বাঙালির ১৬ আনা বাঙালিয়ানা খাবার
লাইফস্টাইল ডেস্ক:
হয়তো বাঙালির চেনা উপকরণ দিয়ে বাঙালিয়ানা খাবার সবাই পছন্দ করে। কারণ, ছোটবেলা থেকেই সেসব বাঙালিয়ানা খাবার বারবার খাওয়া হয়েছে। মায়ের রান্নাও যে ছিল চমৎকার। আজ ইট-কাঠের ব্যস্ত শহর যে মানুষের অনেক আবেগ কেঁড়ে নিয়েছে। কেঁড়ে নিয়েছে খাবারের সেই মজার তৃপ্তিগুলোও।
আজ ১লা বৈশাখ। ছুটির দিন। আজ রান্নাঘরে হোক আবার সেসব রান্না। কিছু বাঙালিয়ানা খাবার কথা লেখা হলো।
পান্তাভাত-ভর্তা-মাছ ভাজা
বাংলা নববর্ষ পালনের অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে পান্তা। সাথে ভর্তা-মাছ ভাজা তুমুল জনপ্রিয়। তবে বিশেষ দিন পয়লা বৈশাখের মাছটি যে ইলিশই হতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
গ্রামীণ বাংলার প্রতীক এই পান্তা। কিন্তু সাধারণত আজ বাঙালিরা কমই খায়। তার সঙ্গে একটু ভর্তা আর ছোট কোন মাছের ভাজাই সবচেয়ে প্রচলিত। পান্তা শরীরে শক্তি দেয়, অনেকক্ষণ পেটে থাকে। এটি হজমের জন্য ভালো, পেটের গ্যাস দূর করে। তাই আজ একটু খাওয়া যেতেই পারে।
খুদের ভাত
চালের ভাঙ্গা অংশকে অর্থাৎ ভাঙ্গা চালকে খুদের চাল বলে। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই খুদের চাল বা ভাঙ্গা চাল ভাত দিয়ে রান্না করা হয়। একে বউয়া ভাতও বলে অনেক জায়গায়। এ যে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যও।
খুদের চাল সেদ্ধ করে পেয়াজ-মরিচ দিয়ে ভেজে বানানো হয় খুদের ভাত। সাথে নানা রকম ভর্তা পরিবেশন করা হয়। গ্রামে সাধারণত এটি রান্না করা হতো যখন বাড়িতে চাল কম থাকতো। তবে এর যেমন স্বাদ তেমনি এর পুষ্টিও ব্যাপক।
ভিটামিন বি-টু অনেক বেশি পরিমাণে থাকে। সাথে সবজি ও মাছের ভর্তার পুষ্টিও যোগ হয়। গ্রামে বেশ পরিচিত এই খাবারটি।
কুমড়া ফুলের বড়া
কুমড়ো ফুল চালের গুঁড়া আর ডিম, একটু মসলা গুড়া দিয়ে মেখে কিছুক্ষণ রেখে গরম তেলে ভেজে তোলা এই খাবার ভাত এবং খিচুড়ি দুইয়ের সঙ্গেই ব্যাপক জনপ্রিয়।
কুমড়া ফুল খুবই পুষ্টিকর। এটি বিটা ক্যারোটিন এবং ফাইবার বা আঁশ সমৃদ্ধ খাবার। বাংলাদেশের প্রায় সব এলাকাতেই এই খাবারটি খাওয়া হয়। সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক মাধ্যমভিত্তিক ঘরোয়া রান্নার কিছু পেইজে অর্ডার করা যাচ্ছে এ খাবার।
মাছের পাতুরি
ঢাকাসহ বিভিন্ন শহুরে এলাকায় এখন পাতুরি নামে রেস্তোরাঁ দেখা যায়, কখনো রেস্তোরাঁর মেনুকার্ডেও পাতুরি লেখা খাবারের পদ থাকে। কিন্তু খাবার নিয়ে গবেষণা ও লেখালেখি করেন এমন মানুষেরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ করে নদী প্রধান এলাকাগুলোতে যেভাবে মাছের পাতুরি করা হয়, নাগরিক পাতুরির সঙ্গে তার বিরাট ফারাক।
সাধারণত মসলা মাখিয়ে নানা আকারের মাছ কলাপাতায় মুড়ে চুলার আগুনে দিয়ে রাখতে হয়, কিছুক্ষণ পর মসলা মাছে ঢুকে ভাপে সেদ্ধ হয়ে যায়। পরে ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করা হয় সেটি। পাতুরি লাউ শাক বা অন্য বড় পাতাওয়ালা শাক মুড়েও সেদ্ধ করা হয়।
মাছের পাতুরির ধারণা এসেছে মূলত সাশ্রয়ের ধারণা থেকে, মানে তেল কম, আগুনের জন্য লাকড়ি খরচ নাই বলতে গেলে- এসব মিলিয়ে এটি নদী-প্রধান এলাকাগুলোতে খুবই জনপ্রিয় মাছের পদ।