শ্রীলংকায় আপেলের কেজি ১ হাজার নাশপতি দেড় হাজারে!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

চরম অর্থনৈতিক সংকটে ধুঁকছে শ্রীলংকা। দেশটিতে দিনের ১৩ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকছে না। বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে জ্বালানি, খাদ্য ও ওষুধসহ অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আমদানি করতে পারছে না সরকার। যে কারণে দ্বীপরাষ্ট্রটিতে ফলমূল এবং শাকসবজির দাম এখন আকাশচুম্বী।

প্রতি কেজি আপেল এ মুহূর্তে ১ হাজার রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। আপেলকেও ছাড়িয়ে গেছে নাশপতি। এর কেজিদর দেড় হাজার রুপিতে গিয়ে ঠেকেছে।

দেশটির খাদ্যপণ্য বিক্রেতা ফারুখ বলেন, ৩-৪ মাস আগে আপেল প্রতি কেজি বিক্রি হতো ৫০০ রুপি। এখন তা ১ হাজার রুপি বিক্রি হচ্ছে। আগে প্রতি কেজি নাশপাতি ৭০০ রুপি দরে বিক্রি হতো, এখন প্রতি কেজি দেড় হাজার রুপিতে বিক্রি হচ্ছে।

সংকট মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতায় ক্ষোভে ফুঁসছে দেশটির সাধারণ মানুষ। রাজাপাকসে সরকার সব কিছু চীনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ফারুখের। তিনিসহ দেশটির অনেক বাসিন্দার একই অভিযোগ।

ফারুখ বলেন, শ্রীলংকা সরকার চীনের কাছে সব বিক্রি করেছে। এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা। এখন আমাদের কাছে কোনো অর্থ নেই। মানুষের হাতে টাকা নাই। অন্যান্য দেশের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে চলতে হচ্ছে  শ্রীলংকাকে।

সরকারের প্রতি অসন্তোষ এবং ক্ষোভ ঝেড়ে লঙ্কানরা বলছেন, দ্রব্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে প্রতিদিন কিন্তু তাদের টাকা দিন দিন ফুরিয়ে আসছে।

রাজা নামের অপর এক খাদ্য বিক্রেতা বলেন, প্রতিদিন দাম বাড়ছে। কিন্তু মানুষের কাছে কোনো নগদ অর্থ নেই। তাই ক্রেতা নেই। যে কারণে ব্যবসায় চরম মন্দা চলছে। প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকশে দেশ পরিচালক হিসেবে ভালো নন; তাকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।

এদিকে শ্রীলংকার এই সংকটময় পরিস্থিতিতে দেশটির বিরোধী দলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা নির্বাহী রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থা বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার দেশটির সংসদে এক বক্তৃতায় একটি নতুন নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তিনি।

প্রেমাদাসা বলেন, গত ২০ বছর ধরে দেশের প্রত্যেক নেতা নির্বাহী রাষ্ট্রপতি ব্যবস্থা বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু কেউই সেটি করেননি।

দেশটির তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে সরকার প্রধান গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগ দাবিতে সম্প্রতি কয়েকশ মানুষ তার বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করে। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। এতে নিরাপত্তাকর্মী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন।

বিক্ষোভের পর রাজধানী কলম্বোয় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়, যা গত শুক্রবার ভোরে তা তুলে নেয়া হয়। এরইমধ্যে গত রোববার শ্রীলংকা মন্ত্রিসভার ২৬ মন্ত্রী পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

তবে সংকট নিরসনে বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর কাছে সহায়তা চেয়েছে শ্রীলংকা। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও পণ্যসামগ্রীর তীব্র ঘাটতি পুষিয়ে নিতে সাহায্য চাইছে দেশটি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)