বোরকা পরে শ্বশুরবাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই কুপিয়েছে মুরগি বিক্রেতা
নিউজ ডেস্ক:
মিন্টু-মনিরার সংসার প্রায় আট বছরের। ছেলে-মেয়ে নিয়ে ভালোই কাটছিল তাদের দিন। সাত-আটদিন আগে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন মনিরার ভাই। কিন্তু শ্যালকের বিয়েতে দাওয়াত পাননি মিন্টু। আর এ নিয়েই দানা বাধে ক্ষোভ। কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না নিজের ক্ষোভ। তাই রাতের আঁধারে বোরকা পরে স্ত্রী-শাশুড়িসহ একে একে তিনজনকে কুপিয়ে হত্যা করেন পাষণ্ড জামাই। তাদের বাঁচাতে এসে রক্তাক্ত হন আরো তিনজন।
ঘটনাটি শেরপুরের শ্রীবরদীর। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের পটল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘাতক ৪০ বছর বয়সী মিন্টু মিয়া শ্রীবরদীর গেরামারা গ্রামের হাইমুদ্দিনের ছেলে। পেশায় তিনি হাঁস-মুরগি বিক্রেতা।
নিহতরা হলেন- পটল গ্রামের মনু মিয়ার স্ত্রী ৫০ বছর বয়সী শেফালী বেগম, তার মেয়ে ৩৫ বছরের মনিরা বেগম ও মনিরার চাচা ৬৫ বছরের মাহমুদ। তাদের বাঁচাতে গিয়ে আহত হন মনু মিয়া, তার ছেলে শাহাদত হোসেন ও নিহত মাহমুদের স্ত্রী ছাহেরা বেগম।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় আট বছর আগে মিন্টুর সঙ্গে মনিরার বিয়ে হয়। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। সাত-আটদিন আগে মনিরার ভাই শাহাদতের বিয়ে হয়। ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে মেয়ের জামাইকে দাওয়াত করেননি মনু মিয়া। এ নিয়ে ভীষণ রেগে যান মিন্টু। রাগে-ক্ষোভে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বোরকা পরে ধারাল দা নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ঢোকেন তিনি। বাড়িতে ঢুকেই শাশুড়িকে কোপাতে থাকেন। তার চিৎকারে এগিয়ে এলে মনিরাকেও কোপান। এরপর মনিরার চাচা মাহমুদকেও আক্রমণ করেন তিনি। এমন আকস্মিক ঘটনায় হতভম্ব হয়ে পড়েন বাড়ির লোকজন। তারা মিন্টুকে বাধা দিতে এলে তাদের ওপর হামলা করে পালিয়ে যান তিনি।
তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে সবাইকে উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। বাকিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও মনু মিয়ার ছোট মেয়ে দিনারা বেগম জানান, দুলাভাই প্রথমে আমার আম্মাকে কোপ দেন। আব্বা এগিয়ে এলে তাকেও কোপান। এরপর মনিরাকে মেরে চাচাকে কোপাতে শুরু করেন।
শ্রীবরদী থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, তিনজনের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। জামালপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে মরদেহ তিনটির ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
তিনি আরো বলেন, মিন্টু মিয়াই এমন নৃশংস হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাকে ধরতে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছে পুলিশ।