রূপচর্চায় কাঁচা দুধের যত আশ্চর্য ব্যবহার

লাইফস্টাইল ডেস্ক:

স্বাস্থ্যের পক্ষে দুধ কতটা উপকারী তা কমবেশি আমরা সবাই জানি। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং শক্তি যোগাতে চিকিৎসকরাও দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাইতো ছোট থেকে বড় সবারই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় স্থান পায় পুষ্টিকর দুধ।

এতে আছে ভিটামিন, বায়োটিন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ল্যাকটিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম ও প্রোটিন। এই পুষ্টিকর উপাদানগুলো আমাদের শরীর ভালো রাখতে কাজ করে। শুধু স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, এটি কিন্তু আমাদের ত্বক ভালো রাখতেও কাজ করে।

রূপচর্চায় কাঁচা দুধ ব্যবহার করলে তা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর পাশাপাশি দাগ-ছোপ দূর করে, ত্বকের ডাইড্রেশন বাড়ায়, বলিরেখা পড়তেও বাধা দেয়। এটি ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতেও কাজ করে। তাই রূপচর্চার কাজে কাঁচা দুধের বিকল্প নেই বললেই চলে। জেনে নিন রূপচর্চায় কাঁচা দুধের ব্যবহার ও কার্যকারিতা সম্পর্কে-

কাঁচা দুধ দিয়ে ময়েশ্চারাইজার

কাঁচা দুধে থাকা ভিটামিন-এ, ডি, বি৬, বি১২, বায়োটিন, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান ত্বকের জন্য দরকারি। কাঁচা দুধ ব্যবহারের ফলে ত্বক হাইড্রেটেড থাকে, ত্বকে পর্যাপ্ত পুষ্টি পৌঁছায় এবং ত্বক ময়েশ্চারাইজড থাকে। ফলে ত্বকের শুষ্কতা ও চুলকানি দূর হয়। ময়েশ্চারাইজার তৈরির জন্য দুই থেকে তিন টেবিল চামচ ঠান্ডা কাঁচা দুধে আধা টেবিল চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে নিন। মিশ্রণে তুলো ভিজিয়ে নিয়ে মুখে ও ঠোঁটে লাগিয়ে আধা ঘণ্টার মতো রেখে দিতে হবে। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নেবেন। এটি ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে তোলে। সেইসঙ্গে ত্বক থাকে ময়েশ্চারাইজড।

কাঁচা দুধের ফেসিয়াল ক্লিনজার

ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে আমরা সাধারণত ক্লিনজার ব্যবহার করি। ক্লিনজার হিসেবে বেশ ভালো কাজ করে কাঁচা দুধ। এতে দুধের গুণ ত্বকে পৌঁছায় এবং কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না। ত্বকের মৃত কোষ, অতিরিক্ত তেল ও মেকআপ পরিষ্কার করার কাজে কাঁচা দুধ ব্যবহার করতে পারেন। সেজন্য দুই টেবিল চামচ কাঁচা দুধের সঙ্গে সামান্য হলুদ ভালো করে মিশিয়ে নিন। এরপর তুলা দিয়ে ধীরে ধীরে মিশ্রণটি মুখে ও ঘাড়ে লাগিয়ে পরিষ্কার করে নিন। কিছুক্ষণ রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।

কাঁচা দুধের ফেসমাস্ক

ফেসমাস্ক হিসেবেও কাঁচা দুধ দারুণ কার্যকরী। কারণ এতে আছে ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এসব উপাদান ত্বকের কালো দাগ-ছোপ পরিষ্কার করে, ট্যান ও ব্রণ দূর করে এবং বলিরেখা কমাতে কাজ করে। কাঁচা দুধের ফেসমাস্ক তৈরির জন্য দুই টেবিল চামচ কাঁচা দুধের সঙ্গে মুলতানি মাটি মিশিয়ে নিন। এরপর মিশ্রণটি মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এভাবে রেখে দিন মিনিট বিশেক। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।

কাঁচা দুধের এক্সফোলিয়েটিং স্ক্রাব

এক্সফোলিয়েটিং স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন কাঁচা দুধ। দুধের ল্যাকটিক অ্যাসিড ও প্রোটিন এক্সফোলিয়েটিং এবং হাইড্রেটিং উপাদান হিসেবে কাজ করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখার পাশাপাশি মৃত কোষ, ব্ল্যালহেডস ও হোয়াইটহেডস দূর করতে কাঁচা দুধের স্ক্রাব কার্যকরী। এটি তৈরি করার জন্য দুই টেবিল চামচ দুধের সঙ্গে এক টেবিল চামচ চিনি এবং ১ টেবিল চামচ বেসন মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিন। মিশ্রণটি ত্বকে দশ মিনিট ধরে ম্যাসাজ করে নিন। এরপর ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুইবার এই স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)