৬০ ঘণ্টায়ও নেভেনি বিএম ডিপোর আগুন
নিউজ ডেস্ক:
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন ৬০ ঘণ্টা পেরোলেও এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এখনো বেশ কয়েকটি কনটেইনারে আগুন জ্বলছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, নিখোঁজদের বিষয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের পর অভিযান চলবে। তবে সেখানে মরদেহ পাওয়া যাবে কি-না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
মঙ্গলবার সকালের দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, ফায়ার সার্ভিসের ৫টি বড় ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। নিরাপদ স্থানে চারটি কেমিক্যালযুক্ত কনটেইনার সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে সেই কনটেইনারগুলো সরিয়ে নিলেও ফায়ার সার্ভিস বলছে সেগুলো পরবর্তীতে বিস্ফোরণের আশঙ্কা রয়েছে। মূল আগুন নিয়ন্ত্রণের পরে কেমিক্যালযুক্ত এ কনটেইনার নিয়ে কাজ করবে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ ইউনিট।
এ বিষয়ে বৃহত্তর কুমিল্লা ফায়ার স্টেশনের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, টানা ৫০ ঘণ্টা আমরা কাজ করে চলেছি। এখন যে কনটেইনারগুলো জ্বলছে সেগুলোতে গার্মেন্টসপণ্য রয়েছে বলে নিভছে না। এ কারণে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, তবে আশা করছি আজকের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণ আসবে। আগুন নিভে গেলে সেখানে সরাসরি প্রবেশ করে উদ্ধার অভিযান চালানো হবে। সেখানে যদি কোনো মরদেহ থেকে থাকে তা উদ্ধার করা হবে।
গত শনিবার রাত ৮টার দিকে ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতর আগুন লাগে। খবর পেয়ে কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে একটি কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক থেকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের সময় ঘটনাস্থল থেকে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দে আশপাশের অনেক বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ার খবরও পাওয়া যায়।
বিস্ফোরণ ও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এছাড়া দগ্ধ ও আহত হয়ে চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন শতাধিক।
চিকিৎসকরা বলছেন, আগুনে দগ্ধদের বেশিরভাগের চোখ ও শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাসপাতালের ৩৬ নম্বর বার্ন ইউনিট ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন অর্ধশতাধিক। বার্ন ইউনিটে আসন সংকটের কারণে ৩১ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা চলছে। আহতদের মধ্যে থেকে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা।
এদিকে নিহতদের মধ্যে ২১ জনের পরিচয় শনাক্ত করতে ৩৭ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সোমবার দিনভর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে স্থাপিত বুথে এসব নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ। এ সময় বুথের সামনে ভিড় জমান নিখোঁজদের স্বজনরা।