তালায় রাজাকারপুত্রকে ম্যারেজ রেজিষ্ট্রারে নিয়োগ প্রদানের অভিযোগ
কিশোর কুমারঃ
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার তেতুলিয়া ইউনিয়নে এক রাজাকার পুত্রকে ম্যারেজ রেজিষ্ট্রার হিসাবে সদ্য নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে । নিয়োগ প্রাপ্ত
রেজিষ্ট্রার হলেন, উপজেলার তেতুলিয়া ইউনিয়নের শিরাশুনি গ্রামের শেখ লুৎফর রহমানের
ছেলে ফরিদুল ইসলাম(৩০)। বুধবার তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সম্মেলন কক্ষে
নিয়োগটি সম্পন্ন হয় বলে বিশেষ সুত্রে জানা গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ তেতুলিয়া
ইউপি চেয়ারম্যান ও কর্তৃপয় অসাধু সরাকারী কর্মকর্তাদের যোগ সাজসে
নিয়োগটি চুড়ান্ত হয়েছে। দায় এড়িয়ে নিয়োগ বোর্ড কর্মকর্তারা বলেন
রাজকারের বিষয়টি সম্পর্কে তারা অবগত নন বিষয় নিয়ে তদন্ত চলছে।
নাম প্রকাশে অনিইচ্ছুক তেতুলিয়ার এক ইউপি সদস্য জানায় , শিরাশুনি গ্রামের
ফরিদুল ইসলামের বাবা শেখ লুৎফর রহমান একজন সরকারি তালিকাভুক্ত রাজাকার । তার
পরিববারের অধিকাংশ লোক নিষিদ্ধ সংগঠন জামায়াত ইসলামীর রাজনীতিতে জড়িত
সহ নাশকতা মামলার আসামী।মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে টাকার তাকে রেজিষ্টার
পদে নিয়োগ দেওয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বলে অভিযোগ করেন
তিনি। এসকল লোক যদি সরকারী রেজিষ্ট্রার হয় তা হলে দেশ ও জাতির সুনাম খুন্ন হবে
নিশ্চিত। আমি নিয়োগটি বাতিলের জন্য বোর্ড কর্মকর্তা সহ মাননীয়
প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি । তেতুলিয়া ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার
নজির উদ্দীন মোড়ল জানান, শিরাশুনি গ্রামের গহর আলীর ছেলে লুৎফর শেখ একজন সরকারি
তালিকা ভুক্ত রাজাকারা এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। বিষয়টি নিয়ে আগেও পত্রপত্রিকায়
সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালামের চাচা
কেরামত পাকিস্থানি আমলে পিস কমিটির সহ সভাপতি ছিলেন। অনেক কষ্টের বিনিময়ে
আমারা স্বাধীনতা অর্জন করেছি,এই স্বাধীন দেশে এমন রাজকার পুত্র যদি সরাকারী দপ্তরে
নিয়োগ পায় তাহলে এর চাইতে আর কষ্টের কিছু থাকেনা।বিষয়টি নিয়ে তেতুলিয়া
ইউপি চেয়ারম্যান এম এম আবুল কালাম আজাদের সাথে কথা বললে তিনি জানান, প্রায়
৪০ বছর আগে ফরিদুলের বাবা লুৎফর মারা যায়। তার বাবা রাজাকার ছিলেন কিনা সেটি
আমার জানা নেই। তবে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় কোথায় ছিলেন তার কোন সদুত্তর দিতে
পারেনি।নিয়োগ বের্ডে এমপি সাহেবের নির্দেশনা মত হচ্ছে বলে তিনি দাবী করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লার সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে, তিনি
দেশের বাইরে থাকার কারনে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।তালা উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস জানান, বুধবার ম্যারেজ রেজিষ্টারের নিয়োগ
বোর্ড সম্পন্ন হয়েছিল তবে চুড়ান্ত কিছু হয়নি। এরপর তালিকা যাচাই বাচাই করে
সংক্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে। আমি ওই কমিটির একজন সদস্য মাত্র। রাজাকার পুত্রের
বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত ফরিদুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি সাক্ষাৎতের পর কথা হবে
বলে ফোনের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।