যশোরের বিভিন্ন সিমান্ত থেকে ৭মাসে প্রায় ২৮কোটি টাকার স্বর্ণ ও বিভিন্ন মাদক দ্রব্য জব্দ
আঃজলিল, স্টাফ রিপোর্টারঃ—
বেনাপোল, শার্শা, চৌগাছা সীমান্ত থেকে চলতি বছরের ৭ মাসে ভারতে পাচার ও ভারত থেকে পাচার হয়ে আসা ২৭ কোটি ৯৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৯২ টাকার স্বর্ণ ও বিভিন্ন মাদক দ্রব্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা। এ সময় আটক করা হয় ৫৯ জন চোরাচালানী ও পাচারকারীকে।
মামলা দায়ের হয়েছে ৩৬টি। এ সময়ে রেকর্ড পরিমান স্বর্ণ জব্দ করেছে বিজিবি। সেই সাথে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। স্বল্পসময়ে এই চোরাচালান দমন অভিযান বড় অংকের রাজস্ব আয় হয়েছে বলে বিজিবি মনে করেন।
যশোর ৪৯ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্ণেল শাহেদ মিনহাজ ছিদ্দিকী জানান, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর আমি এ ব্যাটালিয়নের দায়িত্ব নেওয়ার পর জানতে পারি সীমান্তের বিভিন্ন চোরাইপথে বড় অংকের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাচালানিরা ভারত থেকে পণ্য নিয়ে আসছে।
বিষয়টি মাথায় রেখে বিজিবি বেনাপোল, শার্শা, ও চৌগাছা সীমান্ত এলাকায় নজরদারি অব্যাহত রেখেছি। গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ৭ মাসে ভারতে পাচারের সময় ৩৩ কেজি ২৯ গ্রাম স্বর্ণ জব্দ করা হয়। যার বাজার মূল্য ২৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪৮ হাজার ৬০০ টাকা। স্বর্ণ পাচারের অভিযোগে আটক করা হয় ৯ পাচারকারীকে। মামলা হয়েছে ৫টি।
একই সময়ে জব্দ করা হয়েছে ২০ হাজার ২৮৭ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিল, ৬১২ কেজি গাঁজা, ৯শ‘ ২০ বোতল বিদেশী মদ, ১৬ বোতল দেশি মদ, ৬ হাজার ৫২০ পিস ইয়াবা ও ৬৪০ গ্রাম হেরোইন ও ২৩ হাজার ৩৭০ পিস ভায়েগ্রা এবং সেনেগ্রা ট্যাবলেট। জব্দকৃত মাদকের মূল্য ১ কোটি ৯৯ লাখ ৮৮ হাজার ৯৯২ টাকা। এ সময় আটক করা হয়েছে ৫০ জন মাদক ব্যবসায়ী ও পাচারকারীকে। মামলা দায়ের করা হয়েছে ২৮টি।
এছাড়াও একই সময়ে ৬টি অস্ত্র, ১৬ রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়।
বিজিবি‘র কমান্ডিং অফিসার লে. কর্ণেল শাহেদ মিনহাজ ছিদ্দিকী আরো জানান, দেশের অভ্যন্তরে মাদকসহ যাতে কোন ধরনের অবৈধ পণ্য প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা সর্বদা সতর্ক রয়েছে। সীমান্তের কতিপয় স্বর্ণ, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী ও পাচারকারী বিভিন্ন কৌশলে এদেশ থেকে স্বর্ণের চালান পাচার করছে এবং ভারত থেকে মাদক এবং অস্ত্র এনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে বিক্রি করছে।
এমন সংবাদের ভিত্তিতে এধরণের স্বর্ণ, মাদক, অস্ত্র ব্যবসায়ী ও পাচারকারীদের চিহ্নিত করে সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়।
যার ধারাবাহিকতায় চোরাচালানী, স্বর্ণ, অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য আটক করা সম্ভব হচ্ছে।
এ বিপুল পরিমাণ অর্জন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের সক্রিয়তার একটা বড় অর্জন। এই বিপুুল পরিমাণে মাদকদ্রব্য জব্দ ও মাদক ব্যবসায়ীদের আটকের ফলে সীমান্ত এলাকায় মাদক ব্যবসা ও চোরাচালান অনেক কম হয়েছে। চোরাচালানীরোধে সীমান্তে বিজিবি সতর্ক আছে। আগামীতে সীমান্ত এলাকায় মাদক, অস্ত্র ও স্বর্ণ চোরাচালান প্রতিরোধে বর্ডার গার্ড সদস্যরা আরো জোরালো ভূমিকা রাখবে বলে তিনি জানান।