নৃত্য নিয়ে উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের জন্য স্কলারশিপ পেয়েছেন সাতক্ষীরা ছেলে নাঈম
নিজস্ব প্রতিনিধি :
মো: জোবায়ের হোসেন নাঈম। সাতক্ষীরা জেলার ৭ নং আলীপুর ইউনিয়নের ইবাদত হোসেন ও জিন্নাত নাহার দম্পত্তির দুই সন্তানের মধ্যে নাঈম বড় সন্তান। নাঈম এর পথচলার শুরুটা এতটা মসৃণ ছিল না ,এখনো যে সহজ সেটাও নয়। দীর্ঘ পথ চলায় বিভিন্ন রাষ্ট্রীয়,জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশনার সুযোগ হয়েছে এবং সম্মান ও ভালোবাসা কুড়িয়েছে দর্শকদের কাছ থেকে।
নাঈমের নৃত্যে হাতে খড়ি হয় সাতক্ষীরার নৃত্যগুরু সাথী হালদার এর কাছে। পরবর্তীতে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সাতক্ষীরা এবং দীপালোক একাডেমির সাথে যুক্ত থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে এবং বর্তমানে দীপালোকের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আছেন নাঈম। নাঈম এসএসসি পাশ করার পর ঢাকাতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনার পাশাপাশি নৃত্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে করেছেন সমৃদ্ধ।
তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমি (বাফা) থেকে প্রথম স্থান অর্জন সহ চার বছর মেয়াদী সার্টিফিকেট কোর্স সম্পন্ন করেন। ঢাকাতে প্রথম নৃত্যে পথচলা শুরু হয় নৃত্যশিল্পী,মডেল ও অভিনেত্রী নুসরাত জান্নাত রুহী’র হাত ধরে। পরবর্তীতে নৃত্যগুরু দীপা খন্দকারের নিকট লোকনৃত্যে প্রশিক্ষণ লাভ করেন এবং লোকনৃত্যে তালিম নেয়ার পাশাপাশি তাঁর প্রতিষ্ঠান দিব্য সাংস্কৃতিক সংগঠন ও জি.এ. মান্নান ললিতকলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি শাস্ত্রীয় নৃত্য গৌড়ীয় নৃত্যে তালিম নিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক র্যাচেল প্রিয়াঙ্কা প্যারিসের নিকট।
তিনি কনটেম্পোরারি ডান্স এর উপর এবং সেই সাথে কথক নৃত্যের উপর ঢাকা ধানমন্ডি তে অবস্থিত রিদমোজ ডান্স স্কুলে নৃত্য গুরু তাহনুন আহমেদী’র এর নিকট প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে দুবাই এক্সপো ২০২০ তে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হয়ে দুবাই মিলেনিয়াম এম্পিথিয়েটারে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন।
নাঈম এর কাছে দুবাই ট্যুর সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আমাদেরকে বলেন, আমরা সাত দিনের ট্যুরে ইউনাইটেড আরব আমিরাতের রাজধানী আবু-ধাবি সহ দুবাই, আজমান, শারজাহ ও অন্যান্য সিটি গুলো পরিদর্শন করেন।এমন চাকচিক্য আর আভিজাত্যে মোড়ানো শহর কখনোই ভুলবার নয়।স্মৃতির পাতায় এমন এচিভমেন্ট আরো যুক্ত হোক এটাই প্রত্যাশা।
তিনি আরো বলেন, এ-বছর প্রাপ্তির ঝুলিটা একটু বেশিই!
এবছর আইসিসিআর স্কলারশিপ পেয়েছি। প্রতি বছর আইসিসিআর বাংলাদেশ থেকে স্কলারশিপ দেয়।এবছর সহকারী হাই কমিশন অফ ইন্ডিয়া,খুলনা থেকে মোট ৩৪ জন স্কলারশিপ পেয়েছে। তারমধ্যে সাতক্ষীরা থেকে পেয়েছেন ৪ জন। তিনি The Maharaja Sayajirao University Of Baroda তে স্কলারশিপ পেয়েছেন।
ঐতিহাসিক এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি শাস্ত্রীয় নৃত্য ভরতনাট্যম নৃত্যের উপর ব্যাচেলর ডিগ্রী অর্জন করতে যাচ্ছেন।
সাতক্ষীরা থেকে কেউ ডান্স নিয়ে উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের জন্য স্কলারশিপ পেয়েছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে তালিকাভুক্ত নৃত্যশিল্পী হিসেবেও পুরুষ নৃত্য শিল্পী হিসেবে তিনিই প্রথম। রাষ্ট্রীয় সফরে পুরুষ নৃত্যশিল্পী হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।
তার এই সাফল্য অব্যাহত থাকুক এবং তাঁর সকল অর্জন সাতক্ষীরাকে সমাদৃত করুক বিশ্ব দরবারে এমনটাই আশা করেছেন সাতক্ষীরাবাসী।