যশোরে জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যেই চির বিদায় নিলো তাহমিনার ৫ সন্তান
নিউজ ডেস্ক:
তাহমিনা খাতুন। গর্ভবতী ছিলেন ২৪ সপ্তাহের। বিয়ের পর এটি তার প্রথম সন্তান ধারণ। প্রসূতি তাহমিনাকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুর ১টার দিকে তার প্রসব বেদনা উঠলে প্রসূতি ওয়ার্ডের চিকিৎসক ও সেবিকাদের সহোযোগিতায় নরমাল ডেলিভারিতে পর পর পাঁচটি সন্তানের জন্ম দেয় তাহমিনা। পাঁচটি সন্তানের মধ্যে তিনটি মেয়ে ও দুটি ছেলে সন্তান। বিয়ের সাত বছর পর তার কোলজুড়ে এসেছিল সন্তান। মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানেই শোকে পরিণত হলো সন্তান জন্মদানের আনন্দ। একে একে মারা গেল পাঁচটি সন্তানই।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার বিকেলে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে। প্রসূতি তহমিনা বেগম যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ছুটিপুর এলাকার বিষহরি গ্রামের মালায়শিয়া প্রবাসী হুমায়ন কবিরের স্ত্রী।
তহমিনার শাশুড়ি খালেদা খাতুন বলেন, তাহমিনা ২৪ সপ্তাহের গর্ভবতী ছিল। সকালে হঠাৎ ব্যাথা উঠলে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আনার পথে গাড়ির মধ্যেই একটি বাচ্চার জন্ম হয়। হাসপাতালে আনার পর বিকেলে পরপর আরো চারটি বাচ্চা প্রসব করে তহমিনা। পরে বাচ্চাগুলো ‘অপুষ্ট’ ছিল। তাদের শিশুওয়ার্ডে ভর্তি করারে এক ঘণ্টার ব্যবধানে মারা যায় সব শিশু। পরিবারে আনন্দের পরিবর্তে চলছে শোকের মাতম।
কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, তার ছেলে চারমাস আগে অর্থাৎ তহমিনার গর্ভে সন্তান আসার দুইমাস পরে বিদেশ যায়। অনেক চেষ্টার পর বিয়ের সাত বছরের মাথায় তহমিনার গর্ভে সন্তান এসেছিল। কিন্তু একে একে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলো সবাই।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র নার্স জোৎন্সা পারভেজ জানান, বাচ্চাদের সাড়ে ৩টার দিকে ভর্তি করা হয়। ভর্তির আধা ঘণ্টা পর একটি শিশু ও এর ৪৫ মিনিট পর আরো এক শিশু, দশ-পনের মিনেটের ব্যবধানে সবগুলো শিশু মারা যায়।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক জসিম উদ্দিন জানান, ২৮ সপ্তাহের পরে সন্তান ভূমিষ্ট হলে মেডিকেল সাপোর্ট দিলে শিশু বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু ওই পাঁচটি শিশু ২৪ সপ্তাহে জন্মেছিল। এ সময়ে জন্ম নেয়া শিশুর ওজন কমসহ পরিপূর্ণ স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকে না। এজন্য তাদের মেডিকেল সাপোর্ট দেওয়ার পরও বাঁচানো যায়নি।