বাংলাদেশকে হারিয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে শ্রীলংকা

স্পোর্টস ডেস্ক:

ম্যাচ শুরুর আগে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা দুই দলের কথার লড়াই বেশ জমে উঠেছিল। যেখানে মূল বিষয়বস্তু ছিল বোলিং আক্রমণ। ম্যাচে দুই দলের বোলাররাই হতাশাজনক পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে। তবে শেষ হাসি হেসেছে শ্রীলংকাই।

প্রথমে ব্যাট নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮৩ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে দুই উইকেট ও ৪ বল হাতে রেখেই লক্ষ্য স্পর্শ করে শ্রীলংকা। এর জয়ে একই সঙ্গে এশিয়া কাপের সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে তারা।

শেষ ওভারে শ্রীলংকার দরকার ছিল ৮ রান। মাহেদীর করা প্রথম বলে আসে এক রান। পরের বলে চার হাঁকান আসিথা ফার্নান্দো। পরের বলে দুই রান নেন তিনি। সেই বলটি নো করায় তখনই নিশ্চিত হয়ে যায় লংকানদের জয়।

এশিয়া কাপ ইতিহাসে এটাই রান তাড়া করে সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ড।

শ্রীলংকার হয়ে রান তাড়া করতে নামেন কুশল মেন্ডিস ও পাথুম নিশাংকা। বল হাতে দলকে দারুণ শুরু এনে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। প্রথম ওভারে মাত্র ২ রান দেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারে কুশলের সহজ ক্যাচ মিস করেন মুশফিক।

হতাশার সময় অবশ্য বেশিক্ষণ থাকেনি। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে দলকে জোড়া আঘাত হানেন এ ম্যাচে অভিষিক্ত এবাদত হোসেন। প্রথমে নিশাংকাকে মুস্তাফিজুর রহমান ও এরপর চারিথ আসালাঙ্কাকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি।

সাজঘরে ফেরার আগে নিশাংকা ২০ ও আসালাঙ্কা ১ রান করেন। ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি দানুশকা গুনাথিলাকা ও ভানুকা রাজাপাকশেও। এবাদতের তৃতীয় শিকার হওয়ার আগে গুনাথিলাকা করেন ১১ রান। এক্ষেত্রে অবিশ্বাস্য এক ক্যাচ ধরেন তাসকিন আহমেদ।

টি-২০ বিশ্বকাপে সবশেষ লড়াইয়ে বাংলাদেশকে একাই হারিয়ে দিয়েছিলেন রাজাপাকশে। তবে তাকে এদিন ২ রানের বেশি করতে দেননি তাসকিন। তার আরেকটি দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে পঞ্চম উইকেট হিসেবে আউট হন কুশল মেন্ডিস।

বলতে গেলে বাংলাদেশের জয়ে বড় বাঁধা হয়ে ছিলেন মেন্ডিস। সাজঘরে ফেরার আগে তিনি খেলেন ৬০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। টাইগারদের ষষ্ঠ উইকেট লাভেও জড়িয়ে আছে তাসকিনের নাম। এবার তিনি নিজের ফেরান ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে।

এরপরও ম্যাচে ভালোভাবেই টিকে ছিল শ্রীলংকা। দলপতি শানাকা একাই লংকানদের জয়ের বন্দরের দিকে নিচ্ছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাকে মোসাদ্দেক হোসেনের তালুবন্দী করেন মাহেদী। এর আগে ৩৩ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেলেন শানাকা।

শেষদিকে করুণারত্নে ও ফার্নান্দোর ক্যামিও ইনিংসে জয় পায় শ্রীলংকা। বাংলাদেশের হয়ে এবাদত তিনটি, তাসকিন দুটি এবং মুস্তাফিজুর রহমান ও মাহেদী হাসান একটি করে উইকেট নেন।

এর আগে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলংকা অধিনায়ক দাসুন শানাকা। বাংলাদেশের হয়ে ইনিংসে উদ্বোধনে নামেন সাব্বির রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ।

নতুন এই ওপেনিং জুটি অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা সাব্বির রহমান সাজঘরে ফেরেন। আভিষ্কা ফার্নান্দোর বলে কট বিহাইন্ড হয়ে আউট হওয়ার আগে ছয় বলে ৫ রান করেন তিনি।

সাব্বির ব্যর্থ হলেও এদিন রুদ্রমূর্তিতে ছিলেন মিরাজ। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে লংকান বোলারদের নাভিশ্বাস তোলেন তিনি। তবে অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে ছুঁড়ে দিয়ে আসেন উইকেট।

ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২৬ বলে ৩৮ রান করেন মিরাজ। তার জায়গায় নেমে সুবিধা করতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। করুণারত্নের বলে মাত্র ৪ রান করেই আউট হন তিনি।

দ্রুত দুই উইকেট হারালে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এমতাবস্থায় ২৪ রানের জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান ও আফিফ হোসেন। ২২ বলে ২৪ রান করে আউট হন সাকিব।

আফিফ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ৫৭ রানের জুটিতে বাংলাদেশ ম্যাচের লাগাম নিজেদের দিকে নিয়ে নেয়। আউট হওয়ার আগে দুজনেই সমান ২২ বল খেলেন। তবে আফিফ করেন ৩৯, রিয়াদ করেন ২৭ রান।

শেষদিকে মোসাদ্দেক হোসেনের ২৪ ও তাসকিন আহমেদের ১১ রানের ক্যামিও ইনিংসে টাইগারদের বড় সংগ্রহ অনেকটা নিশ্চিত হয়। শ্রীলংকার হয়ে হাসারাঙ্গা ও করুণারত্নে দুটি এবং মাধুশানাকা, আসিথা ও থিকসানা একটি করে উইকেট শিকার করেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)