শ্রমিকদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়াই ছিল ঠিকাদার শাহাবাজের কাজ
তালা প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটায় পল্লীবিদ্যুৎতের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত শ্রমিকদের সু্পরিকল্পিত ভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সংক্লিষ্ট ঠিকাদার শাহাবাজ আলীর বিরুদ্ধে।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের কোন সেপটি ছাড়াই খুঁটতি ওঠাতে হত শ্রমিকদের। ইতিপূর্বে তার দ্বায়িক্তহীনতার কারনে অকালে ঝরে গেছে তিনটি প্রাণ। যদিও এদায় এড়িয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া করা জানিয়েছে।
আহত আলিমের চাচাতো ভাই আব্দুল্লাহ আল -আমিন জানান, মঙ্গলবার বিকালে কলারোয়া উপজেলার জয়ননগর এলাকায় ভাই আব্দুল আলিম(৪৩) শাহাবাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক হিসাবে লাইন নির্মাণে কাজ করতে গিয়েছিল । কাজচলাকীন সময়ওইদিন বিকালে খুঁটিতে ওঠার পর বিদ্যুৎতায়িত হয় সে। ওই সময় ঘটনাস্থলে তার দুটি হাতের ৯৫ শতাংশ পুড়ে যায়।
প্রথমে তাকে সাতক্ষীরা মেডিকেলে পরবর্তীতে খুলনা গাজী মেডিকেলে নেওয়া হয়। চিকিৎসক তার অবনতি দেখে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে রেফার করে। বর্তমানে ভাই আলিমের দুটি হাত বিচ্ছিন্ন করা সে আশঙ্কাজনক অবস্তায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। তিনি আরো বলেন, সামান্য ভুলের কারনে আমার ভাইয়ের সারাজীবন পঙ্গুত্ব বরন করতে হচ্ছে।
এ দায় কে নিবে? স্থানীয়দের বরাত দিয়ে দাদপুর গ্রামের বাসিন্দা খালেদ ইমরান রিপন জানান, শাহাবাজ দীর্ঘদিন যাবৎ সাতক্ষীরা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ঠিকাদার হওয়ার সুবাদে কর্তৃপয় কর্মকর্তাদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে একের পর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে । তার দ্বায়িক্ত অবহেলার কারনে ৭বছর আগে একই প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎতায়িত হয়ে মারা যান দাদপুর গ্রামের ইবাদুল।
বছর চারেক আগে বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হন আলমীর। অবশেষে পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্যহয় সে। একই ভাবে তার পরবর্তীতে বছরে মারা যায় আরিজুর নামে একজন শ্রমিক । বর্তমানে তাদের পরিবারে শুধুই এখন আহাজারি।
নাম মাত্র ক্ষতিপুরনের লোভ দেখিয়ে দরিদ্র মানুষগুলোকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে বার বার এই হত্যাকাণ্ড থেকে রক্ষা পায় শাহাবাজ । এছাড়া সে শ্রমিকদের মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ নিজের পকেটে নিয়ে আজ কোটিপতি বনে গেছে। সবশেষে তিনি এই হত্যাযজ্ঞের নায়ক শাহাবাজ আলীকে আইনের আওয়তায় আনার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাহাবাজ আলী জানান, আমি প্রায় ২০বছর যাবত সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ঠিকিদার হিসাবে কর্মরত আছি। প্রায় মাসেই আমার জেলার বিভিন্ন স্থানে কাজ চলে। ধানদিয়া এলাকায় ট্রান্সফরমার অপসারনের কাজ চলছিল। আমি ঘটনাস্থলে না গিয়ে জাহাঙ্গীর নামে এক ফোর ম্যানকে লাইন বন্ধ জন্য নির্দেশ দিয়েছিলাম।
তারপর দুর্ঘটনার বিষয়টি শোনামাত্র আহত শ্রমিকদের সহয়তায় সাতক্ষীরা মেডিকেলে ভর্তি করাই। অবস্তায় অবনতি হলে তাকে খুলনার গাজী মেডিকেলে পরবর্তীতে রাজধানীর বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। আমার যতটুকু সাধ্য আমি তার চিকিৎসার ভার বহন করে যাচ্ছি। এ দায় কার এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি দায় এড়ানোর সুযোগ নেই বলে অপকটে স্বীকার করেন।
সাতক্ষীরা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার জিয়াউর রহমান জানান, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে বিরুদ্ধে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া লাইননির্মান করতে গিয়ে কোন শ্রমিকের যদি দূর্ঘটনা ঘটে তার দায় ভার সম্পূর্ন ঠিকাদার বহন করাবে বলে জানান তিনি।