তালায় জনস্বাস্থ্যের ওয়াস ব্লক প্রকল্পে অনিয়ম ও অর্থ লুটপাটের অভিযোগ
ফারুক সাগর (তালা প্রতিনিধি):
কাজের প্রথমেই অনিয়ম এবং দূনীতির মধ্যেই চলছে জনস্বাস্থ্য পাবলিক হেল্থের ওয়াস ব্লক প্রকল্পের কাজ। অনুসন্ধানে জানা যায় প্রকল্পে মাথা পিছু ব্যয় ১৬ লক্ষ টাকা ধরা হলেও প্রকৃত অর্থে ব্যয় করা হচ্ছে ৭-৮লক্ষ টাকা। তালা সদরের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মফিজুর রহমান তালা উপজেলায় যোগদানের পর অফিস অনিয়ম দূর্নীতির আখড়াখানায় পরিনত করেছেন। দীর্ঘদিন যাবৎ অফিসের বিভিন্ন প্রকল্পে লুটপাট অর্থ আত্মসাৎ সহ অনিয়মিত অফিসে আসার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি রেন ওয়াটার হার বেষ্টিং এবং গভীর নলকূপ প্রকল্পে ঠিকদারের সাথে যোগসাজশে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের অর্থ। গভীর নলকূপের প্রকল্পে সরকারী খরচ ৭০০০টাকা হলেও কৌশালে গ্রহককে খরচ করানো হচ্ছে ১৫-২০হাজার টাকা।
সরজমিনে দেখা যায়, তালা উপজেলার মাঝিয়াড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক শক্তি সাধন দত্ত জানান,প্রথমে প্রকল্প নির্মানের কিছু নিম্ন মানের সামগ্রী ছিল। এরপরে বিষয়টি থানা প্রকৌশলীকে জানালে তিনি পরিবর্তন করে দিয়ে ছিলেন।তবে দরজায় জানালায় নিম্নমানের টিনের পাত ও নিম্ন শ্রেনীর লোহা দিয়ে গেট তৈরি করে ব্যবহার করা হয়েছে। বিষয়টি পুনরায় প্রকল্প কর্মকর্তা মফিজুর রহমানকে জানিয়েছি তিনি এখনও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।মঙ্গলানন্দকাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খান জহরুল ইসলাম জানান, ওয়াস ব্লকের শুরুতেই অনিয়মের বিষয়টি আমি আমার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। এক পর্যায়ে থানা ইঞ্জিনিয়ার পরিদর্শনে এসে নামে মাত্র তদন্ত করে চলে যান। এছাড়া বাথরুমে দরজা নিম্নমানের টিন সেট এবং নিম্ন মানের টায়ইলস ব্যবহার করা হচ্ছে। মাঝিয়াড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শংকর প্রসাদ নাথ জানান, ওয়াস ব্লক প্রকল্পে কিছুটা অনিয়ম মধ্যে শুরু হয়েছি। বিষয়টি সাথে সাথে আমি প্রকল্পের ইজ্ঞিনিয়ারকে জানিয়েছি।কিন্তু তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি। বাগমারা সরাকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দীন আহম্মদ জানান, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ওয়াস ব্লক প্রকল্পের কাজ করা হয়েছে। বিষয়টি আমি বহুবার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীকে জানিয়েছি তিনি কোন কথায় কর্নপাত করেননি। নাম প্রকাশে অনিইচ্ছুক মুড়াকুলিয়া সরাকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, কোন প্রকার মাটি পরীক্ষা ছাড়াই প্রকল্পের কাজ শুরু করেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর ঠিকাদার। এছাড়া ব্লিল্ডিং নিম্নমানের ইট রড় ছাড়াও গেট এবং দরজায় নিম্নমানের সীট ব্যবহার হয়েছে। তাকে বারবার জানালেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি। নাম না জানানোর শর্তে প্রকল্পের সাবেক এক ঠিকাদার কর্মী জানান, প্রকৌশলী মফিজুর রহমান অর্থ লুটপাটের জন্য নিজের পরিচিত ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ করান সব সময় । বর্তমানে চলমান প্রকল্পে যিনি মাটি পরীক্ষা করেছেন তিনি ঠিকাদার যার কারনে প্রকল্পে এত দূনীতি করতে পেরেছেন। এছাড়া তালা এলাকায় যতটি প্রকল্পের কাজ হয়েছে সবখানেই রয়েছে শুভাঙ্করের ফাঁকি। যা সরজমিনে অনুসন্ধান করলে সত্যতা মিলবে।
এবিষয়ে প্রকল্পের সংক্লিষ্ট ঠিকাদার কর্মী সাইফুল ইসলাম জানান, প্রকল্পে তেমন কোন অনিয়ম হয়নি। তবে কিছু জায়গায় গেট এবং দরজাটা নরমাল হয়েছে এগুলো ঠিক করে দেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত ওই প্রকৌশলী মফিজুর রহমান জানান, প্রকল্পে যদি কোন অনিময় হয় সেটি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া যদি কারোর অভিযোগ থাকে সেটি আমাকে জানালে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ।
তালা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Please follow and like us: