মেগা প্রকল্প নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন: প্রধানমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক: আমাদের মেগা প্রকল্পগুলো নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন জানিয়ে প্রধানমনন্রীন্ শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে- কোনো ঋণ নেওয়া হয়নি। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা অর্থনৈতিক সমীক্ষার মাধ্যমে আমরা অন্যান্য মেগাপ্রকল্পগুলো গ্রহণ করেছি।
‘আর শুধু ঋণ নয়, বিদেশি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব প্রকল্প বাস্তিবায়িত হলে আমাদের অর্থনীতির চেহারা বদলে যাবে। আমরা দেশি-বিদেশি ঋণ নিচ্ছি। তবে তা যাতে বোঝা হয়ে না উঠে সেদিকে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে। আমাদের মূল লক্ষ্য অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সম্পদ বৃদ্ধি এবং মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করা।’
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্রীবদ এসব কথা বলেন। ভাষণের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে পবিত্র রমজানের মোবারকবাদ এবং বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।
উল্লেখ্য, বিদেশি ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে দেউলিয়ার পথে রয়েছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকা। নানা মেগা প্রকল্পের জন্য নেওয়া বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে গিয়ে তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে দেশটি। দুই বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে কঠিন আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে দেশটি। নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো কিছুই আমদানি করতে পারছে না। কারণ এই রিজার্ভ দিয়ে আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব নয়। তাছাড়া চলতি বছর যে কিস্তি পরিশোধ করতে হবে, সে পরিমাণ বিদেশি মুদ্রাও নেই শ্রীলংকার।
শ্রীলংকার এই অবস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা দিচ্ছেন অনেকে। রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদসহ নানা পেশার মানুষ নানা মন্তব্য করে চলেছেন। বলছেন, বাংলাদেশেরও শ্রীলংকার মতো পরিণতি হবে।
তাদের এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে নানারকম কথা যারা লিখছে। আমি আবারও বলছি- ওই পত্রিকার লেখা পড়ে আমি রাষ্ট্র চালাই না। এখন তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে। বাংলাদেশ শ্রীলংকা হয়ে যাচ্ছে- এ রকম একটা কথা রটাচ্ছে।সম্প্রতি জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশের শ্রীলংকার পরিণতি হওয়ার কোনো কারণ নেই। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবিও একই মূল্যায়ন করে বলেছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক শক্তিশালী।
এর আগে গত ৬ এপ্রিল একাদশ জাতীয় সংসদের ১৭তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিরোধীদলীয় উপনেতা (জিএম কাদের) শ্রীলংকার বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এটা বাস্তব। তবে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে এখন পর্যন্ত উন্নয়নে যত ঋণ নিয়েছে, সব ঋণ সময়মতো পরিশোধ করা হয়। বাংলাদেশ ঋণ পরিশোধে কখনো খেলাপি (ডিফল্টার) হয়নি, হবেও না। সেদিক থেকে আমাদের অর্থনীতির ভিত্তি অনেক মজবুত। সেটা আমি বলে রাখতে চাই। আমরা অত্যন্ত সতর্ক।’
দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল (১২ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মুখ্য সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এমন জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে আমরা শ্রীলংকা-পাকিস্তানের মতো দুর্বল দেশের সঙ্গে তুলনা করতে চাই না। ইউরোপ-আমেরিকার সঙ্গে তুলনা করতে চাই।