মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়ায় কারাপুলিশকে ব্লেড দিয়ে আক্রমণ পঙ্গু হাজতির
নিউজ ডেস্কঃ
মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়ায় কারাপুলিশ (সিআইডি) সদস্যকে ব্লেড দিয়ে রক্তাক্ত করেছেন এক পঙ্গু হাজতি। এ ঘটনায় আট কারাবন্দিকে বগুড়ায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
হাজতি নম্বর ১২৬৬/১৮ হালিম বগাকে নওগাঁ কারাগারে, হাজতি নম্বর ৪৫৮৬/১৮ জাহিদুল ইসলামকে নওগাঁ কারাগারে, কয়েদি নম্বর ৮৯৬৪/এ মুকুল হোসেনকে রাজশাহী কারাগারে, কয়েদি নম্বর ১৩৭৯/এ আব্দুল মতিন মন্ডলকে রাজশাহী কারাগারে, কয়েদি নম্বর ৬২০৪/এ ইউসুফকে রাজশাহী কারাগারে, কয়েদি নম্বর ৫৫৮৮/এ জিয়াকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগারে, কয়েদি নম্বর ৯৯৫৫/এ শফিউল ইসলামকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগারে, কয়েদি নম্বর ১৭৬২/এ জাকির হোসেনকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বগুড়া কারাগারে বিভিন্ন অনিয়ম ও মাদকবিক্রির অভিযোগ থাকার কারণে আইজি প্রিজনের নির্দেশনায় সেখানে কারাপুলিশের (সিআইডি) একজন সদস্য নিয়োগ করা হয়। মূলত তার কাজ হচ্ছে কারাগারের বিভিন্ন অনিয়মের ব্যাপারে আইজি প্রিজনের অফিসে তথ্য পাঠানো। এ দায়িত্ব নিয়ে গত ১০ জানুয়ারি কক্সবাজার কারাগার থেকে বগুড়া কারাগারে আসেন আরিফুল ইসলাম।
বগুড়া কারাগারে আসার পর থেকে সেখানে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত একটি সিন্ডিকেটের চক্ষুশুল হয়ে যান আরিফুল ইসলাম। তারা শুরু থেকেই তাকে বগুড়া কারাগার থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ।
এরই ধারাবাহিকতায় ২ এপ্রিল বিকেলে আরিফুলকে কৌশলে মাদকবিক্রি তথ্য দেওয়ার কথা বলে কাছে ডেকে নিয়ে গালে ধারালো ব্লেড দিয়ে আঘাত করেন হালিম বগা নামের একজন চিহ্নিত দুর্ধর্ষ আসামি। ঘটনার পর রক্তাক্ত অবস্থায় আরিফুলকে উদ্ধার করেন কারাগারের অন্যান্য রক্ষীরা। তাকে জরুরিভাবে বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। তার গালে গভীর ক্ষত হওয়ায় সেখানে পাঁচটি সেলাই দিতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে বগুড়া কারাগারের জেলার এস এম মহীউদ্দিন হায়দার জানান, ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) রাজশাহী থেকে ডিআইজি প্রিজন অসীম কান্ত পাল বগুড়া কারাগার পরিদর্শন করেন।
এ সময় আসামি বগা তাকে জানান, সিআইডির কারারক্ষী আরিফুল ইসলাম অযথা মাদক আছে বলে তার শরীর বারবার তল্লাশি করতেন। এরপরও কোনো কিছু না পেলে তার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। সেই আক্রোশের কারণে তিনি ওই পুলিশ সদস্যের গালে ভাঙা ব্লেড দিয়ে আঘাত করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়া কারাগারে অবস্থান করা হালিম বগা (২৮) একজন দাগি আসামি। তার বাবার নাম সৈয়দ আলী। বাড়ি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় শাকপালা সোনারপাড়ায়। ২০১৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সেনাসদস্য হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামি হিসেবে কারাগারে আসেন (মামলা নম্বর শাজাহানপুর পিএস ২১, তাং ২৯-১১-২০১৭, ধারা ৩৯৬/৩৪)।
এ বিষয়ে বগুড়া কারাগারের জেলার এসএম মহীউদ্দিন হায়দার বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি সিনিয়র অফিসাররা তদন্ত করছেন। এ পর্যন্ত আটজনকে অন্য কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের প্রশাসনিক কারণে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে।
বগুড়া কারাগারে কোনো মাদক বিক্রি বা সেবন করা হয় না দাবি করে তিনি বলেন, কারাগারে সুশৃঙ্খল পরিবেশ-পরিস্থিতি বজায় রাখতে আমরা চেষ্টা করছি। এরপরও কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।