অর্থপাচার মামলায় ডেসটিনির প্রেসিডেন্টের ৪ বছর ও এমডির ১২ বছরের কারাদণ্ড
নিউজ ডেস্ক:
মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি ডেসটিনি লিমিটেডের চার হাজার কোটি টাকার বেশি পাচারের অভিযোগে কোম্পানিটির প্রেসিডেন্ট হারুন-অর-রশিদের চার বছর ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনের ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ১১টা ২৫ মিনিটে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে, গত ২৭ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
মামলায় ডেসটিনির প্রেসিডেন্ট হারুন-অর-রশিদ ও এমডি রফিকুল আমীনসহ আসামি ৪৬ জন। এরমধ্যে ৮ জন জামিনে আছেন। কারাগারে পাঁচজন রয়েছেন। এছাড়া অপর আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
কারাগারে থাকা আসামিরা হলেন- ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রফিকুল আমীন, চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, লে. কর্নেল (অব.) মো. দিদারুল আলম, মো. জিয়াউল হক মোল্লা ও সাঈদুল ইসলাম খান (রুবেল)।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার ও সহকারী পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় মানিলন্ডারিং আইনে মামলা দুটি করেন।
২০১৪ সালের ৪ মে দুদকের উপপরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার গ্রাহকদের চার হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে পাচারের অভিযোগে ডেসটিনির ৫১ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ৪৬ জন এবং ডেসটিনি ট্রি প্লানটেশন লিমিটেডে দুর্নীতির মামলার ১৯ জনকে আসামি করা হয়। দুই মামলাতেই আসামি হারুন-অর-রশিদ ও রফিকুল আমিন ।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০৮ সাল থেকে মাল্টি পারপাস কো-অপারেটিভ প্রোজেক্টের নামে ডেসটিনি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিল ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। সেখান থেকে ১ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে দুদকের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে। ঐ অর্থ আত্মসাতের ফলে সাড়ে ৮ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতির মুখে পড়েন।
আর ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন প্রোজেক্টের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। এর মধ্যে ২ হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাত করা হয়। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়েছে, ডেসটিনি গ্রুপের নামে ২৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশ কয়েকটি ছিল নামসর্বস্ব। আসামিরা প্রথমে প্রজেক্টের টাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাবে জমা করতেন, তারপর বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাবে তা স্থানান্তর করা হতো। দুদক ৩৪টি ব্যাংকে এ রকম ৭২২টি হিসাবের সন্ধান পায়, যেগুলো পরে জব্দ করা হয়। ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এ মামলায় মোট ৩০৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।