আসছে অশনি ঝড়- ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভাঙনের আতঙ্কে সাতক্ষীরা উপকূলের লক্ষ মানুষ
নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকুল এলাকার মানুষ সব সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগে কারণে তাদের সহায় সম্বল হারিয়ে নি:স্ব হয়ে যায়। প্রতিবছর একেক সময় একেক রকম দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয় উপকূলের মানুষদের। কখনো ঝড় আবার কখনো নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিতে প্লাবিত হয়। কখনো বন্যায় প্লাবিত হয়ে থাকে। সম্প্রতি সব চেয়ে বড় দুর্যোগ বলে মনে করেন নদী ভাঙন। এ নদী ভাঙন যেন উপকূলের মানুষের পিছু ছাড়ছে না। তবে নদী ভাঙনকে সরকারি অবস্থাপনাকে দায়ি করেন উপকূলের মানুষ।
গত বছর আম্পান ঝড়ের পরে উপকূলের মানুষের যে পরিমান ক্ষয় ক্ষতি হয়ে সে গুলো কাটিয়ে উঠতে পারিনি।তার আবার বড় ধারণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসার পূবাস শোনা যাচ্ছে। যদি এ অশনি নামের ঝড় এ এলাকা দিয়ে বয়ে যায় তাহলে উপকূলের মানুষের চরম দুর্ভোগ নেমে আসবে। উপকূলের মানুষের এধারনের দুর্যোগ থেকে পরিত্রান পাওয়া উপায় হল টেকসই বেড়িবাঁধ নিমাণ করা। ইয়াসের পরে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে কাজ করলেও শুভংকরের ফাঁকি দিয়েছে সংশিলষ্ট ঠিকাদারা কিন্তু ইয়াসের পরে উপকূলের ১৪৯ কিলোমিটার এলাকায় বেড়িবাঁধের ২৯টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান রয়েছে। ইয়াসের আগে বুলবুল ঝড়ের পরে ৪৩টা ঝুঁকিপূর্ণ স্থান ছিলো।
ইয়াসের পরে ১৪টা পয়েন্টের কাজ হলেও এখনো ভালোভাবে কাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। খুব দ্রুরত্ব যদি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো কাজ না করা যায় তাহলে সামনে যে অশনি নামের ঝড় আসতেছে তা উপকূলের মানুষ তাদের সর্বস্ব হারাবে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের মধ্যে মুন্সীগঞ্জ ৩টি, বুড়িগোয়ালীনি ৫ গাবুরায় ৭টি, পদ্মপুকুর ৮টি, কাশিমাড়ী ১টি, আটুলিয়ায় ১টি পয়েন্ট খুব ঝুঁকিপূর্ণ। মুন্সীগঞ্জ বড় ভেটখালী গ্রামের সাইফুল ও রবি সরদার বলেন, আম্পানের সময় বড় ভেটখালির গোড়া ভাঙন দেখা দেয়। তারপরে সেটা ঠিক করা হয়নি। সামনে যে ঝড় আসতেছে সে ঝড়ের আগে যদি এ ভাঙনে কাজ করা না হয় তাহলে বাঁধ ভেঙে যাবে। ক্ষতি এলাকার হাজার হাজার বিঘার জমির মৎস্য সম্পদ। হরিনগর সিংহড়তলী গ্রামের বিশ্বজিত রায় বলেন, ইয়াসের পরে সিংহড়তলীর ভাঙন দেখা দেয় পানি উন্নয় বোডের্র লোকদের বলার পরে কাজ করিনি।
সামনে যে অশনি ঝড় আসতেছে সে ভয়ে আতঙ্কে আছি যাদি ভাঙে যায় তাহলে আমারদের সব ধ্বংস হয়ে যাবে। বুড়িগোয়ালীনির দূর্গাবাটি গ্রামের দিনেশ মন্ডল ও রতি রাণী বলেন, ইয়াসের সময় বাঁধ ভেঙে ঘর বাড়ি সব পানি উঠে গাছ পালা নষ্ট হয়ে গেছে এখনো লাগাতে পারিনি।আবার শুনছি নতুন করে অশনি নামের ঝড় আসবে।আমাদের ওবদার রাস্তাগুলো ঠিক করে দিলে আর পানিতে ভাসতাম না।এবার যদি পানি ডোকে তাহলে কথায় যাব। মুন্সীগঞ্জ ইউপি ছেয়ারম্যান অসীম মৃধা বলেন, মুন্সীগঞ্জে ৩টি পয়েন্ট খুব ঝুঁকিপূর্ণ। আমি বারবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বলার পরেও তারা কাজ করছে না। সামনে অশনি নামের যে ঝড় আসছে এই ঝড়ে অনেক জায়গা ভাঙার আশঙ্কা আছে।
জেলা পরিষদের সদস্য ডালিম ঘরামী বলেন, আম্পানের রেশ কাটতে না কাটতে আবার অশনি নামের ঝড়ের আভাস শোনা যাচ্ছে। উপকূলীয় এলাকা নদী বেষ্ঠিত। এখানে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্যোগের সম্মূখিন হতে হয়। সরকারি মহল থেকে বারবার আশ্বাস প্রদান করলেও তা বাস্তবায়ন করতে দেখা যায় না। যে কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলে আতঙ্কিত থাকি।
বুড়িগোয়ালীনি ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, আমার ইউনিয়নে ৫টি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট আছে। পদ্মপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আমজাদুল ইসলাম বলেন, আমাদের ইউনিয়নটা দ্বীপ ইউনিয়ন ২৮ কিলোমিটারের মধ্যে ৮টি পয়েন্ট খুব ঝুঁকিপূর্ণ তাড়াতাড়ি কাজ না করলে সামনে অশনির ঝড়ে আবার ভেঙে প্লাবিত হবে। এছাড়া আমাদের বড় সমস্যা হল বেড়িবাধের অংশ আশাশুনির মধ্যে। যে কারণে আমাদের দাবি সঠিক পূরুণ হয় না।
এ বিষয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের শ্যামনগর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মাসুদ রানা বলেন, আমরা অশনি ঝড়ের জন্য সম্পর্ণ প্রস্তুত রয়েছি। পর্যপ্ত জিআইও ব্যাগসহ প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র রেডি আছে। অনেক জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে কাজ চলমান রয়েছে এবং অনেক কাজ হয়ে গেছে।