ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিয়ের গেটের ডিজাইন নিয়ে সংঘর্ষ-পুরুষশূন্য ২ গ্রাম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিয়ের গেটের ডিজাইন নিয়ে সংঘর্ষের জেরে গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে দৌলতপুর ও সীতারামপুর গ্রাম। সংঘর্ষ চলাকালে সীতারামপুর বাজারে হামলা, ভাঙচুর, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বুধবার বিকেলে বিবদমান দুই গ্রামের ৯০০-এর বেশি মানুষকে আসামি করে পুলিশের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা করা হয়। এরপর থেকে এলাকাজুড়ে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে। গ্রেফতার এড়াতে দৌলতপুর এবং সীতারামপুর বাজারের দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। অন্য এলাকায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন গ্রামের পুরুষরা।
স্থানীয়রা জানায়, সীতারামপুর গ্রামের জিন্নাত আলীর মেয়ের বিয়ের সাজসজ্জার দায়িত্ব পান পাশের গ্রাম দৌলতপুরের সোহেল মিয়া। তবে তার করা গেটের ডিজাইন পছন্দ না হওয়ায় ডেকোরেশন কর্মী সোহেলের সঙ্গে ১৪ আগস্ট কনের দুই ভাই রাজু ও রুমানের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তারা সোহেলকে মারধর করেন। পরে মারধরের ঘটনার জেরে ১৬ আগস্ট সন্ধ্যায় দৌলতপুর ও সীতারামপুরের বাসিন্দারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ওই সময় সীতারামপুর বাজারের দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
এ সময় দুটি মোটরসাইকেলেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। খবর পেয়ে নবীনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় বুধবার নবীনগর থানার এসআই মো. ইমরান বাদী হয়ে শতাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ৮০০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। এরপর দুই গ্রামের সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ওই গ্রামের বাসিন্দা হাবিব মিয়া বলেন, দুই পরিবারের ঝগড়ার কারণে আমরা পুরো গ্রামের লোক এখন কষ্ট ভোগ করছি।
গ্রাম পুলিশ সদস্য মনিলাল জানান, দুই গ্রামের বাসিন্দাদের সংঘর্ষের জেরে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।
ইউপি চেয়ারম্যান মুফতি আমজাদ হোসেইন আশরাফী বলেন, সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। বর্তমানে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
নবীনগর থানার এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এখন এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। কোনো বিশৃঙ্খলা নেই। যারা ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখন পর্যন্ত সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলায় কনের বাবা জিন্নাত আলীকে প্রধান আসামি করে ১২৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৮০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।