দুর্নীতির মামলায় প্রদীপের ২০ ও স্ত্রীর ২১ বছরের কারাদণ্ড
নিউজ ডেস্ক:
সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাশ এবং তার স্ত্রী চুমকি কারনের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতি মামলার রায়ে প্রদীপ কুমারকে ২০ বছর ও তার স্ত্রী চুমকী কারনকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাদের সম্পতি বাজেয়াপ্ত করার কথা বলা হয়েছে।
বুধবার (২৭ জুলাই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ মুন্সী আব্দুল মজিদের আদালতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
দুদকের মামলার আইনজীবী চট্টগ্রাম আদালতের পিপি মাহমুদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ২৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালতে এই রায় দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ বাদী হয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দীন।
দুদক আইন ২০০৪-এর ২৬ (২) ও ২৭ (১), মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪ (২) ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।
এরপর গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মুন্সী আব্দুল মজিদ দুর্নীতি মামলার চার্জ গঠনের মাধ্যমে প্রদীপ এবং তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিলেন।
এর আগে গত বছরের ২৬ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন। প্রদীপ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকলেও চলতি বছরের ২৩ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন প্রদীপের স্ত্রী চুমকি। পরে আদালত শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠান।
জানা গেছে, চুমকির ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকা। বাকি সম্পদ অর্থাৎ ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জনের প্রমাণ পেয়েছে দুদক।
চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরে একটি বাড়ি, ৪৫ ভরি স্বর্ণ, একটি কার ও মাইক্রোবাস, কক্সবাজারের একটি ফ্ল্যাটের মালিক প্রদীপের স্ত্রী চুমকি। প্রদীপের ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থে স্ত্রী চুমকি এসব সম্পদ অর্জন করেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে উঠে এসেছে। এছাড়া চুমকি নিজেকে মাছ ব্যবসায়ী দাবি করলেও তার কোনো প্রমাণ পায়নি দুদক।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর মেরিনড্রাইভ চেক পোস্টে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় একই বছরের ৬ আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন ওসি প্রদীপ। সিনহা হত্যা মামলায় প্রদীপকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।