বেনাপোলে আওয়ামীলীগে নেতা নুর আলম হত্যাকান্ডে তিনজন আটক

মো: সাগর হোসেন, বেনাপোল প্রতিনিধি :

প্রতিপক্ষের দায়ের কোপে গুরুতর জখম বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বেনাপোল পোর্ট থানার আমড়াখালী ওয়ার্ড এর সহ সভাপতি নুর আলম (৫৭) মারা গেছে। নুর আলম রবিবার (২৮) আগস্ট রাতে একই গ্রামের সন্ত্রাসী মাদক ব্যবসায়ী একাধিক মামলার আসামী বাবুর দায়ের কোপে মারাত্নক আহত হয়।

তার পেটের ভুড়ি বের হয়ে যায়। তাকে খুলনা ২৫০ সয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তির তিন দিন পর মঙ্গলবার রাত ১২ টার দিকে মারা যায়। এ ঘটনায় তিনজনকে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ আটক করেছে।

আটককৃতরা হলো, আমড়াখালী গ্রামের আদেব আলীর ছেলে মুক্তার হোসেন (৩৬) ও তার সহোদর মিজানুর রহমান (৩২) এবং শার্শার শ্যামলাগাছি গ্রামের আলী হোসেন (৩৪)।

অপরদিকে নুর আলম মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী বাবুর বাড়িতে অগ্নি সংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে বাবুর স্বজনেরা।

নুর আলম এর মেয়ে রানু বেগম জানান, গত ২৮ তারিখ রাতে আমড়াখালীর ইমান আলীর ছেলে ও একাধিক মাদক মামলার আসামী বাবুর নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ধরালো অস্ত্র দিয়ে আমড়াখালী মোড়ে শত শত মানুষের মাঝে কুপিয়ে পেটের ভুড়ি বের করে দেয় তার পিতা নুর আলমের। তাকে দ্রুত শার্শা ও খুলনা মেডিকেলে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ঘটনার তিন দিন পর সে খুলনা হাসপাতালে মৃত্যুবরন করে। ওই ঘটনায় বাবু তার বাহিনী দিয়ে নুর আলমসহ মোট ৭ জনকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। নুর আলম এর ভাই শাহ আলমের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাকেও খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য মরিয়ম ও রুহুল আমিন বলেন, বাবু একজন চোরাচালানী। সে মাদকসহ নানা ধরনের অবৈধ ব্যবসা করে। গ্রামের শালিশ বিচারকে কেন্দ্র করে বাবু নিজ প্রভাব বিস্তারের জন্য ইতিপূর্বে মসজিদে বসে শাহআলম ও নুরআলম এর মাথা কেটে ফুটবল খেলার ঘোষনা দেওয়ার তিন দিন পর ওই হামলা চালায়।

স্থানীয়রা জানায় বাবু একজন চোরাচালানী এবং সন্ত্রাসী। সে একজন সন্ত্রাসী ক্যাডার। তার ভয়েতে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তার নামে বেনাপোল ও শার্শা থানায় কয়েকটি মাদক মামলাও আছে। তার বাড়ি থেকে বিজিবি সদস্যরা একাধিক বার ফেনসিডিলসহ অন্যান্য মাদক দ্রব্যও উদ্ধার করেছে।

এদিকে বাবুর বোন রিজিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, হেলমেট মাথায় দিয়ে মুখে কাপড় বেধে একদল সন্ত্রাসী বুধবার সকালে নুর আলম মারা যাওয়ার অভিযোগে বাবুর বাড়ি ভাংচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তাদের বিছানাসহ অন্যান্য জিনিস পত্র পুড়ে যায়। এছাড়া তাদের বাড়িতে ২টি ককটেলও বিস্ফোরন করে ওই সন্ত্রাসীরা।

সরেজমিনে ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, নুর আলম এর বাড়ি স্বজনদের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। তার দুই কন্যা বার বার মুর্ছা যাচ্ছে। অপরদিকে বাবুর ঘরে দেখা যায় তিনটি খাটের বিছানায় আগুনে পুড়লেও কোন খাট বা পাশে থাকা চেয়ার টেবিল পুড়েনি। বিছানার সামান্য অংশ পোড়া দেখা যায়।

স্থানীয় একজন ইউপি সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বাবুর বাড়িতে কেউ আগুন দেয়নি। নিজেরা বিছানা পুড়িয়ে হত্যা কান্ড ভিন্ন খাতে নেওয়ার চক্রান্ত করছে।

বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি কামাল হোসেন ভুইয়া বলেন, ওই এলাকায় ঘটনার দিন থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজকে আটক করা হয়েছে। থানায় নুর আলম হত্যাকান্ডের বিষয়ে মামলার প্রস্তুুতি চলছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)