শত বছরের দখলীয় রেকর্ডীয় সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল চেষ্টার প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় সংবাদসম্মেলন
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
সাতক্ষীরায় সংখ্যালঘুর দোহায় দিয়ে আইন ও
আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রায় শত বছরের দখলীয় রেকর্ডীয় সম্পত্তি
অবৈধভাবে দখল চেষ্টায় ষড়যন্ত্র মূলক হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব
মিলনায়তনে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন, আশাশুনি উপজেলার
গুনাকরকাটি গ্রামের মৃত মোসেল উদ্দীন সানার পুত্র জিয়াউর রহমান।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, সাতক্ষীরার হাবাসপুর মৌজায় খতিয়ান নং
এসএ ২১, হাল ১৯৫, ১৭, দাগ নং- ৩১২, ৩১৪, ৩১৩ জমির পরিমান ৫১ শতকের
মধ্যে ৪৫ শতক সম্পত্তি আমার মাতা মোছা: জবেদা খাতুনের পৈত্রিক
সম্পত্তি। যার পরবর্তীতে ওয়ারেশ হিসেবে আমিসহ আমার ভাই বোন এবং
মাতা উক্ত সম্পত্তি ভোগদখল করে আসছি। হাবাসপুর গ্রামের এখলাছুর
রহমান বকুল, মহাদেব কুমার ঘোষ, আকরাম হোসেন, সিরাজ সরদার ও অরবিন্দু
ঘোষ গং উক্ত সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলের চক্রান্ত শুরু করে। সম্পত্তির কিছু অংশ
ভ্রমাত্মকভাবে অরবিন্দুসহ কয়েকজনের নামে রেকর্ড হয়ে যায়। যদিও আমরা
রেকর্ড সংশোধনের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করেছি। কিন্তু ওই ভ্রমাত্মক
রেকর্ডকে পুজি করে উল্লেখিত ব্যক্তিরা আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি দখলে মরিয়া
হয়ে ওঠেছে। উক্ত সম্পত্তি আমাদের দখলে থাকলেও তা দখল করতে সংখ্যালঘু
পরিচয়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে বিভিন্ন দপ্তরে আমাদের বিরুদ্ধে
মিথ্যা, ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করে হয়রানি করে যাচ্ছে। এমনকি পত্র-
পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে আমাদের সামাজিকভাবে হেয়
প্রতিপন্ন করে যাচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে গত ৮জুন অরবিন্দু ঘোষ প্রেসক্লাবে
হাজির হয়ে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে ভিত্তিহীন একটি সংবাদ সম্মেলন
করে। এছাড়া এর আগে তার ভাই জগবন্ধুও একই তথ্য দিয়ে ভিত্তিহীন
অভিযোগ করে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন। আমরা এর তীব্র নিন্দা
জানাচ্ছি। তারা দাবি করেছে, ১৯৩৩/৩৪ সালে তারা বাংলাদেশ সরকারের কাছ
থেকে নিলামে উক্ত সম্পত্তি ক্রয় করেছিল। অথচ ১৯৭১ সালে স্বাধীন হওয়ার পরই
বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে। তাহলে তারা কিভাবে বাংলাদেশ সরকারের কাছ
থেকে নিলামে খরিদ করলেন। এছাড়া আংশিক নিলামের কথা বলা হয়েছে।
নিলাম কখনো আংশিক হয় না এবং ১৯৩৩/৩৪ সালে নিলাম বয়নামায় বাংলায়
লেখা হত না। তাদের উপস্থাপিত দলিল বাংলায় লেখা এবং ১৭. ৫৯ শতক সম্পত্তি
দাবি করলেও তাদের দলিল, ভলিউম বইয়ে ১৭.৫৬ শতক সম্পত্তি। তাহলে কিভাবে
তারা ৫৯ শতক সম্পত্তি দাবি করছেন। তাদের উপস্থাপিত নিলাম বয়নামায়
দলিলে কোন সরকারি বড় সিল মোহর কিছুই নাই। এছাড়া তাদের নিলাম
সার্টিফিকেটের কোন তথ্য হুদিস পাওয়া যায়নি। কোবলা দলিলের সাথে
ভোলমের সাথে মিল নাই। দলিলের সার্টিফাইট কপিতে গ্রহিতার পিতার নাম উল্লেখ করা হয়নি। এস এ রেকর্ডের মালিক শ্রী সতিন্দ্রনাথ ঘোষ ও
শ্রী পঞ্চানন ঘোষ, এই দুই ব্যক্তির কোনজন্ম পরিচয় বা এদের কোন ওয়ারেশ
কায়েম সনদ পত্র পাওয়া যায়নি। সুতরাং তাদের দলিল জ¦াল বলে আমরা মনে করি।
এছাড়া অরবিন্দু ঘোষগং একটি সোলেনামা দাখিল করেছে। গত ০৯
সেপ্টেম্বর ৬৯ তারিখের ৯৫/৬৯ নং সোলে নামা যার বাদী কালীপদ ঘোষ, বনাম
বিবাদী খগেন্দ্র নাথ ঘোষ এর মধ্যে সোলে সুত্রে ১৯/১২/৬৯ তারিখে
নিস্পত্তি করে কালীপদ ঘোষ ফাইনালী ডিগ্রি পেয়েছেন বলে উক্ত বিষয়
বর্ণনা করেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এইসোলে নামা জাল। ১৭ জুলাই ১৯৩৫
তারিখের ১৬৬৯নং কোবলা দলিলের গ্রহিতা জোতিন্দ্র নাথ ঘোষ এবং এস এ
রেকর্ডের মালিক সতীন্দ্র নাথ ঘোষ। এর কোন বুনিয়াদ বা দলিলাদি খুজে
পাওয়া যায়নি। অথচ আমাদের সকল কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও সংখ্যালঘুর
দোহায় দিয়ে আমাদের সম্পত্তি দখল করতে চান তারা। এবিষয়ে স্থানীয়
ইউনিয়ন পরিষদে দুইবার বসাবসি হলেও তারা শালিস মানেনি। আদালতের
নিষেধাজ্ঞা থাকারও পর তারা চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। গত ৪জুন ২২তারিখে
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ উক্ত সম্পত্তি পরিদর্শন করে
নিষেধাজ্ঞাদেশ জারি করেন। অথচ আমার নেতৃত্বে তাদের উপর হামলা করার
মিথ্যা কল্পকাহিনী সাজিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। আমি একটি বেসরকারি
কোম্পানিতে চাকুরি করে জীবিকা নির্বাহ করি। আমার বিরুদ্ধে
ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি করাসহ প্রকাশ্যে খুন জখমসহ
বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি
এ সময় সংখ্যালঘু পরিচয় দিয়ে তার পৈত্রিক সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল
চেষ্টাকারী অরবিন্দু গং এর ষড়যন্ত্রের হাত রক্ষা পেতে সাতক্ষীরা পুলিশ
সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।