মামলার বাদীকে বিয়ে করলেন সেই পুলিশ সদস্য, পেলেন জামিন
নিউজ ডেস্ক:
মামলার বাদীর সঙ্গে বিয়ের পর ধর্ষণ মামলা থেকে জামিন পেয়েছে কুড়িগ্রাম সদর থানার এসআই আব্দুল জলিল।
বুধবার বিকেলে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার তার জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে, পঞ্চগড় আইনজীবী সমিতি চত্বরে তাদের বিয়ে হয়।
বুধবার দুপুরে মামলায় হাজিরা দিতে এসে বিয়ে করার শর্তে জামিন আবেদন করেন এসআই জলিল। আদালত তার জামিন আবেদনে সন্তুষ্ট হয়ে বিয়ের কাবিননামা দাখিলের পরে জামিন মঞ্জুর করেন।
পরে জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনে ৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকা দেনমোহরে ভুক্তভোগী ঐ নারীকে বিয়ে করেন পুলিশের এসআই আব্দুল জলিল। এর আগে পঞ্চগড় সদর থানার এসআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন জলিল।
গত ২৩ জানুয়ারি এ মামলায় এসআই জলিলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে তিনি উচ্চ আদালতের রায়ে ৬ সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। তার জামিনের মেয়াদ শেষ হলে তিনি পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে গত রোববার দুপুরে আত্মসমর্পণ করে স্থায়ী জামিনের আবেদন করলে আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন এক নারী। সেই ডায়েরির তদন্ত করতে গিয়ে তৎকালীন পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল জলিল বিধবা ঐ নারীর সঙ্গে ‘প্রেমের সম্পর্ক’ গড়ে তোলেন। এরপরে তিনি ভুয়া কাবিননামা করিয়ে নিয়ে ঐ নারীর সঙ্গে একাধিকবার ‘শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
একসময় ভুক্তভোগী নারী বিবাহের কাবিননামা চাইতে গেলে জলিল বিবাহের কথা অস্বীকার করেন। পরে ঐ ভুক্তভোগী নারী ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
পরে আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেন। গত ২০ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ২৩ জানুয়ারি (রবিবার) আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ওই উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
ভুক্তভোগী ঐ নারী বলেন, এতদিন আমি জলিলের কাছে স্ত্রীর স্বীকৃতি তো দূরের কথা বিয়ের কাবিননামাও পাইনি। আজ আদালতে আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মেহেদী হাসান বলেন, আমরা আদালতের প্রতি সন্তুষ্ট। মামলায় ন্যায় বিচার পেয়েছি আমরা।