মৌতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য : পরীক্ষা বর্জন প্রার্থীদের 

স্টাফ রিপোর্টার:
কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগে ১৯ লক্ষ টাকা বাণিজ্যর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি প্রার্থীরা।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে অফিস সহায়ক পদে ১ জনের বিপরীতে ৬ জন প্রার্থী থাকলেও পরিক্ষায় ৩ জন অংশগ্রহণ করেন। পরিছন্ন কর্মী ও আয়া পদে ৪ জন করে প্রার্থী থাকলেও একজন করে প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। ফরাম পুরন না হওয়ায় পরিছন্ন কর্মী ও আয়া পদের পরিক্ষা বাতিল হয়েছে বলে জানান উপজেলা শিক্ষা অফিসার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আবেদন কারীদের অভিভাবকরা জানান, অফিস সহায়ক পদে খান সুমনের কাছ থেকে ৫ লক্ষ, পরিছন্ন কর্মীর জন্য নাজমুন নাহার ও আয়া পদে সানজিদা পারভীনের কাছ থেকে ৭ লক্ষ টাকা নিয়েছে ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষক। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে পরিচ্ছন্ন কর্মী ও আয়া পদের জন্য ৪ জন করে আবেদন কারী প্রার্থী পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি। অফিস সহকারী পদে অংশগ্রহণ করেছিল শুভ ঘোষ ,নাসির হোসেন,খান সুমন। তবে খান সুমন টাকা দিয়ে আগে থেকে ম্যানিজিং কমিটির মনোনীত ছিল বলে জানান তারা।
অনুসন্ধানে জানাযায়,পরিছন্ন কর্মী হিসেবে নিয়োগ পেতে নাজমুন নাহার দিয়েছে ৭ লক্ষ টাকা। এছাড়া আয়া পদের জন্য বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মুন্সী মুকুলের কাছে ৭ লক্ষ টাকা দিয়েছে সাজিদা পারভীন। কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের কাছে ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছে সুমন খান। আবেদন কারীদের অধিকাংশ টাকা দিয়েছে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য মুন্সি মুকুল হোসেনের কাছে। নিয়োগের বিষয় নিয়ে কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের মধ্যে মনমালিন্যর সৃষ্টি হয়। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে এসব তথ্য।
আয়া পদে আবেদন কারী স্বপ্না পারভীনের মা মাহফুজা খাতুন ও ভাই শাহিন জানান, আয়া পদের জন্য সাজিদা পারভীনের কাছ থেকে ৭ লক্ষ টাকা নিয়েছে মুন্সী মুকুল হোসেন। পাতানো নিয়োগ হবে জেনে তার মেয়ে নিয়োগ পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি।এছাড়া তারা গরীব মানুষ টাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই তাদের।
এবিষয়ে জানতে চাইলে মৌতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মুন্সী মুকুল ইসলাম সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি নিয়োগের বিষয়ে কারো সাথে লেনদেন করেননি। এছাড়া স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সাথে কোন প্রার্থীর লেনদেন হয়েছে বলে তার জানা নেই।
মৌতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আশেক মেহেদী সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অফিস সহায়ক পদে ৩ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছিল। পরিক্ষায় নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ছিলেন তিনি নিজেই। এছাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ, জেলা শিক্ষা অফিসারের প্রতিনিধিত্ব করেন তালা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অলোক কুমার তালুকদার,মৌতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাহমিনা খাতুন,অভিভাবক সদস্য মুন্সী মুকুল হোসেন নিয়োগ বোর্ডে সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে পরিক্ষা হয়েছে বলে তিনি জানান।
মৌতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাহমিনা খাতুনের মোবাইল নাম্বাররে একাধিক বার ফোন দিলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় অফিস সহকারী পদে উত্তীর্ণ হয়েছে খাঁন সুমন। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন টাকা লেনদেন হয়েছে কিনা সেবিষয়ে তিনি অবগত নন বলে জানান।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)