বুধহাটা বিবিএম কলেজিয়েট স্কুলে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে ঝাড়– মিছিল
প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
‘অনিয়ম-দুর্নীতি, চলবে না, চলবে না’ ¯স্লোগানে প্রকম্পিত করে বুধহাটা বাজারের অলিতে গলিতে ঝাড়– মিছিল করেছে বুধহাটা বিবিএম কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক ও স্থানীয়রা। ২০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় স্কুল ও বাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে ঝাড়– মিছিল অতিক্রম করে।
বুধহাটা বাহাদুরপুর ভুবন মোহন কলেজিয়েট স্কুলের দুর্নীতি-অনিয়ম ও সাম্প্রতিক কালে ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে তালবাহানার প্রতিবাদে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মায়েরা বুধহাটা বাজারে এক বিক্ষোভ মিছিল ও ঝাড়– মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয়রা এ বিক্ষোভে যোগদিলে অভিভাবকদের দাবি গণদাবীতে পরিণত হয়।
অভিভাবকদের মধ্যে শাহিদা, মুক্তি, রেখা, শাবনুর, ফাতেমা, রেক্সনা, হামিদা, সন্ধ্যা, নছিমন, মিলি, হাসিনাসহ প্রায় তিন-শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীদের মায়েরা হাজির ছিলেন। বিক্ষোভ মিছিলে বক্তারা বলেন, ‘করোনা-কালীন সময়ে বুধহাটা বাহাদুরপুর ভুবন মোহন কলেজিয়েট স্কুলের এডহক কমিটির আহবায়ক ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম (৩মেয়াদে ৬ বছর) ইসমাইল, সিরাজুল ও প্রধান শিক্ষক দাউদ হোসেন। এই মেয়াদে ৬টি নিয়োগে ১৫লাখ করে ৯০ লাখটাকা আদায় করেছে কমিটি।
কিন্তু একটি টাকাও স্কুল ফান্ডে জমা দেয়া হয়নি। তালা স্কুলের লেখাপড়া বাদ দিয়ে স্কুলটিকে বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত করেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে টাকার বিনিময়ে অযোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দিয়েছে। যে বিদ্যালয়টি গত ৮বছর পূর্বে যশোর বোর্ডের শীর্ষ দশে অবস্থান করছিলো। কিন্তু সেই অবস্থান এখন আর নেই।’
বিক্ষোভে আবু সাইদ বলেন, ‘স্কুলের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি আছে। সেখানে ১০০টিরও বেশি দোকানঘর বরাদ্দের নামে এডহক কমিটির চারজন যোগসাজস করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে। আহবায়ক এবিএম মোস্তাকিমের নামে ৩টি, ইসমাইলের নামে ৩টি, সিরাজুরে নামে ৩টি ও প্রধান শিক্ষক দাউদ হোসেনের নামে ৩টি করে দোকানঘর বরাদ্দ দেয়া হয় স্বল্পমূল্যে।
পরবর্তীতে সেগুলো চড়া দামে বিক্রি করে দিয়েছে তারা। বর্তমানে বিদ্যলয়ের অভিভাবকদের প্রত্যক্ষ ভোটে চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ডাবলু প্যানেল পূর্ণ প্যানেলে উপজেলা চেয়ারম্যান প্যানেলকে পরাজিত করে। এটা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিভাবকদের স্পষ্ট মতামত প্রকাশ। কিন্তু স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিভাবকদের মতামতকে মূল্য না দিয়ে এবিএম মোস্তাকিমকে সভাপতি করার পায়তারা করছে। এই কারণেই অভিভাবক মহল ও বুধহাটার মানুষ আন্দোলনে নেমেছে।’
বিক্ষোভকারী বকুল মিছিলে অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক দাউদ হোসেনের চাকরির মেয়াদ দুই বছর পূর্বে শেষ হলেও কমিটি নিয়ম বহির্ভূতভাবে তার মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়েছে। যা সম্ভব হয়েছে প্রধান শিক্ষক নিজেই কমিটির সদস্য হওয়ার কারণে। যা সম্পূর্ণ বে-আইনী। প্রতিষ্ঠানটির নতুন কমিটির মাধ্যমে প্রিন্সিপ্যাল নিয়োগ দিবে বিধায় এই চক্রটি উঠেপড়ে লেগেছে তাদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য। ইতোমধ্যে যাকে নিয়োগ দিবে তার কাছ থেকে অগ্রিম বাবদ পাঁচ-লক্ষ টাকা নিয়েছে এবিএম মোস্তাকিম প্যানেল। সেই পাঁচ-লক্ষ টাকা অভিভাবকদের ভোট কিনতে খরচ করেছে তারা।’
অভিভাবক-মহল দাবী জানিয়ে বলেন,‘নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যদের মতামতে সভাপতি নির্বাচিত করতে হবে। সকল দুর্নীতির বিচার করতে হবে। আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত দিতে হবে। না হলে বৃহৎ আকারে আন্দোলন যাবে স্থানীয়রাসহ অভিভাবক মহল।
সাতক্ষীরা ৩ আসনের সংসদ সদস্য, অভিভাবক, শিক্ষানুরাগী অধ্যাপক ডাঃ আ ফ ম রুহুল হকের কাছে অভিভাবকরা অনুরোধকরে বলেন, জনগণের দাবীকে উপেক্ষা করে ব্যক্তি বিশেষের মূল্যায়ন করবেন না। যদি তাই হয় প্রয়োজনে আমরা শিক্ষামন্ত্রী, সর্বোপরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জন-নেত্রী শেখ হাসিনার নিকট জনগণের পক্ষ থেকে আবেদন করা হবে।