১০ কোটি করোনা টিকা ধ্বংস করল সেরাম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়ায় করোনা টিকা অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভারতীয় সংস্করণ কোভিশিল্ডের ১০ কোটি ডোজ ধ্বংস করেছে এই টিকার প্রস্তুকারী কোম্পানি সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই)।

শুক্রবার ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাষ্ট্র মহারাষ্ট্রের পুনে জেলায় অবস্থিত এসআইআইয়ের মূল কারখানায় এসব টিকা ধ্বংস করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

অবশ্য আগের দিন বৃহস্পতিবার ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক এক সাক্ষাৎকারে এসআইআইয়ের শীর্ষ নির্বাহী আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছিলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকেই এসআইআই কোভিশিল্ডের উৎপাদন বন্ধ রেখেছে এবং কোম্পানির সংরক্ষণাগারে থাকা টিকার ডোজের মধ্যে অন্তত ১০ কোটি টিকা ইতোমধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার পুনেতে এসআইআই কার্যালয়ের সদর দপ্তরে উন্নয়নশীল বিভিন্ন দেশের টিকা প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর জোট ডেভেলপিং কান্ট্রিজ ভ্যাক্সিন ম্যানুফ্যাকচারার্স নেটওয়ার্কের (ডিসিভিএমএন) বার্ষিক সাধারণ সভা চলছিল। চলতি বছর এই সভার আয়োজক ছিল এসআইআই। সেই সভার বিরতিতেই এনডিটিভিকে সাক্ষাৎকার দেন আদর পুনাওয়ালা।

ভারতের জনগণ করোনা সম্পর্কে ‘তিতিবিরক্ত’ হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে সাক্ষাৎকারে পুনাওয়ালা বলেন, ‘জনগণ করোনার ওপর এতটাই বিরক্ত হয়ে উঠেছে যে তারা আর বুস্টার ডোজও নিতে চাইছে না; এবং সত্যি কথা বলতে—আমি নিজেও (মহামারির ওপর) বিরক্ত। আমাদের সবার অবস্থা এখন একই।’

২০২০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ব্রিটিশ-সুইডিশ বহুজাতিক কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকার অনুমোদন দেওয়ার পর ওই কোম্পানির সঙ্গে করোনা টিকা উৎপাদনের চুক্তি করে ভারতীয় কোম্পানি সেরাম ইনস্টিটিউট, যা ইতোমধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী, অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার ভারতীয় সংস্করণ কোভিশিল্ড উৎপাদন করা শুরু করে সেরাম। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয় ভারতে। সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত কোভিশিল্ড ও ভারতীয় কোম্পানি ভারত বায়োটেকের করোনা টিকা কোভ্যাক্সিন— এই দু’টি করোনা টিকাই মূলত ব্যবহার করা হয়েছে এ কর্মসূচিতে।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনগণের ৭০ শতাংশই করোনা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন।

বৃহস্পতিবারের সাক্ষাৎকারে করোনা টিকার ভবিষ্যত নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন পুনাওয়ালা।

‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শীতকালে জ্বরজারি ও সর্দিকাশি হয়। ইউরোপে এবারের শীতকালে লোকজন ঠাণ্ডাজনিত জ্বর ও সর্দিকাশি সম্পর্কিত ওষুধের সঙ্গে করোনা টিকার একটি ডোজও হয়তো নেবেন।’

‘কিন্তু ভারতের লোকজন ইউরোপের মতো নয়। সাধারণ ঠাণ্ডা, জ্বরজারিতে তারা সাধারণত ওষুধ সেবন করে না।’

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)