রং তুলিতে উদভাসিত সাতক্ষীরার ৫৯৯টি দুর্গাপ্রতিমা

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা :

রং তুলির ছোঁয়ায় দেবীদুর্গার মৃত্তিকা মুর্তি ক্রমেই প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে। আর মাত্র ক’দিনের মাথায় শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। তার আগেই শেষ করতে হবে দেবীমুর্তি সজ্জিতকরনের সব কাজ। তাই শেষ মুহুর্তে রং তুলি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা।

সাতক্ষীরা জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ ঘোষ জানান, এবার জেলায় সার্বজনীন ও পারিবারিক মিলিয়ে ৫৯৯টি মণ্ডপে দুর্গাপুজা হচ্ছে। এবার মা আসছেন গজে আর চলে যাবেন নৌকায়। সাতক্ষীরার প্রতিমাশিল্পীরা এখন তাই রাত দিন পরিশ্রম করে দুর্গাদেবী ও তার পরিবারকে সাজিয়ে তুলছেন। ২৫ সেপ্টেম্বর মহালায়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের আগমন ঘটেছে। আগামি পহেলা অক্টোবর শনিবার ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে পূজা।

৫ অক্টোবর বুধবার বিজয়া দশমীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় আয়োজন দুর্গাপূজার সব আনুষ্ঠানিকতা। তবে সাতক্ষীরা সদরের শিবপুরের কানারডাঙায় ও তালা উপজেলার জেয়ালা -নলতা সাহাপাড়ার মন্দিরে দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর করায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছুটা হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। এরপরও এবার করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় পুজার আনন্দে জোয়ার বইবে বলে মনে করেন হিন্দু স¤প্রদায়ের লোকজন। যাতে সা¤প্রদায়িক শক্তি প্রতিমা ভাঙচুর না করতে পারে সেজন্য প্রতিটি মণ্ডপের স্বেচ্ছাসেবকদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই অনেক মণ্ডপে সিসি টিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।

প্রতিমা শিল্পী সন্তোষ সরকার জানান, এবার সাতটি প্রতিমা তৈরি করছেন। গত বছরের তুলনায় এবার ভালো। তবে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি । তাই খরচ বাদ দিয়ে খুব কম টাকাই তাদের পকেটে যাবে।

প্রতিমা শিল্পী পরিমল সরকার, প্রতিমাশিল্পী । আগামি চার দিনে চারটি প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করবেন। পহেলা অক্টোবর ষ্ষ্ঠীর কতা মাথায় রেখেই তারা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

আশাশুনির খালিয়া গ্রামের সুজন সানা বলেন, গত দুই বছর করোনার কারণে দুর্গাপুজার আনন্দ ভালোভাবে উপভোগ করা যায়নি। এবার প্রকোপ কম থাকায় সুন্দর পরিবেশে পুজা উদযাপন করা যাবে। তবে যেভাবে সা¤প্রদায়িক শক্তি দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাঙচুর করছে তা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।

জেলা মন্দিরসমিতির সাধারণ সম্পাদক নিত্যানন্দ আমিন জানান, সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলায় এবার ৫৯৯ টি মন্ডপে মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। দুই বছর করোনার পর এবার পুজায় ভিড় হবে। তবে প্রশাসন ও স্বেচ্চাসেবকদের সমন্বয়ে শান্তিপূর্ণ পুজা উদযাপন হবে বলে তিনি মনে করেন। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষে ৫৮৭টি, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে ৫৯২টি পুজার কথা বলা হলেও দেরীতে শুরু করা কয়েকটি প্রতিমা মিলিয়ে এবারের প্রতিমা হয়েছে ৫৯৯টি।

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান বলেন,জেলাব্যাপী শান্তিপূর্ণ পুজা উদযাপনের লক্ষ্যে কমিটি গঠণ করা হয়েছে। ৯৬টি মোবাইল টিম একযোগে কাজ করবে। সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসন একত্রে কাজ করবে। এ ছাড়াও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে কয়েকটি মোবাইল টিম কাজ করবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)