কাশিমাড়ীতে সরকারি কৃষিজমিতে এবার রাতের আধারে লোনা পানি উত্তোলন করে অবৈধ দখল
শ্যামনগর প্রতিনিধি:
শ্যামনগরের কাশিমাড়ীতে ৭২ বছরের ভোগদখলীয় ডিক্রি প্রাপ্ত কৃষিজমিতে এবার রাতের আধারে লোনা পানি উত্তোলন করে অবৈধভাবে জবরদখলের অভিযোগে উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (৩১মে) রাতে উপজেলার কাশিমাড়ী পল্লীর গাঙআটি গ্রামে।
জমির মালিক ভুক্তোভোগী মিজানুর রহমান জানান, দীর্ঘ ৭২ বছর ধরে কাশিমাড়ী মৌজায় জেএল নং ১০৩, খতিয়ান নং ১৪২৯, ২৬৭ দাগের মধ্যে ২ একর ৬২ শতক (৮বিঘা প্রায়) কৃষি জমি তিনি সহ তার অন্যান্য আত্মীয়রা সরকারি নিয়মমাফিক ভোগদখল করে আসতেছে। তারই প্রতিপক্ষ স্থানীয় ভুমিদস্য আব্দুস সবুর মোল্যা, এন্তেখাব মিল্টন, আফাজ উদ্দীন, আশরাফ হোসেন মিন্টু ও কামরুল ইসলাম মাটিকাটা স্কেভেটর মেশিন (ভেকু) দিয়ে উক্ত কৃষিজমিতে ঘেরের বেড়িবাধ দিয়ে অবৈধভাবে জবরদখল করে নেয়। এরপরও সেই কৃষি জমিতে লবন পানি উত্তোলন করে মৎস্য চাষের জন্য নিজেদের দখলে নিয়েছে।
এ ঘটনায় জমির মালিক ভুক্তোভোগী মিজানুর রহমান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এর আগে স্থানীয় ভুমিদস্য আব্দুস সবুর মোল্যা, এন্তেখাব মিল্টন, আফাজ উদ্দীন, আশরাফ হোসেন মিন্টু ও কামরুল ইসলাম উক্ত জমি নিজেদের দখলে নেওয়ার লক্ষে ভেকু দিয়ে ঘেরের বেড়িবাধ তৈরি করতে থাকে। এ ঘটনায় জমির মালিক ভুক্তোভোগী মিজানুর রহমান জাতীয় হেল্প লাইন ৯৯৯ এ কল দিয়ে জবরদখলকারী ভূমিদস্যুদের হাত থেকে উক্ত জমি রক্ষার জন্য সাহায্য কামনা করেন। তাৎক্ষণিক শ্যামনগর থানা পুলিশের এএসআই মোঃ কামরুজ্জামান সহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উক্ত কৃষি জমির উপর স্কেভেটর মেশিন দিয়ে মাটি খননের যাবতীয় অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে উভয় পক্ষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পরবর্তীতে গভীর রাতে প্রতিপক্ষরা মাটিকাটার এস্কেভেটর মেশিন (ভেকু) দিয়ে পূণরায় নালিশী সম্পত্তিতে ভেকু দিয়ে উক্ত কৃষি জমিতে বেড়িবাধ দিয়ে জবরদখল করে নেয়।
এদিকে ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান আরও জানান, প্রতিপক্ষ আব্দুস সবুর মোল্যা নিজেকে একজন আওয়ামীলীগ নেতা দাবী করে সম্পূর্ণ পেশীশক্তির জোরে আমার ডিক্রীধারী জমি জবর দখল করে নিয়েছে। আমার পিতা বেঁচে থাকাকালীন সময় থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত প্রায় ৭২ বছর উক্ত সম্পত্তি আমি নিয়মমাফিক ভোগ করে আসছি।
এলাকাবাসী জানান, আমরা দীর্ঘদিন যাবত ধরে দেখেছি মিজানুর রহমানের পিতা বেঁচে থাকা কালীন সময় থেকে আজ পর্যন্ত উনারা ভোগ দখল করে আসছে। কিন্তু এখন দেখলাম অন্যরা গা’য়ের জোরে দখল করে নিল।। এছাড়াও উক্ত নালিশী জমির চারিপাশে সমুদয় কৃষি জমি ও বসতভিটা হওয়ার পরেও লোনা পানি তুলে মৎস্য ঘেরের প্রস্তুত করাই স্থানীয় বাসিন্দাসহ ভুক্তোভোগী জমির মালিকেরা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
প্রতিপক্ষ আব্দুস সবুর মোল্যা বলেন, আমাদের ডিসিআর আছে তাই আমরা দখল করেছি।
কাশিমাড়ী ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান বলেন, উক্ত ঘটনাটি আমি শুনেছি। উক্ত সম্পত্তি সরকারি ভিপি ক তফসিল ভুক্ত সম্পতি। বাংলা ১৪২৮ সালে ইজারা দেওয়া হয়েছিল। ১৪২৯ সালে কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি। বর্তমানে ইজারাবিহীন অবস্থায় আছে। জমির মালিক সরকার। সরকারের দখল নিয়ন্ত্রণে আছে। কেউ অবৈধভাবে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে উক্ত কৃষিজমি দখল করেছে। বিষয়টি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কে জানিয়েছি এবং সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Please follow and like us: