তালায় পল্লীবিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ের জীবন ঝুঁকিতে শত শত নবজাতক
তালা প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির সাব জোনাল তালা অভিযোগ কেন্দ্রের মনগড়া লোডশেডিংয়ের অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। মধ্যরাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে বিপাকে পড়ছেন নবজাতকের পরিবার।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধির কারনে বাংলাদেশে ৬ আগষ্ট ২০২২ তারিখে রাতের আঁধারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পায়। অপর দিকে ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির মহা পরিচালক (প্রশাসন) মোঃ আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকীর স্বাক্ষরিত পত্র সংখ্যা ০৩,০০, ২৬৯০,০৮২,০৪৬,০৭৬, ২০২২,০৬ স্মারকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় বিষয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৪৪ ধারার বিধান কঠোর ভাবে প্রতিপালন করার নিমিত্তে এক প্রজ্ঞাপন জারী করেন। এবং সেখানে বলা হয়েছে বিশ্বব্যাপি জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারনে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তাহলে কি ঘোড়ার আগে গাড়ি না কি গাড়ির আগে ঘোড়া বুঝলাম না।
সুত্র মতে জানা গেছে সাতক্ষীরা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির সাব- জোনাল অফিস জেলার তালা উপজেলায় অবস্থিত। সেখানে (এজি এম ও এন্ড এম) লিটন চন্দ্র দে এবং সহ কারী জুনিয়র ইন্জিনিয়ার সাজ্জাদুর ইসলাম এর স্বাক্ষরিত ২৪ শে জুলাই তালা পল্লীবিদ্যুৎ সাব- জোনাল এর আওতায় লোডশেডিং শিডিউল/তারিখ ২৫-০৭-২০২২ ইং উল্লেখিত বিষয় নিয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেন।
২৫ জুলাই এর তারিখ দিয়ে ২৪ জুলাই স্বাক্ষরিত এমন নীতিমালা নিছক তার নিজের মন গড়া এবং জনবিরোধী।আবার ৬ আগষ্ট জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধির কারণ উদ্ভব হয় তার বহু পূর্বেই ২৪ জুলাই লোডশেডিংয়ের ঘোষনা কেমন করে হবে।এছাড়া পরবর্তী সময়ে ২৫,২৬,২৭,০৯, জুলাই এবং ৩ আগষ্ট উক্ত লোডশেডিংয়ের বিতর্কিত নীতিমালা পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করেন। কোন প্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নিজের খেয়াল খুশি মত লোডশেডিং দিয়ে যাচ্ছেন।
সকল নিয়ম কানুন উপেক্ষা করে তালা উপজেলায় চলছে নজিরবিহীন লোডশেডিং যারফলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার। তীব্র গরম, তাপমাত্রা অপরিবর্তিত রয়েছে চলমান বছরে চলছে অতিরিক্ত তাপদাহ অপরদিকে বিদ্যুৎ লোডশেডিং মাত্রাতিরিক্ত। নবজাতক ও ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাদের নিয়ে পিতা মাতা দের পড়তে হচ্ছে বিপাকে।অন্যদিকে কর্মজীবীরা সারাদিন পরিশ্রম করে রাতে একটু আরামে ঘুমানো কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষক, দিন মজুর ,শ্রমিক সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে রাতে বিশ্রাম নিতে পারছেন না।অপর দিকে বিদ্যুৎ ঘাটতির জন্য সরকার ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাত আটটার মধ্যে সমস্ত ব্যাবসায়ীদের সমস্ত দোকানপাট বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের প্রতিনিয়ত গুনতে হচ্ছে লোকসান। কর্মজীবীরা সাপ্তাহিক ও মাসিক কাঁচাবাজার করে বাসা বাড়ির ফ্রীজে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, সহ নানাবিধ খাদ্য সামগ্রী বারবার লোডশেডিংয়ের কারনে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে জানান কয়েকজন।তালায় মনগড়া লোডশেডিংয়ের ফলে জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে হাজার হাজার কোমলমতি শিশু বাচ্চাদের জীবন তালা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডাক্তার রাজিব সরদার এর তথ্য মতে অতিরিক্ত গরমে নবজাতক শিশু ও বাচ্চাদের চর্মরোগ, জ্বর, সর্দি,কাশি ও পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে এমন কি জীবন হানির সম্ভবনা রয়েছে।
এদিকে তালা সাব জোনাল অফিসের এজিএম লিটন চন্দ্র দে তার নিজের ফেসবুকে জনস্বার্থে জনসচেতনতামূলক পোষ্ট এ সাধারণ মহলেও সৃষ্টি হয়েছে নানা প্রতিক্রিয়া। তিনি একজন কর্মকর্তা হয়ে ১৩ জুলাই ২০২২ তারিখে Liton Chandar Dey নামক আইডি থেকে দেওয়া পোষ্ট হুবুহু তুলে ধরা হলো “‘ যাদের বিদ্যুৎ ছাড়া বিকল্প নেই তাদের কে নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন(সোলার)এর ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি। কেননা আমি যতটুকু বরাদ্দ পাবো তার থেকে বেশী কি করে আপনাদের দিবো”‘ একি আইডি থেকে ২৩ আগষ্ট লিখেছেন “” সারারাত লোডশেডিং থাকবে একঘন্টা বিদ্যুৎ থাকলে দুই ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকবে না। তালা অথবা সাতক্ষীরাতে কোন বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় না। যতটুকু পাই ততটুকু আপনাদের দিতে পারি। অযথা ম্যাসেজিং না করতে সবিনয়ে অনুরোধ করছি”” এটা কেমন ধরনের ঘোষনা হতে পারে , তাহলে কি তিনি এগুলো মজা করে লিখলেন না কি সাতক্ষীরা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি সকল গ্রাহকদের তাদের আগ্রাসনে জিম্মি করে রেখেছে।তামাশা শুরু করেছে মানুষের সাথে তালা উপজেলা সাব জোনাল অফিস ও সাতক্ষীরা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির তালার অভিযোগ কেন্দ্র ও সেখানে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এছাড়া একজন কর্মকর্তা হয়ে এমন বিব্রতকর পোস্ট সমিতির এজিএম এর আইডি থেকে বারবার প্রকাশ করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত তা বোধগম্য নয়।
এভাবে চলতে থাকলে সাধারণত মানুষ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির অ মানুষিক দুর্ভোগ সৃষ্টির প্রতিবাদে রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে বলে জানিয়েছেন একাধিক সাধারণ মানুষ। সাম্প্রতিককালে এই মনগড়া লোডশেডিংয়ের অতিষ্ঠ হচ্ছে না এমন লোক খুঁজে পেলাম না। শতকরা ১০০ জন লোকের অভিযোগ এই সেবা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সেবা।তালা সদরের আলতাফ হোসেন,মাগুরার পরিমল, তেঁতুলিয়ার আব্দুস সালাম, খলিল নগরের আবু মুসা, জালালপুরের রমাকান্ত, খেশরার লিটন হোসেন সহ একাধিক লোকজন এই সমিতির চরম অন্যায় অবিচার থেকে রেহাই পেতে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
সাতক্ষীরা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির তালা সাব জোনাল অফিসের এজিএম লিটন চন্দ্র দে এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান
সাতক্ষীরা তালায় বিদ্যুৎ বরাদ্দ অনুযায়ী লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। আপনাদের শিডিউল এর বাইরে লোডশেডিং কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান তালা সাতক্ষীরায় তো বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় না তাই কি করবো। আপনার ফেইসবুকে এমন পোষ্ট এর কারণ জানতে চাইলে তিনি দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন এর এলাকায় সমূহের ব্যাখা প্রদান করতে থাকেন।