পরিকল্পনামতোই পূর্ব ইউক্রেন নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছেন পুতিন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
সামরিক অভিযানের শুরু থেকেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলে এসেছেন যে, পুরো ইউক্রেন নয়, তার মূল লক্ষ্য ডোনবাস অঞ্চলকে মুক্ত করা।
বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, পুতিন কখনোই পুরো ইউক্রেন দখল করতে চাননি। বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে তা সম্ভবও নয়। তবে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের হামলা ছিল তার পরিকল্পনার একটি অংশ। সেখানে তিনি রাশিয়ার আধুনিক প্রযুক্তির ও যুদ্ধবিমানগুলো ব্যবহার না করে অবরোধ দীর্ঘায়িত করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি ইউক্রেনের সেনাদেরকে দীর্ঘ দিন ব্যস্ত রেখেছিলেন এবং সে সুযোগে ডোনবাস এলাকায় রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছেন।
খনিজ সম্পদে পরিপূর্ণ ওই এলাকা ইউক্রেনের আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস। যা এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া প্রধান দুই নৌ-বন্দরও রাশিয়া অবরোধ করে রেখেছে। যার ফলে ইউক্রেনের বৈদেশিক বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ, সামরিক ও অর্থনৈতিক উভয়দিকে পরাস্ত হয়েছে ইউক্রেন।
উত্তর ইউক্রেন থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের পর, রাশিয়া বলেছে যে, তাদের মূল লক্ষ্য পূর্ব ইউক্রেন। তাদের দাবী, কিয়েভ সেখানে ডোনবাস অঞ্চল নামে পরিচিত এলাকার কিছু অংশের নিয়ন্ত্রণ রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধাদের হাতে তুলে দেবে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেক্সান্ডার মতুজিয়ানিক বলেছেন, ‘আমরা পূর্বাভাস দিয়েছি যে এই অঞ্চলে সক্রিয় যুদ্ধ শুরু হবে নিকটতম সময়ে।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ওয়াশিংটন বিশ্বাস করে যে রাশিয়া ডনবাস অঞ্চলে তাদের সৈন্যকে শক্তিশালী ও পুনরায় সরবরাহ করার চেষ্টা করছে। ডোনবাসে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় পুরষ্কার হল মারিউপোল, প্রধান পূর্ব বন্দর শহর, যেখানে প্রায় সাত সপ্তাহের অবরোধে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে বলে মনে করা হয়। রাশিয়া শেষ পর্যন্ত মারিউপোল দখল করলে, এটি পূর্ব থেকে অগ্রসর হওয়া সৈন্যদের সাথে সংযুক্ত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সেনাদের সাথে আরও ভালভাবে যুক্ত করতে পারবে এবং তাদের ফোকাস পূর্বে প্রধান ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার নতুন প্রচেষ্টায় স্থানান্তরিত করতে পারবে।
এদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, তার দেশ নতুন কোনো আলোচনার জন্য লড়াই থামাবে না। ল্যাভরভ বলেন, ‘একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল যে পরবর্তী দফা আলোচনার সময়, (সামরিক পদক্ষেপে) কোন বিরতি দেওয়া হবে না যতক্ষণ না একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানো যায়।’ ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে যে, দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়ার গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে, যা একসাথে ডোনবাস গঠন করে।
সূত্র: আল-জাজিরা