আশাশুনিতে দুর্নীতিবাজ পাউবো কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের দাবীতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন
জি এম মুজিবুর রহমান:
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আবুল খায়েরের নির্দেশে সাংবাদিক ইয়ারব হোসেনের উপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আশাশুনিতে সাংবাদিকদের উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৩ মে) সকাল ১০ টায় আশাশুনি স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন প্রেসক্লাব সড়কে আশাশুনি প্রেসক্লাব ও রিপোর্টার্স ক্লাবের আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আশাশুনি প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম আহসান হাবিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এসকে হাসানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাংবাদিক অসীম বরণ চক্রবর্তী, প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জি এম মুজিবুর রহমান, রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি রাবিদ মাহমুদ চ ল, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ বাচ্চু, প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সচ্চিদানন্দদে সদয়, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সমীর রায়, সাংবাদিক এমএম সাহেব আলী, মোস্তাফিজুর রহমান, ফায়জুল কবির প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আশাশুনি ফ্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পরেশ অধিকারি দাবীর সাথে একাত্বতা ঘোষণা করে অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
বক্তাগণ বলেন, আশাশুনি উপজেলাসহ পুরো দক্ষিণা ল দুর্যোগপ্রবন এলাকা। এসব এলাকার মানুষ ‘ত্রাণ চায় না টেঁকসই বেড়িবাঁধ চায়’। উপজেলার প্রায় ২৪ কি.মি. বেড়ীবাধ জ্বরাজীর্ণ হয়ে রয়েছে। পাউবো’র দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা সে দিকে না তাকিয়ে তারা আশাশুনির মরিচ্চাপ নদীর খনন করে যাচ্ছেন। এখানেই শেষ নয়, তারা মরিচ্চাপ ব্রীজের পশ্চিমপাশ থেকে শ্রীকলস হয়ে শোভনালী পর্যন্ত অপ্রয়োজনীয় নতুন বেড়িবাঁধ নির্মান করার প্রকল্পের কাজ শুরু করেছেন। মরিচ্চাপ নদী খননের মাটি দিয়েই যে বাঁধ হয়ে যাবে তার জন্য নতুন করে প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়েছেন। মরিচ্চাপ ব্রীজ থেকে আশাশুনি সদরের গোডাউন ঘাট পর্যন্ত আশাশুনি বাজার প্রায় সীমাবদ্ধ। মরিচ্চাপ নদীর অব্যাহত ভাঙনে আশাশুনি বাজার ভাঙতে ভাঙতে প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে। পাউবোর এই কর্মকর্তারা মরিচ্চাপ ব্রীজ থেকে আশাশুনি সদরের গোডাউন ঘাট পর্যন্ত এই এলাকাটুকু নদীর সমান অংশে মাটি না দিয়ে আশাশুনি আরও সংকীর্ণ করে তুলেছেন। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি’র হস্তক্ষেপে ষড়যন্ত্রমূলক এই কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রয়েছে। আশাশুনি সদরের বলাবাড়িয়া গ্রামে ২৭ বছর ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাস্তা নেই। ঘেরের বাঁধ দিয়ে জোয়ার ভাটার পানি আটকানো হয়। জলোচ্ছ¡াস হলেই এ বাঁধ ভেঙে সংশ্লিষ্ট এলাকা প্লাবিত হয়। এছাড়াও প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে পাউবোর বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রতিবছরই এসব এলাকা প্লাবিত হয়ে থাকে। কুল্যা ব্রীজ হতে বিনেরপোতা গামী বাধের উপর দিয়ে এলজিইডি কার্পেটিং এর কাজ শুরু করলেও পাউবো রাস্তা খুড়ে মাটির কাজ করে উচু করতে উদ্যোগ নিয়েছিল। যার কোন প্রয়োজন নেই। ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে তাদের হুঁশ ফিরেছে। খরিয়াটিতে একই ভাবে অপ্রয়োজনীয় মাটির কাজ করা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতির চিত্র একদিনে বলে শেষ করা যাবে না উল্লেখ করে বক্তারা আবুল খায়েরের মত সকল পাউবো’র দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার অবৈধ সম্পদের হিসাব, সাংবাদিকদের অবাধ তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণ, ইয়ারব হোসেনকে উক্ত কর্মকর্তার প্রচ্ছন্ন নির্দেশে তার পেটুয়া বাহিনী দিয়ে মারপিটের ঘটনার সকল আসামীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।