কলেজ অধ্যক্ষের কোটি টাকা আত্মসাৎতের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি :

অবৈধ নিয়োগ বানিজ্য সহ সরকারী টাকা আত্মসাৎতের মাধ্যমে  কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বড়দল আফতাব উদ্দীন কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ ড মোঃ শিহাবুদ্দীন বলে অভিযোগ উঠেছে ।  খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ২০১৫সালে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে সরকারী কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বড়দল কলেজিয়েট স্কুলে অধ্যক্ষ পদে  যোগদান করেন ড.মোঃ শিহাবুদ্দীন  । এরপর ২০১৯ সালে  প্রতিষ্ঠানে ৬ শিক্ষক নিয়োগবানিজ্যে  হাতিয়ে নেন অর্ধকোটি।

এছাড়া সংখ্যালঘু শিক্ষকদের বিভিন্ন মামলায় হয়রানি জালে ফেলে হাতিয়ে নেন মোটা অংকের টাকা । টাকা দিতে না পারলে তাদের বেতন কর্তন করেন অধ্যক্ষ বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। নাম না জানানোর শর্তে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক জানায়, অধ্যক্ষ শিহাবুদ্দীন প্রতিষ্টানের গাছ বিক্রি থেকে শুরু করে  সরকারী  উন্নয়ন বরাদ্ধের টাকা পর্যান্ত আত্মসাৎ করেছেন। এ নিয়ে  আমরা বহুবার প্রতিবাদ করেছি কিন্তু কোন ফল হয়নি।

এছাড়া বিষয়টি নিয়ে নিয়ে আমরা বিভাগীয় কর্মকর্তা জানিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি । বর্তমানে তার অনিময়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শিক্ষাকর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন আমাদের এক সহকর্মী শিবপদ সানা । এঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে  কৌশালে  ওই শিক্ষককে মামলার জালে ফেলে ২০মাসের বেতন পর্যান্ত হাতিয়ে নেয় অধ্যক্ষ শিহাবুদ্দীন    বর্তমানে তার ক্ষমতার দাপটের কাছে কলেজের শিক্ষকরা অসহায় হয়ে পড়েছে। সব শেষে এই দূর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের অপসারন সহ শাস্তির জন্য শিক্ষামন্ত্রীসহ সংক্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ঘটনার ভুক্তভোগী শিবপদ সানা বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ শফিউর  যোগাদের পর প্রতিষ্ঠানটি দূর্নীতির আখড়া খানায় পরিনত হয়েছে।  কলেজের যোগাদানের কিছুদিন পর তৎকালীন সময়ে হাতিয়ে নেন অর্ধকোটি। এরপর নানা অযুহাতে শিক্ষদের বেতন কর্তন সহ সংষ্কার বরাদ্দেরর টাকা আত্মসাৎ করে নানা সময়ে  হাতিয়ে নিয়েছে ৪৫-৫০লক্ষ টাকা। এসকল বিষয়ে আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে আমরাই প্রতিবেশী এক কলেজ  শিক্ষক আদিত্য বানার্জীকে দিয়ে মিথ্যা মামলার আসামী সহ  দুদকের মিথ্যে মামলায় আসামী করেন তিনি।

বর্তামানে আমাকে প্রতিষ্টান থেকে বহিস্কার সহ আমার  ২০ মাসের বেতনের ৫লক্ষটাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। এছাড়া আমাকে ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশ দিয়ে  গ্রেফতার  করানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ বিষয়ে মামলার বাদী আদিত্য বানার্জীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন,  শিবপদ মন্ডল আমার ভাইয়ের বউকে প্রচন্ড মারপিট করে একসময়। পরবর্তীতে  মাথার   আঘাতের কারনে আমার ভাইয়ের বউয়ের ভারতে চিকিৎসাধীন অবস্তায় মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে আমি লাশের ময়না তদন্ত করিয়ে  শিবপদ সহ কয়েকজনকে আসামী করে তালা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করি। এর কিছুদিন পর তার বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি সে ভুয়া নিবন্ধন দিয়ে কলেজের চাকরি করছে।

শিবপদ:র উপর প্রতিশোধ নিতে তার বিরুদ্ধে খুলনা দুদক কার্যলয়ে মামলা করি। দুদক কর্মকর্তারা তদন্তের সত্যতা পেয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র আদলতে সহ শিক্ষামন্ত্রলয়ে ব্যাবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে। ঘটনাটি অস্বীকার করে বড়দল কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ ড. মোঃ শিহাবুদ্দীন  বলেন,শিবপদ সানা আমার কলেজের একজন  শিক্ষক হয়ে ভূয়া নিবন্ধন দিয়ে চাকরি করছেন। বছর তিনেক  আগে সেটি প্রকাশ্যে আসে এরপর  আমি তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্তা গ্রহনের জন্য বিভাগীয় কর্মকর্তা সহ সংক্লিষ্টদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিই।

এরপর প্রতিবেশীর সাথে বিরোধের জেরে  হত্যামামলাসহ কয়েকটি মামলায় জড়ানোর কারনে  তাকে সাসপেন্ড করা হয়ে। কিন্তু  তার বেতনের কোন টাকা তুলে নেওয়া হয়নি। এছাড়া মামলার বাদীদের সাথে আমার কোন প্রকার সম্পৃক্তা নেই বলে জানান।কোটি  টাকা আত্মসাৎতের বিষয়ে প্রস্ন ছুঁড়ে দিলে জবাবে  তিনি  বলেন, আপনারা জানেন এখন নিয়োগ প্রক্রিয়া কিভাবে হয়, বিষয়টি নিয়ে আমার প্রতিষ্ঠানের সভাপতির কাছে শোনেন তিনি বিস্তারিত বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে বড়দল আফতাফ উদ্দীন কলেজিয়েট স্কুলের  সভাপতি সাবেক সংসদ  মোকলেছুর রহমানের সাথে একাধিক বার যোগাযোগের  চেষ্টা করলে তিনি মুঠোফোনটি রিসিভ করেন নি।

বিষয়টি নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক হুমায়ন কবিরের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি জানা নেই। এবিষয়ে  লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)