ঈদের দিন বজ্রপাতে প্রাণ গেল ৯ জনের
নিউজ ডেস্কঃ
ঈদের দিন বজ্রপাতে সাত জেলায় নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইলে তিনজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, হবিগঞ্জে একজন, বাগেরহাটে একজন, মেহেরপুরে একজন, কক্সবাজারে একজন ও নোয়াখালীতে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় গোসল করার সময় বজ্রপাতে তিনজন নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছে নদীর পাড়ে থাকা আরো দুইজন। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার দশকিয়া ইউপির হাতিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলো উপজেলার হাতিয়া এলাকার রবিউলের ছেলে আরিফ, আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রফিক ও দশকিয়া পূর্বপাড়া গ্রামের জুলহাসের ছেলে ফয়সাল।
দশকিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মালেক ভূঁইয়া বলেন, ঈদের নামাজ পড়ার আগে সকালে তারা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল। এ সময় সেখানে বজ্রপাত ঘটলে ঘটনাস্থলে একজন মারা যায়। এ সময় গুরুতর চারজন আহত হয়। পরে আহত রফিক ও ফয়সালকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় তারা। তাদের মরদেহ বাড়িতে আনা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় বাবার কবর জিয়ারত করার সময় বজ্রপাতে রনি মিয়া নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলা সদরের দুর্গাপুরে এ ঘটনা ঘটে। রনি ওই এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
রনি ঈদের নামাজ আদায় শেষে বাবার কবর জিয়ারত করতে স্থানীয় একটি কবরস্থানে যান। কবর জিয়ারত করা অবস্থায় বজ্রপাত হলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শ্যামল রায় জানান, হাসপাতালে আনার আগেই রনির মৃত্যু হয়েছে।
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় গোসল করতে গিয়ে বজ্রপাতে শাহজাহান মিয়া নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। আজমিরীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, ঈদের দিন সকাল ৯টার দিকে উপজেলার সদর ইউপির নয়ানগর গ্রামের শাহজাহান মিয়া বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করতে যান। এ সময় হালকা বৃষ্টির সময় বজ্রপাত ঘটলে তিনি আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বাগেরহাটের মোংলায় কাঠ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে মহির উদ্দিন শেখ নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে মোংলা উপজেলার আগা মাদুরপাল্টা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মহির উদ্দিন শেখ মোংলা উপজেলার মাদুরপাল্টা গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য অজিত মজুমদার জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢালিরখন্ড এলাকা থেকে জ্বালানি কাঠ নিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন মহির উদ্দিন শেখ। পথিমধ্যেই বজ্রপাতের শিকার হন তিনি। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার বলেন, বজ্রপাতে মহির নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তার পরিবারকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে মঙ্গলবার সকালে ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় বজ্রপাতে একজনের মৃতু হয়। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরেকজন।
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়াতে বজ্রপাশে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় একই গ্রামে সাথী আক্তার (১২) ও নাদিয়া আক্তার (৫) নামে আরো দুই শিশু আহত হয়েছে।
মৃত শিশুর নাম মো. জিহাদ হোসেন (৯)। সে উপজেলার বয়ারচর ইউনিয়নের পূর্ব নবীপুর গ্রামের সাহেদ উদ্দিনের ছেলে। দুপুরের দিকে উপজেলার বয়ারচর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
বিষটি নিশ্চিত করে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন বলেন, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একই বাড়ির শিশু জিহাদ, সাথী ও নাদিয়া স্থানীয় বাজারে যায়। ওই সময় তারা বাজারের কাছাকাছি পৌঁছালে বজ্রপাতের শিকার হয়। তাৎক্ষণিক স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জিহাদকে মৃত ঘোষণা করেন।
কক্সবাজারে বজ্রপাতে শামসুল আলম নামের এক লবণ চাষির মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন আরো একজন। বিকেল ৪টার দিকে সদর উপজেলার চৌফলদন্ডীর নতুন মহাল মাঝের পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শামসুল আলম ওই এলাকার ইসমাইলের ছেলে ও আহত দেলোয়ার মৃত আজম আলীর ছেলে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মনিরুল গিয়াস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, বিকেলে চৌফলদন্ডী নতুন মহাল মাঝের পাড়া এলাকায় বৃষ্টির হাত থেকে লবণ রক্ষা করতে গিয়ে হঠাৎ বজ্রপাতের শিকার হন শামসুল আলম। অজ্ঞান অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
20
