তালা দুর্গা মণ্ডপের সামনে লাইট ভাঙচুর, গ্রেপ্তারকৃত ৬ কিশোর জামিনে মুক্ত,ধরা ছোঁয়ার বাইরে মুল হোতা
রঘুনাথ খাঁ:
সাতক্ষীরার তালা উপজেলা ইসলামকাটি ইউনিয়নের বারাত ষষ্ঠীতলা সার্বজনীন শারদীয়া দুর্গাপুজা মণ্ডপের সামনে তিনটি রড লাইট ভাঙচুরসহ আটটি রড লাইট নষ্ট করে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তারকৃত ছয় কিশোর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তবে এ চক্রের মুল হোতা বারাত গ্রামের জাকির সরদারের ছেলে জাহিদ সরদার রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
তবে যারা বিজয়া দশমীর দিনে পুজা উপলক্ষে মন্দিরের সামনে রাস্তায় লাগানো টিউব লাইট পরিকল্পিতভাবে ভেঙে অনন্ধাকারচ্ছন্ন করে ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি করে বড় ধরণের অঘটন ঘটাতে চেয়েছিল তাদেরকে পহেলা অক্টোবর তালা থানার ৩৬ নং সাধারণ ডায়েরী মূলে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫১ ধারায় আদালতে পাঠানোয় এলাকার সাধারণ মানুষ হতাশ হয়েছে।
বারাত ষষ্ঠীতলা সার্বজনীন দুর্গাপুজা পরিচালনা কমিটির সভাপতি শঙ্কর কুমার দাস জানান, এবার এ মন্দিরে প্রথম দুর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার নবমী পুজা শেষে দিবাগত রাত একটার দিকে মন্দিরের সামনে আলোক সজ্জার জন্য লাগানো তিনটি রড লাইট ভাঙচুর করে অপর পাঁচটি চিউব লাইট নষ্ট করে দেয় একটি কিশোর গ্যাং চক্র। ভাঙচুরের আওয়াজ পেয়ে তিনিসহ সহসভাপতি ডাঃ প্রবীর কুমার পাল, কোষাধ্যক্ষ শঙ্কর পাল, ব্যাংকারজ উজ্জ্বলসহ কয়েক জন ছুঁটে আসেন। তাদের মন্দিরে ডেকরেটর পরিচালনাকারি কাজিডাঙা গ্রামের ইমরান হোসেনসহ কয়েকজন জানান যে, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সোবহান সরদারের পৌত্র সদ্য এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া জাহিদ সরদারসহ কাজীডাঙার আফজাল হোসেনের ছেলে ফয়সালসহ(১৯) কয়েকজন পুজার সময় শিৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে এ সব লাইট ভাঙচুর ও ক্ষতিসাধন করেছে। এ সময় মণ্ডপে দায়িত্ব পালনকারি আনছার সদস্য কিংকর সরকার বিষয়টি থানাকে অবহিত করে। খবর পেয়ে পুলিশ রাত দুটোরন দিকে এসে কাজীডাঙা গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে ফয়সাল, একই গ্রামের শাহাজাহান শেখের ছেলে শেখ মনিরুল ইসলাম (২০), এইচজিএম অদুদের ছেলে জিএম মিলন (১৯), সাজ্জাত মুন্সির ছেলে মোঃ তাজামুল মুন্সি (১৯), হায়দার মুন্সির ছেলে আবু হুরাইরা মুন্সি ওরফে সাইফুল্লাহ (১৯), আজগার মুন্সির ছেলে মোজাফফর মুন্সি (২০) ও আফজাল হোসেনের ছেলে ফয়সালকে(১৯) গ্রেপ্তার করে। তবে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান সরদারের পৌত্র জাহিদ সরদারকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। বুধবার তাদেরকে গত পহেলা অক্টোবর তালা থানায় পুলিশের দায়েরকৃত ৩৬ নং সাধারণ ডায়েরী মূলে ফেওজদারি দণ্ডবিধির ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। সাতক্ষীরার জ্যেষ্ট বিচারিক হাকিম দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোঃ সালাউদ্দিন েেগ্রপ্তারকৃত ছয়জনকে জামিনে মুক্তি দেন।
তালা থানার উপপরিদর্শক মোঃ নাসিরউদ্দিন তালুকদার গত বৃহষ্পতিবার আসামীদের আদালতে পাঠানো প্রতিবেদনের একাংশে উলেখ করেছেন যে, গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা গভীর রাতে পুজা মণ্ডপের পাশে লাইট ভাঙচুর,অন্ধকার করিয়া কোন আমলযোগ্য অপরাধ সংগঠণ বা সংগঠণের পরিকল্পনা করতে পারে বিধায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫১ ধারায় তাদেরকে গ্রেপ্তারপূর্বক আদালতে পাঠানো হলো।
তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান শুক্রবার বিকেলে এ প্রতিবেদককে জানান, গত পহেলা অক্টোবর ইসলামকাটি ইউনিয়নে পুজা মণ্ডপে মোবাইল ডিউটি করতে যাওয়ার আগে উপপরিদর্শক নাসিরউদ্দিন তরফদার থানায় ৩৬ নং সাধারণ ডায়েরী করে যায়। ৫ অক্টোবর বারাত ষষ্ঠীতলা মণ্ডপের সামনের রাস্তায় লাইট ভাঙচুর করার ঘটনায় পুজা পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না করায় উপপরিদর্শক নাসিরউদ্দিন তরফদার ওই সাধারণ ডায়েরী মূলে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পরদিন আদালতে পাঠায়। তবে আদালতে পাঠানোর আগে সে আরো একটি সাধারণ ডায়েরী করে।