১৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবদাহের মুখে জাপান
জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত দেশটির জনজীবন। এ অবস্থায় বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। যে কোনো সময়ে বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে দেশটির সরকার। তাই জাপানিদের বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাপানে গত এক সপ্তাহে ভয়াবহ দাবদাহের মধ্যে হিটস্ট্রোকের সংখ্যা বেড়ে গেছে। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে প্রচুর মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
এ অবস্থায় হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে নাগরিকদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে সরকার। আগামী আরও কয়েক দিন এ অবস্থা বিরাজ করবে বলে সতর্ক করেছে জাপানের আবহাওয়া অফিস। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন ঘন ঘন দাবদাহ হচ্ছে। সেই সঙ্গে দাবদাহের তীব্রতা এবং স্থায়িত্ব উভয়ই বাড়ছে।
প্রাক-শিল্পযুগের তুলনায় বিশ্বের গড় তাপমাত্রা এরই মধ্যে ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে। বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ কমানোর উদ্যোগ না নিলে এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।
বুধবার টানা পঞ্চম দিনের মতো জাপানের রাজধানী টোকিওর তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়। ১৮৭৫ সাল থেকে জাপান তাপমাত্রার রেকর্ড রাখে। সেই সময় থেকে এই চলতি জুন মাসেই দেশটিতে এত বেশি তাপমাত্রার রেকর্ড তৈরি হলো।
টোকিওর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইসিসাকিতে তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এটি জুন মাসে জাপানে রেকর্ড হওয়া সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা।
তাপমাত্রা বৃদ্ধি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে হাতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের তথ্যানুযায়ী, জুন মাস জাপানে সাধারণত বর্ষাকাল। তবে জাপানের আবহাওয়া অধিদফতর (জেএমএ) টোকিও এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য গত সোমবারই এ মৌসুমের শেষ ঘোষণা করেছে। স্বাভাবিক সময়ের ২২ দিন আগেই এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আর এতে ১৯৫১ সালের পর সবচেয়ে আগে বর্ষা বিদায় নিল।
তীব্র গরমে হিটস্ট্রোকে আক্রান্তের ঘটনা বাড়ছে। বিশেষ করে বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছেন। জরুরি সেবা বিভাগ জানিয়েছে, বুধবার অন্তত ৭৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার স্থানীয় কর্মকর্তারা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের আহ্বান জানিয়েছেন।