কৈখালীতে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগে লাখ টাকা হাতিয়েছেন নুরনগরের প্রতারক সোনা ওরফে আফসার

 শ্যামনগর ব্যুরো:
শ্যামনগরের কৈখালী ইউনিয়নে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগে লাখ টাকা হাতিয়েছেন নুরনগরের প্রতারক সোনা ওরফে আফসার। গ্রহকদের অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে যে, কৈখালী ইউনিয়নের জয়াখালি গ্রামের গফুর গাজীর ছেলে খোকন ও নুরনগর ইউনিয়নের আফসার হোসেন (সোনা) বিদ্যুতের নতুন সংযোগ দেওয়ার নামে জয়াখালি গ্রামের সহজ সরল মানুষকে ঠকিয়ে অফিসে দেওয়ার নাম করে গ্রাহক প্রতি ২৫শ/৩ হাজার করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

সরজমিনে এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানাগেছে বছর খানেক অপেক্ষার পর কিছুদিন পূর্বে বিদ্যুতের সংযোগ দিলেও নির্ধারিত টাকা দেওয়ার পরও আবার তাদের বাড়তি টাকা দিয়ে মিটার নিতে হয়েছে । বাড়তি টাকা না দেওয়ায় মিটার দেওয়া হবে না বলে মিটার ফিরিয়ে নিয়ে গেছে বলেও জানাগেছে। যে বাড়তি টাকা দিয়েছে তার মিটার লাগানো হয়েছে।

যে কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে । জায়াখালি গ্রামের মৃত বাবর গাজীর পুত্র শহীদ বলেন, আমার কাছ থেকে ২৪ শ টাকা নিয়েছে মিটার দেওয়ার কথা বলে। পরে আবার অনলাইন করতে হবে আগের অনলাইন নষ্ট হয়ে গেছে মর্মে ৫শ টাকা নিয়েছে খোকন আর সোনা। মিটার লাগিয়ে যাওয়ার দিন আরও ২শ টাকা দিতে হয়েছে বলে জানান গ্রহকরা।

মৃত শহর আলীর পুত্র ওহিদুল বলেন, আমি ২২শ টাকা দিয়েছিলাম সবার মিটার লাগিয়ে দিয়েছে কিন্তু আমার মিটারটা লাগাইনি। আমার কাছে আবার খোকন ৭শ এবং সোনা ১ হাজার টাকা চেয়েছেন। আমি গরিব মানুষ কোথায় পাবো এতো টাকা? খোকনের সাথে আমার ২ হাজার টাকা চুক্তি হয়। সে সব কিছুই করে দিবে, কোন ঝামেলা হবে না।

কিন্তু এখন টাকা চাইলে আবার কোথা থেকে দেবো আমি? এর আগের ২ হাজার টাকা দেয়ার সময় ১৫শ টাকা আমার চাচা শ্বশুর রুহুল আমিন মাওলানার কাছ থেকে ধার করে দিয়েছিলাম। এই কথা বলায় আমার মিটার লাগিয়ে না দিয়ে মিটার নিয়ে চলে যায়।
ছফর উদ্দিন শেখের পুত্র আব্দুর সাত্তার (বাবু) শেখ, বলেন, মিটার নিতে আমার কাছ থেকে প্রথম ২ হাজার টাকা নিয়েছে। পরে অনলাইন করতে আবার ৫শ টাকা নিয়েছে মিটার লাগিয়ে দিয়ে ২শ টাকা নিয়েছে ।

হান্নান গাজীর পুত্র আফসার উদ্দিন বলেন, আমি মিটার নিতে ২৪শ টাকা দিয়েছি মিটার লাগিয়ে দেওয়ার পর ২শ টাকা দিতে হয়েছে।
এদিকে এলাকা ঘুরে জানাগেছে যে, এমন অসংখ্য গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করেছে এই দুই প্রতারক খোকন ও আফসার হোসেন (সোনা)। দুই প্রতারকের বিদ্যুতের নতুন সংযোগ দেওয়ার নাম করে টাকা আত্মসাতের ভিডিও মন্তব্য স্থানীয় প্রতিনিধির কাছে সংরক্ষিত রয়েছে ।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম বলেন, এলাকাবাসী অনেকে আমাকে বলেছেন। এদের কিছু বলা যায় না। এরা খোলস পরিবর্তন করে বিভিন্ন নেতাদের ছত্রছায়ায় এ ধরনের অপকর্ম করে আসছে। আমি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এদের দুর্নীতির প্রতিকার চাই। যাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এসব দালাল চক্র এ ধরনের কার্যকলাপ করতে সাহস না পায়।

বিষয়টি নিয়ে নুরনগর ইউনিয়নের আফসার হোসেন সোনা বলেন, পল্লীবিদ্যুতের নিচু থেকে সকল কর্মকর্তাকে খরচ দিয়ে মিটার পাশ করতে হয়। এটা সবাই জানেন। শুধু আপনি জানেন না। আমি তো আর পেটে খাইনি! আপনার যেটা মনে হয় সেটা করেন। আপনার মত কত রির্পোটার দেখেছি!
সহযোগী খোকন বলেন, সংযোগ নেওয়ার জন্য আমাকে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে। সেখানে একটা খরচের বিষয় আছে। আর একটা বিষয় ঠিকাদার এবং ফোরম্যান, (নাজমুল)কে কিছু খরচখরচা দিতে হয়েছে দ্রæত কাজ করে নেয়ুার জন্য।

তবে পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার বলেন, ইসলামিক দৃষ্টিকোণ দিয়ে যারা টাকা দিয়েছে তারাও দোষী এবং যারা নিয়েছে এরাও প্রকৃত দোষী। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে কোন দালাল নেই। যারা এমন কাজ করছে এদেরকে আপনারা পুলিশের কাছে ধরিয়ে করে দিন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)