হঠাৎ একসঙ্গে দুই ভাইয়ের মৃত্যু, এলাকায় শোকের ছায়া
নিউজ ডেস্কঃ
চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায় বড়ভাইয়ের হঠাৎ মৃত্যুর পর মারা গেলেন আরেক ভাই।
বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ওয়াপদা কলোনির দক্ষিণ পাশে ডা. ওয়ালীউল্লাহ’র বাড়ির পুকুরপাড়ে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
মৃত রুবেল হোসেন ও সোহেল রানা বিল্লাল হোসেনের ছেলে। একসঙ্গে দুই সন্তানকে হারিয়ে তাদের মা জেসমিন আক্তার শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। হঠাৎ করে তার সন্তানদের মৃত্যু হওয়ায় তাকে সান্ত্বনা দিতে ছুটে আসেন অনেকেই।
নিহতদের ছোটভাই আরিফ হোসেন জানান, ভোরে বৃষ্টির মধ্যে বড়ভাই রুবেল হোসেন বাড়ির পুকুরপাড়ে মাছ দেখতে যান। দীর্ঘ দুই ঘণ্টা পরও তিনি ঘরে ফিরে না আসায় আরেক ভাই সোহেল রানা সেখানে যান। এরমধ্যে পুকুরপাড়ে বড়ভাই মৃত এমন দৃশ্য দেখে সোহেল রানা চিৎকার শুরু করেন। একপর্যায়ে তারও সাড়াশব্দ বন্ধ হয়ে যায়।
এ সময় বাড়ির অন্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে যাওয়ার পর দুই ভাইকে একই অবস্থায় দেখেন আরিফ হোসেন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোজাম্মেল হোসেন জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই এই দুজন মারা গেছেন। শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন না থাকায় প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে পরপর দুজন মারা যান।
মৃতদের স্বজন মাসুদ আলম জানান, দীর্ঘদিন আগে রুবেল হোসেন ও সোহেল রানার বাবা মারা যান। পরে মায়ের সঙ্গে তিনভাই থাকতেন। আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। তাদের বাবা বিল্লাল হোসেন পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন। ফলে অনেক কষ্ট করে কিছু পড়াশোনা করে এই দুইভাই ছোটখাটো চাকরি করতেন। তবে তাদের কেউ বিয়ে করেননি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদ হোসেন জানান, দুটি মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। তবে দুজনের শরীরের কোথাও জখম কিংবা আঘাতের চিহ্ন নেই। তারপরও মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে দুটি মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।
ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় হঠাৎ করে একসঙ্গে দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে স্বজনদের বাইরে আশপাশের লোকজনও শোকার্ত হয়ে পড়েন। এতে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।