শ্যামনগরে পাইলস ডা. গোলাম বারীর বিরুদ্ধে ভূল চিকিৎসার অভিযোগ

আশিকুজ্জামান লিমন, শ্যামনগর :

শ্যামনগরে পাইলস ও নাকের পলিপাস বিষয়ে অভিজ্ঞ এম.এম গোলাম বারীর বিরুদ্ধে ভূল চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি শ্যামনগর ন্যাশনাল হাসপাতালের পরিচালক এম.এম গোলাম বারীর বিরুদ্ধে ভূল চিকিৎসার অভিযোগ এনে তার সমস্ত ক্ষতিপূরণ বা নগদ অর্থ দাবী করেছেন একই উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের খলিসাবুনিয়া গ্রামের মৃতঃ আমিন উদ্দীন গাজীর ছেলে মোঃ সিদ্দিক গাজী (৪০)।

ভুক্তভোগী সিদ্দিক গাজী এক ভিডিও বক্তব্যে বলেন, তিনি কয়েকমাস যাবৎ পাইলস রোগে ভূগছিলেন। অতঃপর প্রতিবেশী/গ্রামবাসীদের কাছ থেকে খবর পান, শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে নুর ফার্মেসীর ২য় তলায় পাইলস ও নাকের পলিপাস চিকিৎসালয় এই মর্মে সপ্তাহের প্রতি সোমবার সকাল ১০ টা হতে দুপুর ৩ টা পর্যন্ত রোগী দেখেন এম.এম গোলাম বারী। আমি সুস্থতার জন্য তার শরণাপন্ন হই।

তিনি আমাকে বলেন, আপনার তো পাইলস না- এনালফিশার। তখন আমি বললাম, কি করা লাগবে, তিনি বলেন- ইনজেকশন দিতে হবে। তিনি আমাকে ইনজেকশন দিলেন। পরে সেখানে পঁচন ধরে, অবস্থা আরও খারাপ হয়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। আমি তাড়াতাড়ি আদি চাঁদসী ডাঃ বিনয় কৃষ্ণের পুত্র ডাঃ সুজিত রায়ের কাছে গেলে তিনি বলেন, আপনার তো পাইলস। এর আগে যে চিকিৎসা আপনি করিয়েছিলেন তা ভূল ছিল। তাড়াতাড়ি আপনাকে অপারেশন করতে হবে। তখন আমি ঝাউডাঙ্গায় সুজিত বাবুর চেম্বারে ভর্তি হয়ে অপারেশন করার পর সুস্থ। পরে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গোলাস বারীর কাছে ভূল চিকিৎসা করিয়েছেন মর্মে টাকা ফেরত চাইলে তিনি বলেন, আমার ভূল চিকিৎসা করার অনুমতি আছে যা ইচ্ছে করেন, এইসব কথা বলে ফোন কেটে দেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত এবং কথিত হাতুড়ি চিকিৎসক এম.এম গোলাম বারীর মুঠোফোনে ভূল চিকিৎসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রতুত্তরে বলেন, আমি পাইলস এর ডাক্তার, এনালফিশার এর ট্রিটমেন্ট করিনা। সিদ্দিক গাজীর পাইলস হয়েছিল, তার প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য আমি অবশ করিয়ে কাজ শুরু করি, এজন্য ইনজেকশন দিয়েছি। তাছাড়া সিরিয়াস রোগীর গায়ে আমি হাত দেই না। রোগীর অবস্থা মারাত্মক হলে আমি অন্যত্র রেফার করি। সিদ্দিক গাজী টাকা ফেরত চাইলে তো হবে না। আমি কাজ করেছি, তার বিনিময়ে টাকা নিয়েছি।

গভীর ক্ষোভ ও কান্নাজড়িত কণ্ঠে মো: সিদ্দিক গাজী এ প্রতিবেদককে জানান, আমি গরীব মানুষ। বন-জঙ্গলে মাছ-কাঁকড়া মেরে খাই। ২০ হাজার টাকা মানে আমার কাছে অনেক। গোলাম বারী ডাক্তার আমাকে ভূল চিকিৎসা দিয়েছেন। যার ফলে আমার শরীরে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। আমি পরবর্তীতে আবার অনেক টাকা খরচ করে স্বনামধন্য এমবিবিএস ডাক্তার সুজিত রায়ের নিকট হইতে ট্রিটমেন্ট করিয়ে এখন সুস্থ আছি। যদি গোলাম বারী আমার টাকাগুলো ফেরত দিতো, তাহলে আমি নতুন করে নৌকা-জাল সারাই করে পুনরায় বন-জঙ্গলে যেয়ে আয় রোজগার করে আমার পরিবারের জন্য জীবিকা নির্বাহ করতে পারতাম। আমি জলাঞ্জলিতে যাওয়া আমার অর্থ ফেরতের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। একই সাথে এরকম ভূয়া ও হাতুড়ি চিকিৎসকরা যাতে ব্যাঙের ছাতার মতো গ্রাম-গঞ্জে চেম্বার বসিয়ে কসাইখানা তৈরি না করতে পারে এ বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন সহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর ও কর্মকর্তাদের বিশেষ সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)