সাতক্ষীরায় সাম্প্রদায়িকতা রুখতে মুক্তচিন্তা, মুক্তিবুদ্ধি চর্চা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ গড়ে তোলার সংগ্রামে মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত
রঘুনাথ খাঁঃ
সাম্প্রদায়িকতা রুখতে মুক্তচিন্তা,
মুক্তিবুদ্ধি চর্চা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ গড়ে তোলার সংগ্রামে
মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ’৭১ এর বধ্যভূমি স্মৃতি সংরক্ষণ
কমিটি বৃহষ্পতিবার সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা শহরের পুরাতন জনতা
ব্যাংক ভবনের তিন তলার ম্যানগ্রোভ হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
’৭১ এর বধ্যভূমি স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির আহবায়ক বীর
মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ সরকারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন বীর
মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মোস্তফা নুরুল আলম, সাতক্ষীরা সরকারি
মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হামিদ, দৈনিক
দক্ষিণের মশালের সম্পাদক অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহী, সাংবাদিক কল্যান
ব্যানার্জী, ’৭১ এর বধ্যভূমি স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির সদস্য
সচীব অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু, অ্যাড. ওসমান গনি, অ্যাড.
আজাদ হোসেন বেলাল, সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ, লায়লা পারভিন
সেঁজুতি, অ্যাড. ইকবাল লোদী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার শীল, অধ্যক্ষ শিবপদ গাইন,
সিপিবি’র সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কমঃ আবুল
হোসেন, জেলা সৈনিকলীগ আহবায়ক মাহমুদ আলী সুজন,
উদীচি সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান, সাংবাদিক মুনসুর আলী,
মুক্তিযোদ্ধা শফিক আহম্মেদ, কবি মন্ময় মনির, কবি শাজাহান
সিরাজ, কবি রুবেল,তামান্না জাফরিন, মকবুল হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সা¤প্রদায়িকতার বিষবাষ্প দেশের স্বাভাবিক
জীবনযাত্রার মান নষ্ট করছে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা বিরোধী
পরাজিত শক্তি কৌশলে মানুষের মগজ ধোলাই করে বিপথগামি করে
চলেছে। এরই ফলশ্র“তিতে মুন্সিগঞ্জের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে
জেলে যেতে হচ্ছে। নওগাঁর শিক্ষিকা আমোদিনি পালকে হেনস্থা
হতে হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাগেরগাটের মোড়েলগঞ্জের
আমারবুনিয়ার রমনী বিশ্বাসের বাড়িতে ও মন্দিরে ভাঙচুর, লুটপাট
ও বিচালী গাদায় আগুন দেওয়া হয়েছে। বিচারহীনতার কারণে ২০১২
সালে ফতেপুর চাকদাহে ১৫ টি হিন্দু বাড়ি, মন্দিরে হামলা ভাঙচুর
ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আজো বিচার শেষ হয়নি। অথচ দৃষ্টিপাত সম্পাদক জিএমস নূর ইসলাম, নির্বাহী সম্পাদক আবু
তালেব মোল-া নিম্ন আদালত থেকে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার আসামী
হয়েও জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। খুলনার রুপসা থানাধীন শিয়ালী
গ্রামে ১০ টি মন্দির ও দু’টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের
ঘটনায় পুলিশ ১২২ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলেও
জামিনে মুক্তি পাওয়ায় আসামীদের ভয়ে ওই এলাকার হিন্দু
স¤প্রদায়ের মানুষ স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছে না।
বক্তারা আরো বলেন, দেশে মুক্তবুদ্ধি ও মুক্ত চেতনার মানুষ মুখ খুলতে
সাহস পাচ্ছে না। পাঠ্যপুস্তক থেকে বেছে বেছে হিন্দু লেখক ও
মুক্ত বুদ্ধির চেতনার মানুষজনের লেখা বাদ হচ্ছে। সাতক্ষীরা সদরে
দীনেশ কর্মকারের বাড়িতেসহ বিভিন্ন স্থানে বধ্যভূমি থাকলেও
সরকারিভাবে সংরক্ষণ ও স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হচ্ছে না। পহেলা
বৈশাখের র্যালি পুলিশ প্রহরায় করতে হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে
আগামিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিলুপ্ত হবে। তাই সকলকে ধর্মান্ধ
ও মৌলবাদি অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জাসদ নেতা প্রভাষক ইদ্রিস
আলী।