ইসুবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক:

ইসুবগুলের ভুসি আমাদের সবার কাছেই পরিচিত। এর উপকারিতাও অনেক। উপকারী এই খাবার আমরা খুব বেশি গুরুত্ব দিয়ে খেতে চাই না। অথচ এটি আমাদের সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে বেশ ভালোভাবে কাজ করে। ছোট-বড় অনেক অসুখেরই সমাধান মেলে নিয়মিত ইসুবগুল খেলে। এর উপকারিতার কথা মাথায় রাখলে আপনিও নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করবেন।

ইসবগুলের পুষ্টিগুণ

ইসুবগুলে রয়েছে অনেকগুলো পুষ্টি উপাদান। সেসব উপাদান শরীরের বিভিন্ন উপকার করে থাকে। ১ টেবিল চামচ ইসবগুলে থাকে ৫৩% ক্যালোরি, ০% ফ্যাট, ১৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ১৫ গ্রাম শর্করা, ৩০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৯ মিলিগ্রাম আয়রন।

প্রতিদিন কতটুকু ইসুবগুলের ভুসি খেতে পারবেন
বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই ইসুবগুল খাওয়ার কারণে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হতে দেখা যায় না। ইসুবগুল প্রতিদিন ১ টেবিল চামচ করে ৩ বার খেতে পারবেন। তবে এটি অবশ্যই পানিতে গুলিয়ে খেতে হবে। সেইসঙ্গে সারাদিন পর্যাপ্ত পানি পানও করতে হবে। এবার তবে জেনে নিন ইসুবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা-

প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া দূর করে

প্রস্রাবের জ্বালাপোড়ার সমস্যা থাকে অনেকের। তাদের ক্ষেত্রে উপকারী একটি খাবার হলো ইসুবগুলের ভুসি। এটি নিয়মিত খেলে কমবে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়ার সমস্যা। এই সমস্যা দূর করতে আখের গুড়ের সঙ্গে ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন। এটি সকাল ও বিকালে খেতে পারেন। এভাবে এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাবেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

কোষ্ঠকাঠিন্য এক কঠিন অসুখ। কারণ এই সমস্যাকে সাধারণ মনে হলেও আসলে তা নয়। কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিলে শরীরের ভেতরের স্বাভাবিক নানা ক্রিয়া বাঁধাগ্রস্ত হয়। ফলে তার বিরূপ প্রভাব পড়ে পুরো শরীরেই। এই সমস্যার সমাধানে খেতে পারেন ইসুবগুলের ভুসি। এটি প্রথমে পাকস্থলীতে যায় এরপর ফুলে ভেতরের সব বর্জ্য বের করে দিতে সাহায্য করে। প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস হালকা গরম দুধের সঙ্গে দুই চা চামচ ইসুবগুলের ভুসি গুলিয়ে খান। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।

গ্যাস্ট্রিকের দূর করে

আমাদের দেশে বেশিরভাগেরই রয়েছে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। ভুলভাল খাদ্যাভ্যাস এর বড় কারণ। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার অন্যতম ঘরোয়া উপায় হতে পারে ইসুবগুলের ভুসি খাওয়া। এটি পাকস্থলীর ভেতরের দেয়ালে প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে। যে কারণে অ্যাসিডিটির বার্ন থেকে পাকস্থলীকে রক্ষা পায়। এটি হজম ঠিক রাখার জন্য পাকস্থলীর বিভিন্ন এসিড নিঃসরণে সাহায্য করে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য এক গ্লাস ঠান্ডা দুধে দুই চা চামচ ইসুবগুল মিশিয়ে খাবেন। এভাবে নিয়মিত খেলে গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হবে।

ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে

ডায়রিয়া প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে ইসুবগুল। এটি দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। দইয়ে থাকে প্রোবায়োটিক যা পাকস্থলীর ইনফেকশন সারাতে কাজ করে। এদিকে ইসবগুল তরল মলকে শক্ত করতে সাহায্য করে। ফলে ডায়রিয়া দ্রুতই সেরে ওঠে। ডায়রিয়া হলে দিনে দুইবার ভরা পেটে তিন টেবিল চামচ দই ও দুই চা চামচ ইসুবগুলের ভুসি মিশিয়ে খাবেন। ইসুবগুলের ভুসি খেলে তা আমাশয় থেকেও আপনাকে মুক্তি দেবে।

হার্ট ভালো রাখে

হার্ট ভালো রাখার জন্য নিয়মিত ইসুবগুলের ভুসি খাওয়ার অভ্যাস করুন। কারণ এতে থাকা খাদ্যআঁশ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ থেকে দূরে রাখে। এটি পাকস্থলীর দেয়ালে এক ধরনের পাতলা স্তর সৃষ্টি করে। যা খাদ্য হতে কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দেয়; বিশেষ করে রক্তের সিরাম কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। এছাড়াও এটি রক্তের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল সরিয়ে দিতে কাজ করে। ফলে ধমনীতে ব্লক সৃষ্টির ভয় থাকে না।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)