নলতায় দেশের বৃহৎ ইফতার মাহফিল
অনলাইন ডেস্ক :
ঊনবিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ছুফি সাধক, অবিভক্ত বাংলার শিক্ষা সংস্কারক, বিশিষ্ট দার্শনিক ও সাহিত্যিক হযরত খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.) ‘স্রষ্টার এবাদত ও সৃষ্টের সেবা’র ব্রত নিয়ে ১৯৩৫ খিষ্টাব্দে সাতক্ষীরার নলতা শরীফে ‘নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। যে আহছানিয়া মিশনের সেবা সমূহ এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও স্বাক্ষর রেখে চলেছে।
১৯৩৫ সালে আহ্ছানিয়া মিশন প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই আহছানউল্লা( র.) এর উদ্যোগে নলতায় অনেকগুলো মহৎ কার্যক্রমের সাথে এই ইফতার মাহফিলটি চালু হয়। সে সময়ে ক্ষুদ্র পরিসরে এটি চালু হলেও বর্তমানে তা রূপ নেয় দেশের সর্ববৃহৎ আয়োজনে। হযরত খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.) এর মৃত্যুর পর যা পরিচালনা করে আসছেন মিশনের কর্মকর্তাগন।
মিশনের সাবেক সফল সভাপতি, সমাজ সেবক ও শিক্ষাবিদ আলহাজ্ব মু.সেলিমউল্লাহ জানান, নলতা শরীফে প্রতি বছর এ বৃহৎ আয়োজন অব্যাহত। এখানে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার রোজাদারের ইফতার তৈরি হয়। পাক রওজা শরীফ প্রাঙ্গণে বসে একসাথে প্রায় ৬ হাজার রোজাদার ইফতার করেন। এবং বাকী প্রায় ৪ হাজার মানুষের ইফতার বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয় বলে জানা যায়। ইফতার সামগ্রী তৈরির জন্য সকাল থেকে প্রায় ২শ জন স্বেচ্ছাসেবক নিরলসভাবে কাজ করে। ইফতারের মধ্যে থাকে ছোলা, চিড়া, কলা, ডিম, খেজুর, ফিন্নি, সিংড়া ইত্যাদি।
মিশনের সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হক খোকন ও চিপ একাউন্টটেন্ট এবাদুল হক সহ কর্মকর্তাবৃন্দ থেকে আরো জানা যায়, প্রতিদিনের ইফতারের জন্য খরচ হয় প্রায় ২ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা। যা মিশন এবং দেশে বিদেশের পীরকেবলার ভক্তবৃন্দ দিয়ে থাকেন। প্রথম রোজা থেকে ৩০ বা শেষ রোজা পর্যন্ত একাধারে এই আয়োজন হয়ে থাকে। তবে প্রতি বছর এই আয়োজনের পরিব্যাপ্তি ও খরচ আরো বাড়বে বলে তারা মনে করেন।
এই সর্ববৃহৎ ইফতার আয়োজনে লক্ষণীয় বিষয় হল এতগুলো মানুষের সমাগম হলেও কোন প্রকার হৈ চৈ বা বিশৃঙ্খলা দেখা যায় না। বৃহৎ আয়োজনের মধ্যেও একটি নিরব সুশৃঙ্খল পরিবেশ রোজাদারদের হৃদয় প্রশান্তি আনে বলে উপস্থিত অনেকেই জানান।