আগস্ট, এই তিন মাস ছিল ইউরোপে সবচেয়ে উষ্ণ এবং ব্যতিক্রমীভাবে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে চলতি বছর এই মহাদেশে সবচেয়ে খারাপ খরা দেখা দিয়েছে।

ইউরোপীয়ান এনভায়রনমেন্ট এজেন্সি বলছে, বাড়তি তাপমাত্রা নিয়ে বিপদ ছাড়াও মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গু জ্বরের মতো সংক্রামক রোগের জন্য ইউরোপকে আরও প্রবণ করে তুলতে পারে জলবায়ু পরিবর্তন।

এই পরিস্থিতি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইইএ। সংস্থাটি বলছে, ‘উচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রায় সকল মৃত্যু ইউরোপীয় প্রেক্ষাপটে প্রতিরোধযোগ্য।’

সংস্থাটির ভাষায়, ‘স্বাস্থ্যের ওপর তাপের প্রভাবগুলো হ্রাস করার জন্য কার্যকর তাপ স্বাস্থ্য কর্ম পরিকল্পনা, শহুরে সবুজায়ন, উপযুক্ত ভবন নকশা এবং নির্মাণ এবং কাজের সময় ও অবস্থার সামঞ্জস্য-সহ বিস্তৃত পরিসরের পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।’

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)