মোটরযানে যত ধরনের ব্রেক থাকে

অনলাইন ডেস্ক :

যে কোনো চলমান মোটরযানের গতির লাগাম টানতে ব্যবহৃত হয় ব্রেক। এটি মূলত একটি সেফটি ফিচার যা একটি চলমান সিস্টেম থেকে শক্তি শোষণ করে এবং গতিকে বাধা দেয়। হুইল বা এক্সেলের গতি হ্রাস করার জন্য ব্যবহৃত হয়। গাড়ি, সাইকেল কিংবা মোটরসাইকেল-সব ধরনের যানবাহনে ব্রেক রয়েছে। এই ব্রেকের রয়েছে রকমফের। আজকের আয়োজনে বিভিন্ন প্রকার ব্রেকিং নিয়ে লিখেছেন- সাইফ আহমাদ

ডিস্ক ব্রেক

গতিশীল চাকার গতি কমাতে বহুদিন আগে থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে ডিস্ক ব্রেক। এ ধরনের ব্রেক সিস্টেমে ব্রেক ক্যালিপার এবং ব্রেক রোটর থাকে। রোটরটি হুইল হাবের মাধ্যমে চাকার সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং চাকার সঙ্গেই ঘুরতে থাকে। ব্রেক ক্যালিপারটি রোটরের উপর থাকে এবং এটি স্টেশনারি পার্ট। ব্রেক প্যাডেল এ চাপ দিলে ফোর্স ব্রেক ক্যালিপারের প্যাডের মাধ্যমে রোটরকে দুই দিক থেকে চেপে ধরে। আর এর ফলে জেনারেট হওয়া ঘর্ষণের মাধ্যমে ব্রেকিং সম্পন্ন হয়। এ ঘর্ষণের ফলে ব্রেক রোটরে অনেক তাপ উৎপন্ন হয়। মিডরেঞ্জ থেকে প্রিমিয়াম সেগমেন্টের প্রায় সব গাড়ির চাকায় এ ধরনের ব্রেক ব্যবহার হয়।

ড্রাম ব্রেক

ড্রাম ব্রেকে চাকার মধ্যে ড্রাম শেপের একটি অংশ থাকে। এই ধরনের ব্রেক সিস্টেমে একটি ড্রাম হাবের মাধ্যমে চাকার সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং ঘুরতে থাকে। ড্রামের ভিতর ব্রেক পিস্টন এবং ব্রেক শু থাকে। ব্রেক প্যাডেলে চাপ দিলে প্রেশার পিস্টনে ট্রান্সমিট হয় এবং তার ফলে ব্রেক শু ২টি ড্রাম-এর দিকে সরে যায়। আর ড্রাম-এর সঙ্গে ঘর্ষণের ফলে গতিশক্তি তাপশক্তিতে রূপান্তরিত হয় এবং এর ফলে ব্রেকিং সম্পন্ন হয়। ড্রাম ব্রেকের মাধ্যমে ডিস্ক ব্রেকের তুলনায় কম ব্রেক ফোর্স জেনারেট করা যায়। এজন্য এই ব্রেক সাধারণত যানবাহনের পিছনের চাকায় সাপোর্ট ব্রেক হিসাবে ব্যবহার করা হয়। তুলনামূলক কম দামের গাড়িতে এই ব্রেকিং প্রযুক্তি ব্যবহার হয়।

ইমার্জেন্সি ব্রেক

এই ব্রেক বিপদের সময় ব্যবহার হয়। ড্রাম ব্রেক অথবা ডিস্ক ব্রেকের সঙ্গে কোনো রকম সম্পর্ক ছাড়াই এই ব্রেক সিস্টেম কাজ করে। একাধিক ধরনের ইমার্জেন্সি ব্রেক ব্যবহার হয় গাড়িতে। কিছু গাড়িতে ইমার্জেন্সি ব্রেকের জন্য একটি তৃতীয় প্যাডেল ব্যবহার হয়। অনেক ক্ষেত্রে স্টিয়ারিং হুইলের পাশে থাকে ইমার্জেন্সি ব্রেক লিভার। চাকায় চাপ সৃষ্টি করে গতি কমায় প্রায় সব ধরনের ইমার্জেন্সি ব্রেক। ড্রাম অথবা ডিস্ক ব্রেক কাজ করা বন্ধ করলে এই ব্রেক ব্যবহার হয়। এ ছাড়াও গাড়ি পার্ক করার সময়ও এই ব্রেক ব্যবহার করেন অনেকে।

অ্যান্টি-লক ব্রেক

অ্যান্টি-লক ব্রেকিং সিস্টেম (এবিএস) সব আধুনিক গাড়িতে একটি মান সুরক্ষা বৈশিষ্ট্য হিসাবে আসে। অভিজ্ঞ চালক হলেও কখনো কখনো অপ্রত্যাশিত সমস্যা আসতে পারে। সামনের রাস্তায় আসন্ন সংঘর্ষ বা বিপদ এড়াতে গিয়ে ব্রেকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন চালক। এ বিপদ এড়াতে অ্যান্টি-লক ব্রেকিং সিস্টেম (এবিএস) এটি চাকাগুলো লকআপ করা থেকে বাধা দেয়। এটি অ্যান্টি-স্কিড ব্রেকিং সিস্টেম হিসাবে পরিচিত। অ্যান্টি-লক ব্রেকিং সিস্টেমগুলো গাড়ি এবং মোটরসাইকেলের চাকার লকআপ রোধ করতে এবং ব্রেকিংয়ের সময় স্টিয়ারিং নিয়ন্ত্রণ উন্নত করতে সহায়তা করে।

আজকাল প্রায় সব গাড়িতেই থাকে অ্যান্টি-লক ব্রেক সিস্টেম। এবিএস থাকলে চাকা লক হয়ে যায় না ফলে গাড়ি পিছলে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচায়। বর্ষার সময় এই ফিচার সুরক্ষিত ড্রাইভিংয়ে সাহায্য করে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)