সোনার মেয়েদের ‘হিমালয়’ জয়

 স্পোর্টস ডেস্ক :

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে হারিয়ে প্রথমবার শিরোপা জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।

১৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন দশরথের গ্যালারি ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। গ্যালারিতে নেপালি সমর্থকদের আধিপত্য ছিল। নেপালে থাকা বাংলাদেশি সমর্থকরা সংখ্যায় কম হলেও এসেছিলেন সাবিনা-কৃষ্ণাদের জন্য গলা ফাটাতে।

ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা দুয়েক আগে ভারি বৃষ্টিতে মাঠ হয়ে যায় কর্দমাক্ত। ফলে দুই দলেরই সমস্যা হয় বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে। তারপরও শুরু থেকেই একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যায় বাংলাদেশ।

ডান পায়ের চোট থাকায় সিরাত জাহান স্বপ্না খেলতে পারেননি। তার পরিবর্তে খেলছেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। ১৪ মিনিটে তার দুর্দান্ত গোলেই আনন্দে ভাসে বাংলাদেশ।

সানজিদা খাতুনের শট এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে পেয়ে যান মনিকা। একজনকে কাটিয়ে বাইলাইনের একটু উপর থেকে তিনি ক্রস বাড়ালেন বক্সে, শামসুন্নাহারের দুরন্ত ফ্লিকে জাল খুঁজে পায় বল। টুর্নামেন্টে নেপালের জালে এটাই প্রথম গোল।

গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে নেপাল। মাঝমাঠে মারিয়া-মনিকার নিয়ন্ত্রণে একটু টান পড়ে; ফলে বাংলাদেশের রক্ষণে চাপ দিতে থাকে স্বাগতিকরা। কিন্তু পোস্টের নিচে রুপনা ছিলেন দারুণ ক্ষিপ্র, বিশ্বস্ত। ২৩তম মিনিটে অনিতার শট প্রথম দফায় আটকে দ্বিতীয় দফায় গ্লাভসে নেন তিনি।

৩৪তম মিনিটে আবারো রুপনার ঝলক। বক্সের বাইরে অনিতার ছোট ফ্রি-কিকে দিপা সাশির শট ঝাঁপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান গোলরক্ষক। এই কর্নার থেকে ডিফেন্ডারদের দৃঢ়তায় বেঁচে যায় বাংলাদেশ। গোললাইন থেকে বিপদমুক্ত করেন ডিফেন্ডাররা।

৪১তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের ভুলে বল পেয়ে অধিনায়ক সাবিনা পাস বাড়ান কৃষ্ণার উদ্দেশে। প্রথম ছোঁয়ায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে একটু এগিয়ে বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন এই ফরোয়ার্ড।

দ্বিতীয়ার্ধে স্বাগতিক নেপাল অত্যন্ত চাপে রাখে বাংলাদেশকে। সেই চাপের ধারাবাহিকতায় ৭০ মিনিটে আনিতা বেসন্ত নেপালকে গোল করে ম্যাচে ফেরান। সংঘবদ্ধ এক আক্রমণে বক্সের মধ্যে প্রবেশ করে কোনাকুনি শটে রুপনা চাকমাকে পরাস্ত করেন।

নেপাল আরও এক গোল দিয়ে সমতা আনার চেষ্টা করছিল। সেই মুহূর্তে বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রানী সরকার গোল করে বাংলাদেশকে জয়ের সুবাতাস দেন। ৭৭ মিনিটে মিডফিল্ড থেকে পাওয়া থ্রুতে তিনি আগুয়ান গোলরক্ষককে দারুণভাবে পরাস্ত করেন। কৃষ্ণার এই গোলেই বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়।

বাংলাদেশের একাদশ: রুপা চাকমা (গোলরক্ষক), সাবিনা খাতুন (অধিনায়ক), শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার, আঁখি খাতুন, সাসুরা পারভিন, মনিকা চাকমা, সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্ডা, কৃষ্ণা রানী সরকার ও স্বপ্না জাহান।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)